পরিবেশ অধিদপ্তর
পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে তরুণদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক
পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে তরুণেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ।
তিনি আরও বলেন, টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তরুণদের ভূমিকার ওপর জোর দিতে হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র: পরিবেশমন্ত্রী
শুক্রবার (১৭ মে) বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৪ উদযাপনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিবেশ অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে ‘প্রকৃতি ও পরিবেশ’ প্রতিপাদ্যের ওপর শিশু-কিশোর চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়।
এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের শিল্পের মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, শিল্পকর্মগুলো প্রকৃতির গুরুত্ব এবং আমাদের পরিবেশ রক্ষার জরুরি প্রয়োজন তুলে ধরেছে।
চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় চারটি গ্রুপে- ক গ্রুপে অনূর্ধ্ব ৮ বছর; খ গ্রুপে ৮ থেকে অনূর্ধ্ব ১২ বছর; গ গ্রুপে ১২ থেকে অনূর্ধ্ব ১৬ বছর এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন গ্রুপে অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের শিশু-কিশোররা অংশগ্রহণ করে।
চারটি গ্রুপের প্রতি গ্রুপে তিনজন বিজয়ীকে পুরস্কার প্রদান করা হবে।
আগামী ২১ মে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নোটিশ বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বিজয়ী প্রতিযোগীদের নাম প্রকাশ করা হবে। এছাড়াও বিজয়ীদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হবে।
প্রতিযোগিতায় শিশু-কিশোরদের আঁকা ছবিগুলোর মূল্যায়নে ছিলেন- পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. ছিদ্দিকুর রহমান, বরেণ্য চিত্রশিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক আলভী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম এবং শিল্পকলা একাডেমির উপপরিচালক খন্দকার রেজাউল হাশেম।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন পরিচালক রাজিনারা বেগমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ বাড়াতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
উন্নত বিশ্বকে কার্বন নিঃসরণ কমানোর দিকে মনোযোগ দিতে পরিবেশমন্ত্রীর আহ্বান
৭ মাস আগে
নড়াইলের কালিয়ায় অবৈধ ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, জরিমানা
নড়াইলের কালিয়ায় অবৈধ ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করেছে।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী উপজেলার বড়নাল, মাধবপাশা ও নড়াগাতি থানার জয়নগর এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলা প্রশাসনের সরকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আসিফ উদ্দিন মিয়া এবং সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তর, নড়াইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কামাল মেহেদীসহ জেলা পুলিশ ও আনছার বাহিনীর সহায়তায় কালিয়া উপজেলার বড়নাল, মাধবপাশা ও নড়াগাতি থানার জয়নগর এলাকায় অবৈধ ইটভাটা ও জ্বালানি কাঠ ব্যবহারের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: ডিএমপির মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৫৭
এ সময় পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় ও অবৈধ ইটভাটা হওয়ায় বড়নাল এলাকার মেসার্স স্বস্তি এন্টারপ্রাইজ ব্রিকস ও মাধবপাশা এলাকার মা ব্রিকস নামক দু’টি ইটভাটার স্কেভেটর ও ট্রাকটরের সাহায্যে চিমনি, কিলন সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলা হয় এবং জ্বালানি কাঠ ব্যহারের করায় মেসার্স স্বস্তি এন্টারপ্রাইজ ব্রিকসকে ৪০ হাজার টাকা ও মাধবপাশা এলাকার মা ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কামাল মেহেদী জানান, নড়াইল জেলায় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত অবৈধ ইটভাটা ও জ্বালানি কাঠ ব্যবহার সমূহের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর-এর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে জঙ্গি দমন অভিযান: ৪৪ ‘জঙ্গি’ কারাগারে, ৫ কেএনএফ সদস্য রিমান্ডে
১ বছর আগে
বায়ু দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচান: পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট
বায়ু দূষণ রোধে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘দূষণের মাধ্যমে মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে। বায়ু দূষণের হাত থেকে মানুষকে বাঁচান।’
