তিনি বলেন, অভিযোজন সক্ষমতাবৃদ্ধিকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের জলবায়ু সহিষ্ণু জীবিকায়ন হবে। তাদের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। বছর জুড়ে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবারহ নিশ্চিত করা যাবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সমালোচনাকারী ইউনুস ও খালেদা এখন কোথায়, প্রশ্ন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর
রবিবার ঢাকায় শিশু একাডেমি মিলনায়তন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় বাস্তবায়িত ‘উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর, বিশেষত নারীদের, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবনাক্ততা মোকাবিলায় অভিযোজন সক্ষমতাবৃদ্ধিকরণ’প্রকল্পের কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: টেক্সটাইলে বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে কঠিন প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে পারে: প্রতিমন্ত্রী
এ সময় পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আর স্বপ্ন নয়। মানুষ যেয়ে নিজের চোখে দেখে আসছে পদ্মা সেতু। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষের যাতায়াত, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর নির্মাণের ফলে যেভাবে উত্তর অঞ্চল থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে। পদ্মা সেতুও দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।’
আরও পড়ুন: সুষম বিকাশের জন্য শিশুর জীবনের প্রথম আট বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর একটি বাংলাদেশ। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কোন দায় বাংলাদেশের নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে স্বাদু পানির এলাকাসমূহে লবনাক্ত পানির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। লবণাক্ত পানির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। নারীরা কর্মসংস্থান হারাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নির্মাণ সকল ষড়যন্ত্রের জবাব: প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর জলবায়ু সহনশীল জীবিকা এবং পানীয় জলের সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড এবং ইউএনডিপির সহায়তায় ‘উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর, বিশেষত নারীদের, জলবায়ু পরিবর্তণ জনিত লবনাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। উপকূলীয় দরিদ্র মানুষের জলবায়ুর অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উক্ত প্রকল্প নিশ্চিতভাবে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
খুলনার জেলার জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশে ৫০০ ত্রাণ গুদাম হবে: প্রতিমন্ত্রী
এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনডিপির প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও এনজিও প্রতিনিধিরা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, উক্ত প্রকল্পটি খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৫টি জেলায় ৩৯ টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যার সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৭ লাখ ১৯ হাজার ২২৯ জন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৩ হাজার নারীকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাঁকড়া চাষ, কাঁকড়া নার্সারী, কাঁকড়া ও মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ, জলচাষ, গৃহস্থালী পর্যায়ে সবজি, তিল চাষ, লবণাক্ততা সহিষ্ণু নার্সারি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। নারী উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ ও বিপণন ব্যবস্থায় সহায়তা করা হবে।
এই প্রকল্প থেকে ১০১টি আবহাওয়া পূর্ব সতর্কীকরণ নারীদল গঠন, ১৩৩০৮টি খানা ভিত্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থপনা, ২১৮ টি কমিউনিটি, ১৯টি প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থপনা এবং ৪১ টি পুকুরভিত্তিক পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে।