২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনায় নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) এক বিবৃতির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বাতিল করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবি জানায়, মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার এই ব্যবস্থা সৎ ও বৈধ আয়ের ব্যক্তি করদাতাকে নিরুৎসাহিত করার সংস্কৃতি গড়ে তুলবে। ঘোষিত অর্থ ও সম্পদের ব্যাপারে কোনো কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন করার সুযোগ না রাখা দেশে দুর্নীতিবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলবে বলে আশঙ্কা করছে টিআইবি।
একইসঙ্গে, ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনি ইশতেহারে দেওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার অঙ্গীকারকে প্রহসনে পরিণত করা হবে বলে জানায় এ সংস্থা।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “‘ডেটা ভেরিফিকেশন সিস্টেম বা ডিভিএস’ চালু করার ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ ঘোষণায় আইনি জটিলতা এবং করদাতাদের অজ্ঞতার দোহাই দিয়ে যেভাবে ‘অপ্রদর্শিত অর্থে’ ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা জমি কেনা বৈধ করার ঢালাও সুযোগ দেওয়া হলো- তা সত্যিই হতাশার।”
কালো টাকা সাদা করার সুযোগের মাধ্যমে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনে সরকারিভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিপরীতে সৎ করদাতাদের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ করের বিধান বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে ড. জামান বলেন, ‘বিষয়টি একজন সুনাগরিকের প্রতি বৈষম্যমূলক, একইসঙ্গে তা সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। এ প্রক্রিয়ায় নৈতিক আপস করে প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায়ের স্বপ্ন স্বল্প কিংবা দীর্ঘমেয়াদে কখনোই বাস্তবায়িত হবে না।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘শুভবুদ্ধি, দূরদৃষ্টি, সংবিধান ও আইনের শাসনের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে সরকার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহার করে নেবে- এমনটাই আশা।’
এছাড়াও দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে কালো টাকার মালিকদের সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের মাধ্যমে কার্যকর জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।