অভিন্ন নদীগুলো থেকে ভারত এক তরফা পানি সরিয়ে নেওয়ায় বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়ায় যৌথ নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আন্দোলন বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছেন নদী গবেষক পরিবেশকর্মীরা।
শনিবার (২ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মৌলানা আকরম খান হলে পানি অধিকার যোদ্ধা আতিকুর রহমান সালু স্মারক গ্রন্থের প্রকাশনা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আহ্বন জানান।
বক্তরা বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকার সংরক্ষণের আন্দোলন আরো বেগবান করার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, ভারতের সঙ্গে ৫৪টি যৌথ নদীর মধ্যে গঙ্গা ছাড়া অন্য কোনটির পানি ব্যবস্থাপনার চুক্তি নেই। গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ ডিসেম্বরে শেষ হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর লেখা মুখবন্ধসহ আতিকুর রহমান সালু স্মারকগ্রন্থে মোট ৩০টি লেখায় তার সংগ্রামী ও কর্মময় জীবনের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকার আন্দোলনে তার আপোষহীন সংগ্রাম একটা অতূলনীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে যুগযুগ ধরে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে উল্লেখ করা হয়।
বক্তারা বলেন, কোনো চুক্তি বা বোঝাপড়া ছাড়া উজানের দেশ ভারত সকল যৌথ নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে শুকনো মওসুমে পানির প্রবাহ সরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশে এক মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করে চলেছে। অন্যদিকে বর্ষা মওসুমে বানের পানি বিনা নোটিশে ছেড়ে দিয়ে সৃষ্টি করছে প্রলয়ঙ্করী বন্যা ও নদী ভাঙ্গন। অথচ বর্তমান বিশ্বে যৌথ নদীর পানি সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে বেসিনভিত্তিক যৌথ ব্যবস্থাপনায়, যেন উজান ও ভাটির সকল দেশ তার সুফল পায়। পাশাপাশি নদীগুলো হিমালয়ের উৎপত্তিস্থল থেকে সাগর পর্যন্ত জীবন্ত থাকে।
পড়ুন: যৌথ নদী কমিশন: ঢাকা, দিল্লি পানি-বন্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা
তারা বলেন, আতিকুর রহমান সালুর লক্ষ্য ছিল ২০০৫ সালের ৪ মার্চ চিলমারিতে অনুষ্ঠিত দশ লাখ লোকের সমাবেশের মতো আরেকটি বড় সমাবেশ আয়োজন করে নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের দাবি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা এবং এ জীবন-মরণ সমস্যার সমাধানে ভারতের উপর চাপ প্রয়োগ করা। ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের পরেই ১৯৭৭ সালের ভারসম্যপূর্ণ গঙ্গা পানি চুক্তি সই সম্ভব হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি), বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার,আইএফসি, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমদ, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শাহরিয়া আখতার বুলু, আতিকুর রহমান সালুর সহধর্মিণী ও স্মারক গ্রন্থের প্রকাশক ফরিদা ইউসুফজাই, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তফাফিজুর রহমান ইরান ও স্মারক গ্রন্থের সম্পাদক কামরুল হুদা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন নিউইয়র্ক আইএফসির চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান এবং সঞ্চালনা করেন আইএফসি, বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদার।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নিউইর্য়কস্থ ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা গিয়াস আহমেদ, অধ্যক্ষ শেখ ফিরোজ আহমদ, অধ্যাপক ইসরারুল হক, কামাল উদ্দিন চৌধুরী, অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান খান, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, জামালউদ্দিন জামাল, রফিকুল ইসলাম আজাদ ও আতাউর রহমান আতা