রবিবার এ বিষয়ে শুনানিকালে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, উচ্চ আদালত বায়ু দূষণ রোধে যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তার ছিটেফোঁটাও বাস্তবায়ন হয়নি। অবৈধ ইটভাটাও বন্ধ করা হয়নি। দূষণের মাধ্যমে মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে। অনেকে বিদেশে থাকেন, তাদের ছেলে মেয়েরাও বিদেশে থাকে। ঢাকার বায়ু দূষণে তাদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু আমরা তো এ দেশেই থাকি। এ দেশেই থাকতে হবে। বায়ু দূষণের হাত থেকে মানুষকে বাঁচান।
আদালত পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা যদি বাস্তবায়ন না করা হয়, পানি ছিটানো না হয় তাহলে আমরা প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তলব করে ব্যাখ্যা চাইব।
পরে আদালত দুই সপ্তাহের মধ্যে বায়ু দূষণ রোধে হাইকোর্টের দেয়া ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, পুলিশের আইজি, রাজউককে এই আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় পরবর্তী আদেশের জন্য দার্য করা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করীম।
২০২০ সালে ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে উচ্চ আদালত যে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
ওইদিন তিনি বলেছিলেন, আপনারা জানেন কয়েক দিন ধরে রিপোর্ট হচ্ছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ বায়ু দূষণকারী শহর হচ্ছে ঢাকা। বায়ু দূষণে ঢাকার এই অবস্থান ধারাবাহিকভাবে একইরকম হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে যেন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। যেটা দিল্লিতে করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের এখানে কারও কোনো খবর নেই। এখন পর্যন্ত ঢাকা শহর বায়ু দূষণে এক নম্বরে আছে, অথচ কেউ কোনো পাত্তা দিচ্ছেন না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত এ বিষয়ে বলে যাচ্ছেন। পরে শুনানির পর গত ৩১ জানুয়ারি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এর আগে ২০২০ সালে বায়ু দূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত।
৯ দফা নির্দেশনায় বলা হয়- ১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহন করতে হবে। ২. যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবেন। ৩. ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর নির্দেশ ছিল, এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সব সড়কে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ এবং কার্পেটিংসহ যেসব কাজ চলছে, সেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ৫. যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে হবে। ৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। ৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীন চলছে, এর মধ্যে যেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। ৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইক্লিং বন্ধ করতে হবে। ৯. মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে হবে। এরপর মার্কেট ও দোকান বন্ধ হলে সিটি করপোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের অবনতি হয়েছে: সিপিডি
পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকেই দায়িত্ব নিতে হবে: মেয়র আতিক
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিল পরিবেশ অধিদপ্তর
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার কুড়িগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর ও নাগেশ্বরী উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
জানা গেছে, অভিযানে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত-২০১৯) লঙ্ঘনের দায়ে নাগেশ্বরী পৌরসভায় অবস্থিত মেসার্স কে. বি. ব্রিকস নামে একটি অবৈধ ইটভাটা সম্পূর্ণভাবে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে অবৈধ ৫ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিল পরিবেশ অধিদপ্তর
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত অভিযানে নেতৃত্বে ও কুড়িগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে ইটভাটা মালিকদের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট তৈরিতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে ছাড়পত্রবিহীন অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: করোনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মৃত্যু
পরিবেশ অধিদপ্তরে ৫ ম্যাজিস্ট্রেট দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
১ বছর আগে
সিরাজগঞ্জে ১৪০টি ইটভাটার ৯৪টি অনুমোদনহীন
সিরাজগঞ্জে অনুমোদনহীন ও অবৈধভাবে যত্রতত্র প্রায় দেড়শ’ ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। শুধু রায়গঞ্জ উপজেলাতেই গড়ে উঠেছে ৬৪টি ইটভাটা। এর মধ্যে ৩১টি ইটভাটার নেই কোনো অনুমোদন।
নিয়মের তোয়াক্কা না করেই এসব ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর ফলে গাছপালা উজাড় ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কর্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রায়গঞ্জে প্রতিবছরই নতুন নতুন ভাটা তৈরি হচ্ছে। জেলার মোট ১৪০টি ইটভাটার ৬৪টিই গড়ে উঠেছে এখানে। আর পুরো জেলার ১৪০টির মধ্যে মাত্র ৪৬টি ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে। বাকিগুলো চলছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই।
