কোভিড ব্যবস্থাপনা ও অব্যাহত অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন বিশ্বের ৪১তম অর্থনীতির দেশ। আশা করা যায়, ২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।’
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নিউইয়র্কে মহান বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজয় দিবসের আলোচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্যের শুরুতে রাবাব ফাতিমা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতাসহ ১৫ আগস্টের শাহাদৎবরণকারী জাতির পিতার পরিবারের সকল সদস্য, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে রূপকল্প ২০২১, রূপকল্প ২০৪১ ও ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এবছর নভেম্বর মাসে স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটেগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমরা জাতিসংঘের চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছি যা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের মর্যাদা ও সক্ষমতার স্বাক্ষর।’
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, আমরা এখন শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, বিশ্বশান্তি রক্ষা, শান্তি-বিনির্মাণ, দারিদ্র্য দূরীকরণ বিষয়ক আলোচনা ও নারীর ক্ষমতায়নসহ অসংখ্য বহুপাক্ষিক প্লাটফর্মে বাংলাদেশ নেতৃত্বশীল ভূমিকা রেখে চলেছে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে দুই দেশের মাঝে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছে: কোবিন্দ
প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অগ্রণী ভূমিকা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানরা এখানকার মূল ধারার রাজনীতিতে নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটসহ বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতার সূদীর্ঘ সংগ্রামের নানা দিক তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। জাতির পিতা ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের মধ্যে যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের দেশের ফিরিয়ে বিচারের আওতায় আনতে প্রবাসীদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আলোচনা শুরুর পূর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণকে উপলক্ষ্য করে নতুন প্রজন্মসহ দেশবাসীকে জাতির পিতার আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত করার মহতী প্রয়াসের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক শপথবাক্য পাঠ অনুষ্ঠানটির রেকর্ডকৃত অংশ অংশগ্রহণকারী সকলের উদ্দেশে পরিবেশন করা হয়।
পড়ুন: ২০২০ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা কমেছে: মার্কিন প্রতিবেদন