আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে স্কুল-কলেজের ছুটি। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের ইউএনবিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির এক যৌথ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’
বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর এই ছুটি কয়েকদফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছিল।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি
২৪ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শতভাগ শিক্ষকদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক খোলার উপযুক্ত রাখতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে আঞ্চলিক পরিচালকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে হবে। ওয়ার্কশিট বিতরণ শতভাগ নিশ্চিতকরণ ও যাচাই করতে হবে। শিখন ঘাটতির অবস্থা ও ফিডব্যাক নিতে হবে। বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষকদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। হোম ভিজিট যাচাই করা। শিক্ষার্থী প্রোফাইল শতভাগ হয়েছে কিনা তা দেখা। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় নির্ধারণ করা। স্যাম্পল হিসেবে শিক্ষার্থীর বাড়ি যাওয়া এবং শিক্ষার্থী যোগাযোগ রেজিস্ট্রার যাচাই করা।
এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক ঠিক করার জন্য দ্রুত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের আদেশ যথাযথ পালন করতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্র বলছে,শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আওতায় এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী থেকে নেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। সেজন্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসা পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। শেষ হবে স্কুলে ছুটি আরেক দফা বাড়ছে।
সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সহকারী উপজেলা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত বিদ্যালয় পরিদর্শন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোন কর্মকর্তারা যদি নির্দিষ্ট এলাকার সমস্ত বিদ্যালয় পরিদর্শন না করেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও কলেজ) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন,‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং বিদ্যালয় খোলার সার্বিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক পরিচালকদের নির্দেশ দিয়েছি। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি খোলা যাবে। তাছাড়া আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাই রয়েছে। নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া এবং তা নেয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।’
আরও পড়ুন: শিগগিরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী