যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩১টির মধ্যে একটি শিশু অটিজম আক্রান্ত
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩১টি শিশুর মধ্যে একটি অটিজমে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল শিশুর মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করা এই রোগটি। এবার আক্রান্তের দিক থেকে নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, ছয় মাসের মধ্যে অটিজমের কারণ নির্ণয় করে সেই ঝুঁকি নির্মূল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সিডিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অটিজম আক্রান্তের হার বাড়ার এই তথ্য উঠে এসেছে। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি অঙ্গরাজ্য এবং পুয়ের্তো রিকোর ৮ বছর বয়সী বাচ্চাদের উপাত্ত সংগ্রহ করে সিডিসি। ওই উপাত্তের ওপর ভিত্তি করেই এই তথ্য উঠে আসে।
সিডিসির তথ্যমতে, এর আগে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩৬ জনে একটি শিশু অটিজম আক্রান্ত ছিল, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে একজন।
এছাড়া, এশিয়ান বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসী, আমেরিকান ইন্ডিয়ান বা আলাস্কার স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অটিজম আক্রান্ত শিশু দেখা যায় বলে সিডিসির গবেষণায় উঠে এসেছে। পাশাপাশি মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এই সমস্যা আরও বেশি বলে জানা গেছে।
অটিজম আসলে কী
অটিজম হচ্ছে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা একে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বলেন। অটিজমের অনেক ধরনের লক্ষণ আছে। সাধারণত ভাষা ও যেকোনো বিষয় শিখতে এসব বাচ্চাদের বিলম্ব হয়ে থাকে, সামাজিক যোগাযোগ, সামাজিক আচরণ, সামাজিক কল্পনা ইত্যাদি ক্ষেত্রসমূহে বেশ সমস্যা লক্ষ করা যায়, তাছাড়া রুটিনের প্রতি অস্বাভাবিক নির্ভরতা দেখা যায় এসব বাচ্চার।
কয়েক দশক আগেও কোনো শিশুর মধ্যে অটিজম আছে কিনা; তা নির্ণয় করা ছিল খুবই বিরল ঘটনা। শুধু যেসব শিশুর যোগাযোগ ও সামাজিকতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সমস্যা হতো তাদেরই পরীক্ষা করে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হতো।
আরও পড়ুন: দেশে ৭১ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ
এতে আক্রান্তের হারও তখন কম ছিলো। সিডিসির তথ্যমতে নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ হাজারে ১টি শিশুর অটিজম রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যেত। সে সময় থেকে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার— এই শব্দগুচ্ছ পরিচিতি লাভ করতে থাকে। এখান থেকেই তীব্র আকারে সমস্যা দেখা না দিলেও সামান্য আকারে যদি অটিজমের দুয়েকটি লক্ষণ দেখা দেয় মানুষ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে। এতেই দেখা যায়, বিপদের জল অনেক দূর এগিয়েছে। ১০ হাজারে একজন আক্রান্ত থেকে সংখ্যাটি একলাফে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে তা দেড়শো জনে একজন হয়ে দাঁড়ায়। আর ২০১৮ সালে আক্রান্তের হার বেড়ে হয় ৪৪ জনে একজন। এই সংখ্যা এরপর থেকে আর কমতে দেখা যায়নি বরং বেড়েছে।
অটিজম কেন বাড়ছে?
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, মূলত চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতির ফলে অটিজম শনাক্ত বেশি হচ্ছে। তারা জানান, অটিজম নির্ণয় করার কোনো শারীরিক পরীক্ষা নেই। এমন না যে রক্ত বা অন্য কোনো পরীক্ষা করে বের করা যাবে।
একটি শিশু অটিজম আক্রান্ত কিনা তা বোঝা যায় মূলত শিশুটির আচরণ মূল্যায়নের মাধ্যমে। বর্তমানে এ সংক্রান্ত চিকিৎসা ও সহায়তার পরিধি অনেক বেড়েছে বলে জানান তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের টিকাবিরোধীরা মনে করতেন, শিশুদের জন্মের পর থেকে বিভিন্ন ধরনের টিকা দেওয়ায় অটিজম আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি জুনিয়রও এই টিকা বিরোধীদের দলে।
তবে টিকা দেওয়ার সঙ্গে অটিজম আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে সিডিসি ও অন্যান্য স্বাস্থ্য গবেষকরা বেশ আগেই প্রমাণ করেছেন। পরবর্তীতে জিনগত সমস্যা, বাবার বয়স, মায়ের ওজন, ডায়াবেটিস এমনকি নির্দিষ্ট কিছু রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে অটিজম হতে পারে কিনা তা নিয়েও বিস্তর গবেষণা হয়েছে।
কিছু গবেষকদের মতে, বেশকিছু কারণের সমন্বয়ে এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। উদাহরণস্বরুপ, জৈবিক সমস্যা রয়েছে এমন কেউ ক্ষতিকর কোনো পরিবেশের সংস্পর্শে আসলে সমস্যাটি প্রকট হয়ে উঠতে পারে। টিকা ও অটিজম বিতর্ক
স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি জুনিয়র ও অন্যান্য টিকাবিরোধীরা বলেন, শিশুদের বিভিন্ন রোগের টিকা দেওয়া হয়, এটি অটিজমকে প্রভাবিত করে। পাশাপাশি শিশুদের টিকায় ব্যবহৃত থিমেরোসল নামে একটি রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলে জানান তারা। এটির কারণে বাচ্চারা অটিজম আক্রান্ত হন বলে মত দেন তারা।
তবে এই রাসায়নিক এখন আর শিশুদের টিকায় ব্যবহার করা হয়না বলে নিশ্চিত করেছেন সিডিসির কর্মকর্তারা। পাশাপাশি টিকার সঙ্গে অটিজম হওয়া বা না হওয়ার কোনো সংযোগও তারা খুঁজে পাননি।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন কেনেডি জুনিয়র। সেখানে অটিজম আক্রান্তে সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন। তিনি জানান, দেশটির স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রনালয়ের তত্ত্বাবধানে অটিজমের কারণ জানতে বৃহৎ পরিসরে একটি গবেষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: কৃমিজনিত রোগে গবাদিপশুর মৃত্যু: প্রতিকার ও প্রতিরোধ
কেনেডি জুনিয়র বলেন, ‘শতাধিক গবেষক এই গবেষণায় অংশ নেবেন। তারা ছয়মাসের মধ্যে অটিজম হওয়ার কারণগুলো খুঁজে বের করবেন। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো আমরা নির্মূল করবো।’
মজার ব্যাপার হলো, এমন এক ব্যক্তিকে এই গবেষণা কার্যক্রমের নেতৃত্বে নিয়োগ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, যিনি বারবার দাবি করে আসছেন টিকা ও অটিজমের মধ্যে সংযোগ রয়েছে।
ডেভিড গেইয়ার নামে ওই ব্যক্তি লাইসেন্স ছাড়াই এক শিশুর চিকিৎসা করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
১ দিন আগে
কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘টাইট’দেওয়া যায়, তা বের করতেই ভিয়েতনামে শি: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলে ‘টাইট’ দিতেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সফরের শুরুতে স্থানীয় সময় সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় পৌঁছান শি। হ্যানয়ের বৈঠক শেষেই এ সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের প্রতিবেশী ৩টি দেশে সফর শুরু করেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার তথ্যমতে, শি তার সফরে ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিল ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায় যাবেন এবং ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল কম্বোডিয়ায় যাবেন।
এমন একটি সময় শি এই সফর শুরু করেছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কারোপ নিয়ে উত্তেজনা চলছে। এছাড়া ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়াও ট্রাম্পের শুল্কারোপে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সফরের প্রথমদিনে ভিয়েতনামের শীর্ষ নেতা তো লামের সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এ সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণসহ দেশ দুটির মধ্যে সরবরাহ শৃঙ্খল মজবুত করতে বেশকিছু সমঝোতা স্মারক সই করেন শি ও লাম।
আরও পড়ুন: চীন বাদে সব দেশের ওপর মার্কিন পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত
এর পরপরই হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এই বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষতির উদ্দেশেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘এখানে আমি চীনেরও দোষ দেখছি না, ভিয়েতনামেরও না। খুবই ভালো একটি বৈঠক হয়েছে, যেখানে আলোচনার বিষয় হলো—কীভাবে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে টাইট দিতে পারি!’
বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় একটি সংকট তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে, চীনের মাথার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক। অন্যদিকে, ভিয়েতনামের ওপর রয়েছে ওয়াশিংটনের ৪৬ শতাংশ শুল্ক। যদিও সেটি ৯০ দিনের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। তাই শঙ্কা এখনো কাটেনি। এককভাবে ভিয়েতনামের পণ্য রপ্তানির সবথেকে বড় বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ চীনের, গুগলের বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা
এ কারণে শুল্ক কার্যকর হলে সেটি ভিয়েতনামের অর্থনীতিতে নিশ্চিতভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। আবার চীনের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে হলে চীনেরও একটি বিকল্প বাজার দরকার। সে কারণে চীন এবার দক্ষিণ এশিয়ায় মনোযোগ দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের প্রেডিডেন্ট আগেই তার এই সফরের পরিকল্পনা করলেও কাকতালীয়ভাবে ট্রাম্পের শুল্কারোপের পর এই সফর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গণে বাড়তি উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন অনেকে।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব কমাতে দেশটির সঙ্গে আলোচনায় জোর দিয়েছে কোনো কোনো দেশ। চীন কিংবা কানাডার মতো কিছু দেশ আবার পাল্টা শুল্কও আরোপ করেছে।
এছাড়া, চীন নিজেদের একটি বিশ্বস্ত বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রতি জোর দিয়েছেন শি জিনপিং।
ভিয়েতনামের সমাজতান্ত্রিক দলের পত্রিকা নিহানদানের একটি প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘এই বাণিজ্যযুদ্ধে আসলে কেউই জয়ী হবে না। এই সুরক্ষাবাদ (শুল্কারোপসহ নানাভাবে বিভিন্নদেশ থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ করা) কোনোভাবেই সুফল বয়ে আনবে না।’
ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিনের সঙ্গে বৈঠকের পর শি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই অন্যায় শুল্কারোপের বিরুদ্ধে তাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। এ সময় রেলসহ বিভিন্ন খাতে মোট ৪৫টি চুক্তি সই করা হয়েছে বলে চিন ও ভিয়েতনামের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে। তবে চুক্তিগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।’
শুধু ভিয়েতনামই নয়; দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে চাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি না করতে পেরে নিজেদের পণ্যগুলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি করতে পারে চীন। এই আশঙ্কা থেকেই মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তাল মিলিয়ে আবার চীনকেও অখুশি না করে চলতে চাইছে দেশগুলো।
আরও পড়ুন: মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্কারোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বিশ্বের বৃহৎ দুটির অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ক পুরোপুরি নষ্ট করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। আবার সম্পর্ক টিকেও যেতে পারে। এছাড়া এক পর্যায়ে গিয়ে একটি বড় চুক্তি হতে পারে।’
কোনো চুক্তি হবে কিনা বা এই শুল্কারোপ আসলে কি ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করবে; তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্প ও তার কর্মকর্তারা আগেই নিশ্চিত করেছেন, ৯০ দিনের জন্য শুল্কের স্থগিতাদেশ সাময়িক।
নিজের সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘কোনো দেশই এখনো এই শুল্কের আওতাধীন না, চীন তো একদমই না। তারা আমাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে।’
২ দিন আগে
প্রথম দফার বৈঠক শেষ, আরও আলোচনায় সম্মত ইরান-যুক্তরাষ্ট্র
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহরান ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের মধ্যে প্রথম দফার বৈঠক শেষ হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এ নিয়ে আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও আলোচনার বিষয়ে দুপক্ষ সম্মত হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এ আলোচনা শুরু হয় বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে হওয়া এই বৈঠক শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে ইরান থেকে প্রকাশিত এসব খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে দুই পক্ষের মধ্যে সামনাসামনি কথা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাতে আলোচনা যে ভালো হয়েছে, তার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইরানে ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক সাংবাদিকের ১০ বছরের কারাদণ্ড
ওমানের যে স্থানে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট করে কিছু জানানো না হলেও দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই আলোচনা চলে বলে জানা গেছে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়ে ৫টা ৫০ মিনিটে তা শেষ হয়।
বৈঠক শেষে উইটকফকে বহনকারী গাড়িবহরটি ওমানের রাজধানী মাসকাটে ফিরে আসে। পরে সেটিকে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দিকে রওনা হতে দেখা যায়।
প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে বৈরী সম্পর্ক টেনে নিয়ে আসার পর দুই দেশের মধ্যে এমন আলোচনা সত্যি আশাব্যঞ্জক। তবে এই আলোচনার ঝুঁকিও রয়েছে।
একদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়ে রেখেছেন, ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হবে। অন্যদিকে, ইরানি কর্মকর্তারাও বারবার পাল্টা সতর্ক করে আসছেন যে, তাদের কাছে প্রায় অস্ত্র-গ্রেড মানের ইউরেনিয়ামের মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে।
ওমানে বৈঠক
আজ (শনিবার) বিকালে অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সাংবাদিকরা একটি গাড়ির বহর দেখেন, যেটি উইটকফকে বহন করছিল বলে ধারণা তাদের। বহরটি ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে মাসকাটের উপকণ্ঠের দিকে দ্রুত চলে যায়। এরপর সেটি একটি প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে।
এর কয়েক মিনিট পরই ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি এক্সে লেখেন, ‘পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।’
‘আলোচনাটি ওমানের মধ্যস্থতায় তাদের পরিকল্পিত স্থানে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বসে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান বিনিময় করবেন।’
এর ঘণ্টাখানেক পর বাঘায়ি ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হাজির হন এবং আলোচনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: ইরানে সাময়িক মুক্তি পেল নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদী
তিনি বলেন, ‘ইরানের উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট—ইরানের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। কূটনীতির ব্যাপারে আমরা সত্যিকারের ও অকৃত্রিম সুযোগ দিচ্ছি, যাতে সংলাপের মাধ্যমে আমরা একদিকে পরমাণু ইস্যুতে এগিয়ে যেতে পারি, অন্যদিকে আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টিতেও একটি সমাধানের দিকে যেতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন, এটি কেবল শুরু। সুতরাং এই পর্যায়ে উভয় পক্ষই যে কেবল নিজেদের মৌলিক অবস্থানের বিষয়গুলো উপস্থাপন করবে, এটিই স্বাভাবিক। ফলে এই দফায় আলোচনা দীর্ঘ হবে বলে আমরা আশা করছি না।’
এর আগে, ইরানি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আরাগচি। সে সময় তিনি বলেন, ‘যদি উভয় পক্ষের যথেষ্ট সদিচ্ছা থাকে, তাহলে আমরা একটি সময়সূচি নির্ধারণ করব। তবে এ ব্যাপারে এখনই কথা বললে তা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।’
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ প্রকাশিত ওই অডিও ক্লিপে তিনি আরও বলেন, ‘এই আলোচনাগুলো যে পরোক্ষভাবে হবে, এখন কেবল সেটিই স্পষ্ট। তাছাড়া পারমাণবিক ইস্যুতে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় ইচ্ছা নিয়েই এগুলো (আলোচনা) পরিচালিত হবে। আর ইরানের জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং সমতার ভিত্তিতে চুক্তিতে পৌঁছানোর কথা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি।’
তবে ট্রাম্প ও উইটকফ উভয়েই এই আলোচনাকে ‘সরাসরি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
ওমান সফরের আগে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে উইটকফ বলেন, ‘আমি মনে করি, আপনাদের (ইরান) কর্মসূচি ভেঙে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের অবস্থান (গ্রহণ) শুরু হয়েছে। আর এটিই আজ আমাদের অবস্থান। তবে এর মানে এই নয় যে, আমরা দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার অন্যান্য উপায় খুঁজে পাব না।’
‘আপনারা কোনোভাবেই আপনাদের পারমাণবিক সক্ষমতার অস্ত্রীকরণ করতে পারবেন না—এখানেই আমাদের রেড লাইন,’ বলেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞা শিথিল ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণই প্রধান বিষয়
ইরানের সংকটে থাকা অর্থনীতিকে স্বস্তি দিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রস্তাব দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, তবে ইরান কতটা ছাড় দিতে রাজি হবে—তা এখনও স্পষ্ট নয়।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ উপাদান মজুদ রাখতে পারে। তবে বর্তমানে তেহরানের ইউরেনিয়ামের মজুদ এমন পর্যায়ে আছে যে তারা চাইলে একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। এছাড়া তাদের কাছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ উপাদানও রয়েছে, যা অস্ত্র-গ্রেড মান থেকে প্রযুক্তিগতভাবে মাত্র কয়েক ধাপ দূরে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, নতুন আলোচনায় ইরান অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম মজুদ করতে চাইবে। এবং একটি বিষয় তারা কখনোই করবে না; তা হলো, তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করা।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মাস্কের দ্বারস্থ ইরান
এর ফলে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর তথাকথিত লিবিয়া সমাধানের প্রস্তাব ‘তুমি ভেতরে যাও, স্থাপনাগুলো উড়িয়ে দাও, আমেরিকার তত্ত্বাবধায়নে সমস্ত সরঞ্জাম ধ্বংস কর, তাদের তত্ত্বাবধায়নেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কর’ ধোপে টিকবে না।
লিবিয়ার প্রয়াত স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পরিণতির কথা তুলে ধরেছেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিসহ ইরানি প্রতিনিধিরা। ২০১১ সালের আরব বসন্তের গণজাগরণের সময় বিদ্রোহীদের হাতে নিজের বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন গাদ্দাফি। আর এটিকেই ইরানিরা সতর্কতা হিসেবে দেখেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসার ফল কী হতে পারে।
৪ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতির সমর্থনে কাজ করে যাব: ট্রাম্পকে ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ইস্যুতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে তিনি এই শুল্কারোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখতে অনুরোধ জানান। সেই অনুরোধে সাড়া দেওয়ায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ড. ইউনূস।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চীন ছাড়া অন্য সব দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার কিছুক্ষণ পরই নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এক পোস্ট দেন প্রধান উপদেষ্টা।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ মি. প্রেসিডেন্ট। আপনার প্রশাসনের বাণিজ্যনীতির সমর্থনে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন: চীন বাদে সব দেশের ওপর মার্কিন পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত
গতরাতে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘পাল্টা শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই সময়ে পাল্টা শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে এবং এটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘চীন বিশ্ববাজারের প্রতি শ্রদ্ধার যে ঘাটতি দেখিয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ ধার্য করছি। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, ‘আশা করি নিকট ভবিষ্যতে চীন ও অন্যান্য দেশ উপলব্ধি করতে পারবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার দিন আর থাকবে না বা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
ট্রাম্প লেখেন, ‘প্রকৃত অবস্থার ভিত্তিতে ৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ, অর্থ বিভাগ ও ইউএসটিআরসহ আমাদের বিভিন্ন প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দেশগুলো বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রা কারসাজি ও অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে সমঝোতা আলোচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।’
৬ দিন আগে
বাংলাদেশের পোশাক আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কারোপ ভুল সিদ্ধান্ত: পল ক্রুগম্যান
বাংলাদেশের পোশাক আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কারোপ ভুল সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান।
মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রুগম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানিতে শুল্ক বসানো ঠিক হয়নি। এই পদক্ষেপে মার্কিন নাগরিকদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।’
পল বলেন, ‘অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সরবরাহব্যবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশ, ভিয়েতনামের ওপর শুল্ক বসানো ঠিক হয়নি। আর কানাডা ও মেক্সিকোর মতো প্রতিবেশী দেশের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা একেবারেই অযৌক্তিক।’
উচ্চ শুল্কারোপ করে বাণিজ্য–ঘাটতি কমিয়ে আনা বেশ কঠিন। দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পারস্পরিক অনেক ধরনের বোঝাপড়া থাকে, এ কারণে শুল্কের প্রভাব অনেক সময় কমে যায়। এ অবস্থায় উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি।
অনেকটা তাচ্ছিল্য করেই পল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যই বন্ধ করে দিতে পারে। বাণিজ্য না হলে তো বাণিজ্য ঘাটতিও থাকবে না।’
পলের মতে, পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই যারা সবকিছু উৎপাদন করতে পারে। কিছু না কিছু পণ্য তাদের আমদানি করতে হয়। আবার যাদের হাতে কিছু উদ্বৃত্ত থাকে, তারা সেগুলো রপ্তানি করে। এভাবেই বিশ্বে একটি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
ফলে কোনো দেশ তাদের পণ্য রপ্তানি করছে মানেই ঢালাওভাবে তারা অন্যায্য বাণিজ্যনীতি অনুসরণ করছে— এমনটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে শত্রু-মিত্র, কাছের-দূরের সব দেশের ওপরই শুল্কারোপ করেছে তাতে এই বাস্তবতা সম্পর্কে তারা অবগত নন বলে মনে করেন নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ।
আরও পড়ুন: ইইউ'র পোশাক আমদানি কমেছে ৩.৬৩ শতাংশ, বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে ৩.৫৩ শতাংশ