এছাড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইট পোড়ানোর লাইন্সেস অনেকের থাকলেও অনেক ইটভাটা মলিক তা বছর বছর নবায়ন করেন না।
নিয়ম অনুযায়ী ইটভাটায় জ্বালানি হিসাবে কয়লা পোড়ানোর কথা থাকলেও ইটভাটার মালিক সমিতির দাবি, কয়লা সংকটের কারণে তারা জ্বালানি কাঠ পোড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ইটভাটায় মাটিচাপায় শ্রমিকের মৃত্যু
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ করে কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর পরিমাণ বেড়ে গেছে। ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে তৈরি হচ্ছে ইট। এতে জমি উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে।
এছাড়া ইটভাটার নির্গত ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিশুসহ সব বয়সী মানুষ। হুমকির মুখে পড়ছে জীব-বৈচিত্র্য।
এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইটভাটার লাইন্সেস অনেকের থাকলেও সবাই প্রতিবছর নবায়ন না করায় তা অনুমোদনহীন হয়ে যাওয়ার পরও তা অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া সরকারি নিয়মানুযায়ী ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লা পোড়ানোর কথা থাকলেও অবাধে তারা কাঠ পোড়ায়।
কয়লা সংকটের কারণে তারা জ্বালানি কাঠ পোড়াতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতি দাবি করেছেন।
তবে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা সরকার বলেন, প্রতি রাউন্ড ইট পোড়াতে প্রচুর পরিমাণে কয়লা লাগে। বর্তমানে জোগান কম থাকায় টাকা দিয়েও কয়লা পাওয়া যায় না। আর কয়লার দাম বেড়েছে তিন গুণ। বাধ্য হয়েই ইট পোড়াতে কাঠের ব্যবহার করা হচ্ছে। মৌসুমের এই সময়ে আমরা প্রচুর পরিমাণে ইট তৈরি করি। তাই এই সময় জ্বালানির প্রয়োজন অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, কয়লার দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়েছে। কয়লা বাজারে পাওয়া যায় না। এক মৌসুমে সাত থেকে আট লাখ ইট পোড়াতে প্রায় ১৩০ টন কয়লা লাগে। এক হাজার টন কয়লার দাম আগে ছিল ৯০ লাখ টাকা, এখন কিনতে হচ্ছে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকায়।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা দেওয়ান শহিদুজ্জামান জানান, তারা অভিযানে নামবেন। ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ পোড়ালেই জরিমানাসহ ইটভাটা বন্ধের সুপারিশ করবেন।
রায়গঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানজিল পারভেজ জানান, এরই মধ্যে তিনটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ ব্যবহার রোধে মালিকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে যারা শর্ত ভাঙবেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৃপ্তি কণা মন্ডল বলেন, নির্দিষ্ট তথ্য অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধেও নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ৭ অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিলো আদালত
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মোবারক হোসেন বলেন, জেলার সব কয়টি উপজেলায় অনুমোদনহীন ও অবৈধ ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নেয়া শুরু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে বুধবার রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে একটি পত্র পাঠানো হয়েছে। ওই পত্রে অনুমোদনহীন ও অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটা কমিটি করতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মেজবাহুল আলম বলেন, সবকয়টি জেলার ইটভাটাগুলোর হালনাগাদ তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদেরকে আর ছাড়পত্র দেয়া হবে না।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা যে যাই বলুক না কেন আসল কথা হলো কয়লার দাম বৃদ্ধির অজুহাতে মালিকরা তাদের ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে ইচ্ছেমতো কাঠ পোড়ানো শুরু করেছে।
সেইসঙ্গে ফসলি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে ইট তৈরি করায় জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে।
সেইসঙ্গে ইটভাটার নির্গত ধোঁয়ায় শিশু ও বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে।
তাছাড়া হুমকির মুখে পড়ছে জীব-বৈচিত্র্য।
আরও পড়ুন: দেশের সব অবৈধ ইটভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ
২ বছর আগে
আজ সকালে ঢাকার বাতাসের মান ‘মধ্যম’ পর্যায়ে
ঢাকার বাতাসের মান ‘মধ্যম’ অবস্থায় আছে। সোমবার সকাল ৯টার দিকে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ৯৫ নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা ১৪তম স্থানে রয়েছে।
৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘স্বাভাবিক’ বলা হয়, তবে কিছু মানুষের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, বিশেষ করে যারা বায়ু দূষণের প্রতি অস্বাভাবিকভাবে সংবেদনশীল।
পাকিস্তানের লাহোর, ভিয়েতনামের হ্যানয় ও পাকিস্তানের করাচি যথাক্রমে একিউআই ১৭৪, ১৬২ ও ১৫৫ স্কোর নিয়ে প্রথম তিনটি স্থান দখল করেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান এখনও ‘মধ্যম’
বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘খারাপ’বলে মনে করা হয়।
একইভাবে, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘খারাপ’ বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির দিনেও ঢাকার বাতাস দূষিত
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর’
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
২ বছর আগে
পরিবেশ দূষণকারীদের নাম ৭ দিনের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ
এক সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ দূষণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম (তালিকা) পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে দূষণকারীদের নাম প্রকাশে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং নাম প্রকাশে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ ও তথ্য সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সাতজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করবে না-এমন সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশের পর হাইকোর্টে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে দুই আইনজীবী বাদী হয়ে এই রিট করেন।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, তথ্য অধিকার আইনের ৬ (১) এবং পরিবেশ আইনের ৪(২) (চ) বিধান অনুসারে কর্তৃপক্ষ দূষণকারীদের সকল তথ্য প্রকাশ করতে আইনগতভাবে বাধ্য। কিন্তু অধিদপ্তর আইনকে অমান্য করে দূষণকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
পড়ুন: হারুনসহ ডেসটিনির ৪৫ জনের সাজা বাড়াতে হাইকোর্টে দুদকের আবেদন
ডেসটিনির হারুনকে জামিন দেননি, আপিল শুনবেন হাইকোর্ট
২ বছর আগে
‘বন্ধ’ করা অবৈধ ইটভাটার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
ঢাকাসহ আশপাশের পাঁচ জেলায় বন্ধ করা অবৈধ ইটভাটার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ তালিকা দিতে বলা হয়েছে। ঢাকার পাশ্ববর্তী পাঁচ জেলার ডিসি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্বশরীরে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার পর এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার এ আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বন্ধ করা অবৈধ ইটভাটা আবারও চালু হয়েছে, এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে গত ২০ এপ্রিল স্বশরীরে হাজির হতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার তারা হাইকোর্টে হাজির হন। তাদের বক্তব্য শুনে আদালত উপরোক্ত আদেশ দিয়ে তাদেরকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যহতি দেন।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরেসদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাঈনুল ইসলাম। আর ইটভাটা মালিকদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আনিক আর হক।
আরও পড়ুন: অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসের নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়নি, পরিবেশের ডিজিসহ ৫ ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
আদেশের পর মনজিল মোরসেদ পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাঁচ জেলা প্রশাসক আদালতে হাজির হয়ে তালিকা দিয়ে বলেছেন, কোন জেলায় কতটি অবৈধ ইটভাটা আছে, কতটি তারা বন্ধ করেছেন। তারা বলছেন, ৯৫ শতাংশ অবৈধ ইটভাটা তারা বন্ধ করেছেন। আর পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তালিকা দিয়ে বলেছেন, ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় ৪১১টি অবৈধ ইটভাটা আছে। তার মধ্যে ৬৫ শতাংশ বন্ধ করা হয়েছে। ’
আইনজীবী মনজিল বলেন, ‘তাদের এই বক্তেব্যের প্রেক্ষিতে আদালতে আমি বলেছি, আগের দেয়া হলফনামায় (ব্যাখ্যায়) তারা একই কথা বলেছিলেন। কিন্তু দেখা গেছে বন্ধ করা ইটভাটাগুলো আবার চলছে। যে কারণে আমি বলেছি যে, এ নিয়ে নাটক চলছে। এই নাটক বন্ধ হওয়ার জন্য একটা যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেয়া দরকার। আইনের বিধান অনুযায়ী কোনো ইটভাটার মালিককে যদি দুই বছরের সাজা দেয়া হয় তাহলে আর সে মালিক অবৈধ ইটভাটা চালাবে না। কিন্তু তারা (জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর) সেটা না করে মাত্র ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। পরবর্তীতে অবৈধভাবে ইটভাটা আবার চালু করে সে ২০ হাজার টাকা আবার তুলে নেয় মালিকরা।
যে কারণে আমি বলেছি, বন্ধ করা ইটভাটার তালিকা দেয়া হোক। আমরা অনুসন্ধান করে দেখি বন্ধ করা কোনো ইটভাটা চলছে কিনা। যদি চলে তার দায়িত্ব তাদের (জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে) নিতে হবে। শুনে আদালত বন্ধ করা অবৈধ ইটভাটার তালিকা চেয়েছেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের তালিকা দিতে বলেছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনজীবী আমাতুল করিম বলেন, ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত। একই পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসকদেরও বলেছেন। আদলতকে উদ্ধৃত করে এ আইনজীবী বলেন, আমরা পরিবেশ বাঁচাতে চাই। আর পরিবেশ বাঁচাতে চাইলে অবৈধ একটি ইটভাটাও থাকতে পারবে না।
ঢাকা শহর ও আশেপাশের এলাকায় বায়ু দূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করে। জনস্বার্থে করা ওই রিট মামলায় গত ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি ৯ দফা নির্দেশনা জারি করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
মনজিল মোরসেদ বলেন, ওইসব নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদক্ষেপ নেয়া শুরু হলে বায়ু দুষণ কিছুটা কমতে থাকে। কিন্তু বর্তমানে ঢাকা আবার সর্বোচ্চ বায়ু দূষণের শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে এইচআরপিবির পক্ষে গত ৩০ জানুয়ারি এক সম্পূরক আবেদন দাখিল করে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নির্দেশনার আবেদন জানানো হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সে আবেদনের শুনানির পর সংশ্লিষ্ট পাঁচ জেলার (ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজিপুর) জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডাকেন হাইকোর্ট। ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে উচ্চ আদালতের আগের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না থাকায় তাদের ডাকা হয়।
নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের পক্ষে আরডিসি অবৈধ ইটভাটার তালিকা নিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল আদালতে যুক্ত হন।
আরও পড়ুন: ৬ সপ্তাহের মধ্যে পার্বত্য তিন জেলার ইটভাটা ধ্বংসের নির্দেশ হাইকোর্টের
সেদিন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ আদালতে বলেন, অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে পাঠানো হয়েছে। ৩১৯টি ইটভাটা অবৈধ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৯৫টি ইটভাটার কার্যক্রম একেবারে বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপর গত ১ মার্চ অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ঢাকার পাশ্ববর্তী পাঁচ জেলাকে আবারও নির্দেশ দেন আদালত।
এরমধ্যে পাঁচ জেলা প্রশাসক আদালতে আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন দেন। এসব প্রতিবেদন মোট ১১৪টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের কথা উল্লেখ করা হয়। এরপর রিটকারীর পক্ষ আদালতে অভিযোগ তুলে যে, বন্ধ করা ইটভাটা আবার চলছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে আবেদন করেন। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে আদেশ চাওয়া হয় ওই আবেদনে। গত ২০ এপ্রিল সে আবেদনের শুনানির পর পাঁচ জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার সে তলবে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার পর এ আদেশ দেন উচ্চ আদালত।
২ বছর আগে
ঢাকাসহ ৫ জেলায় অবৈধ ইটভাটা ৩১৯, একেবারে বন্ধ ৯৫টি
ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় ৩১৯ অবৈধ ইটভাটা থাকার কথা আদালতকে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ। ঢাকা ছাড়া বাকি চার জেলা হচ্ছে- গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ।
বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে যুক্ত হয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এসময় ঢাকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসকও ভার্চুয়ালি আদালতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শুনানির পর অবৈধ ইটভাটার তালিকা হলফনামা আকারে রাষ্ট্রপক্ষকে দাখিল করার নির্দেশ দিয়ে আদালত আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী মো. শাহজাহান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাইদ আহমেদ রাজা এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান। আর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
ঢাকায় বায়ু দূষণ ও অবৈধ ইটভাটা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে গত ৩০ জানুয়ারি একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি সে আবেদনের শুনানির পর ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে উচ্চ আদালতের আগের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না থাকায় সংশ্লিষ্ট পাঁচ জেলার (ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর) জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডাকেন হাইকোর্ট।
