সাত বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জে পরকীয়ার জেরে মফিজুর রহমান নামে এক কবিরাজকে ১০ টুকরো করে হত্যার দায়ে মোসা. মাকসুদা আক্তার লাকী এবং তার দেবর সালাউদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসরাত জাহান মুন্নী এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আসামিরা বর্তমানে পলাতক।
আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানার পাশাপাশি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের বেউতা গণকবরস্থানের সামনে একটি ডোবা থেকে হাত, পা ও মাথাবিহীন অবস্থায় কোমর থেকে গলা পর্যন্ত একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন (২ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম মেহেদী হাসান মামলা দায়ের করেন। মরদেহটি মফিজুর রহমানের বলে শনাক্ত হয়।
মফিজুর রহমান নিখোঁজ হওয়ার পর তার ভাই একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে লাকী ও সালাউদ্দিনের নাম উঠে আসে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করলে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রবিউল ইসলাম জানান, নিহত মফিজুর রহমান একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিলেন। এছাড়া সার ও কীটনাশকের দোকানের পাশাপাশি কবিরাজি করতেন। আসামি লাকীর স্বামী বিদেশে থাকেন এবং তাদের একটি ছেলে রয়েছে। অধিক সন্তানের আশায় তিনি মফিজুরের কাছে যান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে তারা হত্যার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন: রাতভর পুলিশি অভিযানের পর সাবেক নাসিক মেয়র আইভী গ্রেপ্তার
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর লাকীর বাসায় দাওয়াত দিয়ে মফিজুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে গরুর মাংস ও চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে অজ্ঞান করা হয়। পরে তার দেহ ১০ টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা জেলা (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার ইন্সপেক্টর নাজমুল হাসান দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
বিচার চলাকালে আদালত ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।