তাছাড়া দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোন নীতিতে শুল্ক নির্ধারণ করেছেন তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পল। যে-সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য-ঘাটতি রয়েছে সেসব দেশের আমদানি দিয়ে ভাগ করে শুল্ক হার নির্ধারণ করা এবং তার অর্ধেক হারে সেই দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা—এমন কোনো পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি কোনো পাঠ্যপুস্তকেও পড়েননি বলে জানান। পল নীতিকে সম্পূর্ণ অবাস্তব বলে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল আকস্মিকভাবে ১০০ টির মতো দেশের ওপর বহুল আলোচিত পাল্টা শুল্কারোপ করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেন তিনি। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত। এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
৮ দিন আগে
এবার জরুরি খাদ্য সহায়তা বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র
এবার জরুরি খাদ্য সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে ঝুঁকিতে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য ‘মৃত্যুদণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।
জরুরি খাদ্য সহায়তা হিসেবে মূলত আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং আরও ১১টি দরিদ্র দেশে লাখ লাখ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) জরুরি কর্মসূচিতে অর্থায়ন করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত এসব দেশে দীর্ঘ সময় ধরে চলা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া লাখ লাখ মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবে বলে সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েডেট প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন।
খাদ্য সহায়তার বৃহত্তম সরবরাহকারী বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সোমবার (৭ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে নতুন কাটছাঁট প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
দুই মার্কিন কর্মকর্তা, জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা এবং এপির হাতে আসা নথিপত্র থেকে জানা যায়, অপ্রত্যাশিত এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট পরিচালিত সর্বশেষ কিছু মানবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে নেওয়া হয়েছে।
ডব্লিউএফপি এক্সের ওই পোস্টে বলেছে, ‘নতুন এই সিদ্ধান্তটি চরম ক্ষুধা ও অনাহারে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য মৃত্যুদণ্ডের সমান হতে পারে।’
সংস্থাটি বলেছে, জীবন রক্ষাকারী কর্মসূচির জন্য ‘অব্যাহত সহায়তার আহ্বান জানাতে’ তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং অতীতের অবদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দাতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে।
মার্কিন বৈদেশিক সহায়তার ব্যাপক কাটছাঁটের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেখানে জরুরি খাদ্য কর্মসূচি এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা কাটছাঁট করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তবে সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির শীর্ষ লেফটেন্যান্ট জেরেমি লিউইনের নির্দেশে 'যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সুবিধার জন্য' প্রকল্পগুলো বাতিল করা হচ্ছে। ইউএসএআইডি প্রোগ্রামগুলো বাদ দেওয়ার তত্ত্বাবধানের জন্যও নিযুক্ত ছিলেন এই জেরেমি লিউন।
সহায়তা বন্ধের ব্যাপক প্রভাব
মানবিক সহায়তাদানকারী গোষ্ঠীগুলোর মতে, ডব্লিউএফপি কর্মসূচির আকস্মিক সমাপ্তির সিদ্ধান্তটি হুমকির মুখে ফেলেছে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে। বৈশ্বিক বাস্তবতায় এসব জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই এ ধরনের খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দাতা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে মানবিক সংকট নিরসনের প্রচেষ্টাকে তাদের কৌশলগত স্বার্থে গণ অভিবাসন, সংঘাত ও চরমপন্থা দমন করে আসছে, যা সম্পদ করায়ত্ত করার জন্য হতে পারে।
ডব্লিউএফপি প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, এই কাটছাঁট 'বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।’
রুবিও গত মাসে কংগ্রেস ও আদালতকে জানিয়েছেন, ইউএসএআইডি চুক্তি কাটছাঁট করা শেষ হয়েছে। এর সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্রায় এক হাজার কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং আরও পাঁচ হাজারেরও বেশি কমূসূচি বাদ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডির বিরুদ্ধে অপচয় এবং উদারপন্থী উদ্দেশ্যকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।
ইউএসএআইডি এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে সমস্ত বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করার ফলে আল-হোল শিবিরে পরিষেবাগুলো দ্রুতই বন্ধ হয়ে যায়। ওই শিবিরটিতে হাজার হাজার অভিযুক্ত ইসলামিক স্টেট যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
এই কাটছাঁটের সিন্ধান্তের ফলে শিবিরে বিদ্রোহ বা বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে মার্কিন কর্মকর্তারা দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিষেবা চালু করেছিলেন।
এপির হাতে আসা স্টেট ডিপার্টমেন্টের নথিতে সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ইউএন পপুলেশন ফান্ড পরিচালিত দুটি নতুন বাতিল হওয়া চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— আল-হোল শিবিরে নারী ও শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য পরিষেবা সরবরাহ। শিবিরে অন্য কোনো পরিষেবা প্রভাবিত হয়েছে কিনা—তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থদাতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর খাদ্য সংস্থাটিকে অনুদানের ৯৮০ কোটি ডলারের মধ্যে ৪৫০ কোটি ডলার সরবরাহ করেছিল দেশটি।
আরও পড়ুন: চোখে সামনে যা পড়েছে, তা-ই হত্যা করেছি: ইসরায়েলি সেনাদের বিবরণ
৯ দিন আগে
বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত তালিকা অনুসারে, মার্কিন সরকার দাবি করেছে, বাংলাদেশ কার্যকরভাবে আমেরিকান পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। জবাবে, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে ৩৭ শতাংশ ‘ছাড়প্রাপ্ত পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপ করা হবে।
আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ট্রাম্প এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন। মার্কিন পণ্য রফতানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ যে ব্যাপক বাধা তৈরি করে রেখেছে, সেই ‘অন্যায় বাণিজ্য চর্চা’ প্রতিরোধেই ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিতে সব আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্কের একটি ভিত্তিরেখা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, যেসব দেশ—মার্কিন প্রশাসনের ভাষায়—মুদ্রার অপব্যবহার, সুরক্ষাবাদ কিংবা অন্যান্য অ-শুল্ক বাধা তৈরি করে রেখেছে, তাদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্যহারে উচ্চমাত্রায় শুল্ক আরোপ করা হবে।
আকস্মিক এই শুল্কারোপে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির ওপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত। এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত শুল্কারোপ, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল অমদানি বন্ধ
এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা কিছুটা কমে আসবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিল্পখাত সংশ্লিষ্টরা। একইসাথে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর ওপরও এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
ভারতীয় পণ্যে ২৬ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, দেশটিতে মার্কিন পণ্য রফতানিতে ৫২ শতাংশ বাধা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর পাকিস্তানের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন প্রশাসন। তাদের দাবি, পাকিস্তানি বাজারে মার্কিন পণ্যের জন্য ৫৮ শতাংশ বাণিজ্য বাধা রয়েছে।
গেল কয়েক দশক ধরে একপাক্ষিক এই বাণিজ্য সম্পর্ক চলে আসছে, যা অনেক আগেই সংশোধন করা উচিত ছিল বলে দাবি করেছে হোয়াইট হাউস। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এতে দেশগুলো থেকে পাল্টা পদক্ষেপ আসতে পারে এবং মার্কিন ব্যবসা ও পরিবারগুলোতে খরচ বেড়ে যেতে পারে।
১৪ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে শয়তান সংঘের সভায় হাতাহাতি, গ্রেপ্তার ৩
যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস অঙ্গরাজ্যে স্বঘোষিত শয়তানের ছোট একটি দলের নেতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) অঙ্গরাজ্যটির স্টেটহাউসে ‘ব্ল্যাক মাস’ আয়োজনের চেষ্টা করলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সেদিন স্টেটহাউসের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন কানসাস শহরের শয়তানের গ্রোটোর প্রায় ৩০ জন সদস্য। এখানে গ্রোটো বলতে সংঘ বোঝানো হয়েছে। এ সময়ে ভবনের ভেতরে খ্রীস্টানদের ঢুকতে দেওয়ার বিরুদ্ধেও তারা প্রতিবাদ করেন।
শয়তান সংঘের ব্ল্যাক মাস হচ্ছে এমন একটি অনুষ্ঠানের নাম, যা শয়তানের উপাসনার সময় অনুষ্ঠিত হয় এবং যা ক্যাথলিক মাসের একরকম প্যারোডি। গ্রোটোর সভাপতি মাইকেল স্টুয়ার্টের দাবি, ‘অঙ্গরাজ্যের আইনপ্রণয়ন ভবনে খ্রীস্টানদের ঢুকতে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে যেতে হলে যেসব অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে
এরইমধ্যে স্টেটহাউসের ভেতরে সাময়িকভাবে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর লওরা কেলি। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরে ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় মাইকেল স্টুয়ার্টের দল। শয়তান সংঘের লোকজন জড়ো হওয়ার পর স্থানীয় কয়েক খ্রীস্টান এসে সেখানে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখান।
শয়তানের চিত্রকল্প ও যিশু খ্রীস্টকে অস্বীকারসহ ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ার প্রতিবাদ করেন তারা। যিশু খ্রীস্টকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে বিবেচনা করেন খ্রীস্টানরা।
শয়তানের গ্রোটের লোকজনের জন্য জায়গা হলুদ টেপ দিয়ে চিহ্নিত করে রেখেছিল পুলিশ। শখানেক খ্রীস্টান এসে সেখানে জড়ো হন। এরপর দুটি পক্ষ পরস্পরের দিকে লক্ষ্য করে চিৎকার করতে থাকেন।
এ সময়ে খ্রীস্টানরা গান গেয়ে শয়তানের দলের লোকজনকে যিশু খ্রীস্টের পথে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। শয়তান সংঘের লোকজনের জন্য বরাদ্দ জায়গার বিপরীত পাশে আরও কয়েকশত খ্রীস্টানকে জড়ো হতে দেখা গেছে।
বহুদিন থেকে গ্রোটোর যেকোনো কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন রোমান ক্যাথলিক খ্রীস্টানরা। পরে চলতি মাসের শুরুতে স্টেটহাউসের মধ্যে তাদের কর্মসূচি নিষিদ্ধ করেন গভর্নর কেলি।
শয়তানের গ্রোটো নামের গোষ্ঠীটিকে ক্যাথলিকবিদ্বেষী গোঁড়ামি বলে আখ্যায়িত করেছেন অঙ্গরাজ্যটির ক্যাথলিক বিশপ। তারা ক্যাথলিক মাস নিয়ে মশকরা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কানসাস সিটির কিউর গির্জার যাজক জেরেমিয়া হিকস বলেন, ‘বাইবেলে বলা হয়েছে, শয়তান দুনিয়াতে এসেছে চুরি, হত্যা ও ধ্বংস করতে। কাজেই যখন একটি অঙ্গরাজ্যকে আমরা শয়তানের জন্য উৎসর্গ করে দিই, তখন আমরা সেটিকে ধ্বংসের জন্য উৎসর্গ করছি।’
গ্রোটো সদস্যরা বলেন, ‘তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিশ্বাসের মানুষ আছেন। কিছু নাস্তিকও আছেন তাদের দলে।’
মাইকেল স্টুয়ার্টের বন্ধু অ্যামি ডোরসি বলেন, ‘বাক ও ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন দিতেই তিনি শয়তানের গ্রোটোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। কারণ খ্রীস্টান গোষ্ঠীগুলোকে স্টেটহাউসে প্রার্থনার অনুমোদন দেওয়া হলেও তাদের দেওয়া হচ্ছে না।’
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে স্টুয়ার্ট বলেন, ‘শুক্রবার ব্ল্যাক মাসের সময় নির্ধারণ করা ছিল তাদের। কারণ তখন কানসাস আইনসভার অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। যদিও বসন্তকালীন বিরতির জন্য বৃহস্পতিবার আইনসভার অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ৫ অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে হাম, দুজনের মৃত্যু
আগামী বছর আবারও গোষ্ঠীটি তাদের কার্যক্রম নিয়ে ফিরে আসবে বলে জানান তিনি।
কেএসএনটি-টিভির ভিডিওতে দেখা গেছে, ভবনটির প্রথম তলায় নিজের দলকে পরিচালনার চেষ্টা করছেন স্টুয়ার্ট। তখন একজন তরুণ তার হাত থেকে বক্তৃতার কাগজ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে স্টুয়ার্ট তাকে ঘুষি মারেন। এরপর পুলিশ তাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়।
তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় ‘স্বাগত, শয়তান’ বলে চিৎকার করছিলেন তিনি। স্টুয়ার্টের স্ত্রী মায়েনাদ বি বলেন, ‘তিনি কেবল সংবিধানের প্রথম সংশোধনের অধিকার চর্চা করছিলেন।’
১৭ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের ৫ অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে হাম, দুজনের মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে হামের প্রাদুর্ভাব, দেশটির অন্তত ৫টি অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণ। এরইমধ্যে টেক্সাসে আক্রন্তের হার সর্বোচ্চ, প্রায় ৪০০ জনের শরীরে হাম শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন দুজন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ মার্চ) এক বিবৃতির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। ২০২৪ সালে বছরজুড়ে যে সংখ্যক আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে, সেই তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিনমাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছেন তারা।
টেক্সাস ছাড়াও নিউ মেক্সিকো, কানসাস, ওহাইয়ো ও ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্তের হার বাড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত হামে সংক্রমিত হয়ে দুজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে সিডিসি। মৃত দুই ব্যক্তি হামের টিকা গ্রহণ করা ছিলেন না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। টেক্সাসে হামে আক্রান্ত হয়ে একটি শিশু এবং নিউ মেক্সিকোতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে সিডিসি।
যুক্তরাষ্ট্রে কিছু অঙ্গরাজ্যে বিগত কয়েক বছরে টিকা নেওয়ার হার কমে যাওয়ায় আগেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করেছিলেন। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কাই এখন বাস্তব প্রমাণিত হয়েছে।
হাম ভাইরাসজনিত একটি সংক্রামক রোগ। মূলত বাতাসের মাধ্যমে এটি ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির নিশ্বাস, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা সংক্রমিত হয়ে থাকেন। সিডিসির তথ্যমতে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনেরই এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
টিকার সাফল্যের কারণে ২০০০ সালে হাম নির্মূল হওয়ার ঘোষণা দিলেও আবারও যুক্তরাষ্ট্রে জেঁকে বসেছে হাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, টেক্সাসের সংক্রমণের সঙ্গে নিউ মেক্সিকোর সংক্রমণের যোগসূত্র রয়েছে।
টেক্সাসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, দুই মাস আগে অঙ্গরাজ্যটিতে সংক্রমণ শুরু হয়। শুক্রবার পর্যন্ত ৪০০ জনের শরীরে হাম শনাক্ত হয়েছে, এরমধ্যে ৪১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিউ মেক্সিকোতে এ পর্যন্ত ৪৪ জন সংক্রমিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
কানসাস অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এলাকাটিতে ২৩ জনের শরীরে হাম শনাক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, ওকলাহোমা ও ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যে যথাক্রমে ৯ ও ১০ জন সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: হাম নির্মূলের ঘোষণা দেওয়ার পরেও যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে সংক্রমণ
এই পাঁচটি অঙ্গরাজ্য ছাড়াও আলাস্কা, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, কেন্টাকি, ম্যারিল্যান্ড, মিশিগান, মিনেসোটা, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্কসহ আরও বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যে সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জানায়, দেশটিতে সাধারণত বাইরে থেকে আসা কোনো সংক্রমিত ব্যক্তির মাধ্যম হাম ছড়িয়ে থাকে। করোনা মহামারির পরে ধর্মীয় বিশ্বাস বা ব্যক্তিগত বিশ্বাসের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের টিকা দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে বলে মত দেন তারা।
হামের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎকরা সাধারণত সংক্রমিতদের উপসর্গগুলোর জটিলতা কিছুটা কমিয়ে তাদের স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন। তবে সংক্রমণ এড়াতে তারা টিকা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
হাম থেকে বাঁচতে ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশুদের হাম, মাম্পস ও রুবেলা ভাইরাসের জন্য এমএমআর টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এরপর ৪ থেকে ৬ বছর বয়সের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার জন্য বলা হয়।
গ্লোবাল ভাইরাস নেটওয়ার্কের সদস্য স্কট উইভার জানান, সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার কথা বিবেচনা করা উচিত। বিশেষত সংক্রমিত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য কিংবা যাদের শ্বাসনালী আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে তাদের বুস্টার ডোজ দেওয়া উচিত বলে মত দেন তিনি।