অবৈধ ইটভাটার তালিকা নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল আদালতে তাদের যুক্ত থাকতে বলা হয়েছিল। এছাড়া বায়ু দূষণ রোধে গত দুই মাস (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রম্যমাণ আদালত কী কাজ করেছে, তার একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে। বায়ু দূষণ সংক্রান্ত চলমান একটি রিটে সম্পূরক আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর এ আদেশ হয়েছিল। নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের পক্ষে আরডিসি আদালতে যুক্ত হন। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বা তার পক্ষে কোনো প্রতিনিধি আদালতে ছিলেন না।
শুনানির শুরুতেই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান আদালতে জেলা প্রশাসককে যুক্ত থাকার তথ্য দিয়ে বলেন, সব জেলা (পাঁচ জেলা) থেকে তালিকা এসে পৌঁছায়নি। সব তালিকা আসার পর সেগুলো হলফনামা করে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এরপর আদালত তিন জেলা প্রশাসকের বক্তব্য শোনেন। পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ আদালতে বলেন, অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে পাঠানো হয়েছে। ৩১৯টি ইটভাটা অবৈধ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৯৫টি ইটভাটার কার্যক্রম একেবারে বন্ধ করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী ৫ জেলার অবৈধ ইটভাটার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
আদালত কার্যক্রম পরিচালনা পদ্ধতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকেন। ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা সহায়তা করেন। অন্য জেলায় যখন যাই, তখন পুলিশ ফোর্স নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকর্মীদের নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে থাকেন।
শুনানির পর বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, তালিকা পাওয়ার পর সব বিষয় আমরা শুনব। শুনে যথাযথ আদেশ দেব। আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন রাখা হল। এর আগে, ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পক্ষে রিট আবেদন করা হয়।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ওই বছর ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন। ঢাকা শহরে যারা বায়ু দূষণের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুই বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে সেদিন নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এছাড়া রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা ওই আদেশের ১৫ দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে বলা হয়েছিল যে, যাতে শুকনো মৌসুমে ধুলো ছড়িয়ে বায়ু দূষণ বাড়তে না পারে। পাশাপাশি ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকাগুলোতে দিনে অন্তত দুই বার করে পানি ছিটাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। এসব নির্দেশনার পাশাপাশি আদালত সেদিন রুলও জারি করেছিলেন। ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছিল রুলে।
বন ও পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, ডিএমপি কমিশনার, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ১১ বিবাদিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। এই আদেশের তিন মাস পর পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন আদালত।
আরও পড়ুন: দিনাজপুর ও মৌলভীবাজারের লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ
পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলার লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ
২ বছর আগে
চট্টগ্রামে পাহাড় কাটার দায়ে এরাবিয়ান কর্পোরেশনকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা
চট্টগ্রামে পাহাড় কাটার অভিযোগে এরাবিয়ান কর্পোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নগরীর খুলশী থানার জিইসি এলাকায় ২০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার অভিযোগে এ অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানি শেষে এ জরিমানা করেন মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক নুরুল্লাহ নুরী।
তিনি বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তরে পরিদর্শন টিম জিইসি এলাকায় একটি পাহাড়ের ২০ হাজার ঘনফুট মাটি কাটার সত্যতা পায়। এর প্রেক্ষিতে রবিবার পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
নুরুল্লাহ নুরী বলেন, পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করায় এরাবিয়ান কর্পোরেশনের মালিক হাজী মো. নুর ইসলাম এবং স্ত্রী আমেনা বেগমকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা তৎক্ষণাৎ আদায় করা হয়েছে এবং বাকি পাঁচ লাখ টাকা আগামীকালের (সোমবারের) মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
ঢাকার বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর’
৩ বছর আগে