১৯ দিন আগে
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ‘বিশেষ উদ্বেগজনক’ দেশ ভারত, র’য়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রকে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ
ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগে ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগজনক’ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন। একই সঙ্গে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) ও সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের ওপর যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর এসব সুপারিশের কথা সামনে এসেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিদেশের মাটিতে ভারতের শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যাকাণ্ডের পেছনে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা র’য়ের হাত রয়েছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে এই পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।
ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
ভারতের পাশাপাশি ভিয়েতনামকেও এই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেশটিতে ধর্মীয় ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বাড়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৪৩ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র
অবশ্য এই সুপারিশের বাস্তবায়ন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তবে কমিশন যে দুটি দেশের বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্রনীতিতে দেশ দুটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
চীন বিষয়ে যৌথ উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে ভারত ও ভিয়েতনাম। তাই এই পরামর্শের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন যুক্তরাষ্ট্রের একটি দ্বিদলীয় সরকারি উপদেষ্টা সংস্থা। বৈদেশিক ধর্মীয় স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণ করে নানা নীতিগত সুপারিশ দিয়ে থাকে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারতকে পাল্টা শক্তি হিসেবে গণ্য করে ওয়াশিংটন। তাই দেশটির মানবাধিকার বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেয় না যুক্তরাষ্ট্র।
কমিশনের সুপারিশ বাধ্যতামূলক না হওয়ায় র’কে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সঙ্গে আমার গভীর যোগসূত্র আছে: মোদি
২০২৩ সালে থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কার্যক্রমে ভারতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ওয়াশিংটন-দিল্লি সম্পর্কে চিড় ধরে।
যুক্তরাষ্ট্রে এক শিখ নেতাকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টায় ভারতের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের জড়িত থাকার অভিযোগ আনে ওয়াশিংটন, যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে ভারত। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি মনে করে ভারত।
মার্কিন ওই কমিশনের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত বছরজুড়ে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এই সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বৈষম্য বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠীসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও অপতথ্য ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কমিশন।
সবশেষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে প্রচারকালেও মোদি মুসলিমদের ভারতে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে অ্যাখ্যা দেন। শুধু তাই নয়, ‘মুসলিমরা বেশি সন্তান জন্ম দেয়’—এমন মন্তব্যও করেন গত প্রায় ১১ বছর ধরে দেশটির প্রধানমন্ত্রীত্ব সামলানো এই নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা-বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিবেদনে ভারতে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের তথ্য উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: ২৭ বছর পর দিল্লির মসনদে বসতে চলেছে বিজেপি
তবে এসব প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে মোদি বলেন, তার সরকার দেশে বিদ্যুতায়ন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভতুর্কি দেওয়াসহ যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তাতে সব সম্প্রদায়ের মানুষই উপকৃত হয়েছেন।
ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ করে দেশটিকে ‘বিশেষ উদ্বেগজনক’ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে এবং র ও সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে সুপারিশ করেছে মার্কিন ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন।
ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্বে ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল, মুসলিমদের সম্পদ ধ্বংসের মতো মানবাধিকার-বিরুদ্ধ কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে এই সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান মানবাধিকারকর্মীরা।
এই সুপারিশের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় দূতাবাস।
অপরদিকে, সম্প্রতি একটি ডিক্রি জারি করে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থের হিসাব চেয়েছে ভিয়েতনাম প্রশাসন। একে ধর্মীয় স্বাধীনতার ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করেছে মার্কিন ওই কমিশন।
তাছাড়া ধর্মীয় কার্যক্রম বা ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করার দায়ে প্রায় ৮০ জন বন্দির তথ্য তুলে ধরেছে কমিশন, ভিয়েতনাম সরকার যাদের সাজা দিয়েছে। এসব কারণে ভিয়েতনামকেও ‘বিশেষ উদ্বেগজনক’ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
ভিয়েতনাম দূতাবাসও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
২১ দিন আগে