টিআইবি
দুর্নীতি মামলার আসামিকে দুদকে পদায়ন গ্রহণযোগ্য নয়: টিআইবি
দুর্নীতি মামলার আসামি আমিন আল পারভেজকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক হিসেবে পদায়নকে পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য বলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সরকারের ভেতর থেকেই দুর্নীতির সুরক্ষা ও দুদককে অকার্যকর করার চেষ্টা করা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্ন তোলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকারি এই উদ্যোগের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি।
পরবর্তীতে অভিযুক্ত আমিন আল পারভেজের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। দুদকের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
গণমাধ্যম সূত্র উল্লেখ করে টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২০ সালে কক্সবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ভবন নির্মাণ ও ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পে ২২ কোটি ২১ লাখ ২৮ হাজার ৮৩৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আমিন আল পারভেজের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।মামলার সময় তিনি তখন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির খবর যেন ধামাচাপা দেওয়া না হয়: দুদক চেয়ারম্যান
দুদকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমিন আল পারভেজ প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজে এবং অন্যদের অবৈধভাবে লাভবান করেছেন।
দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত থাকা সত্ত্বেও দুদকের পরিচালক পদে তাকে নিয়োগ দেওয়ার সরকারি পদক্ষেপকে পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।
কোন মানদন্ডে সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন,‘ যেখানে দুদক সংস্কার কমিশন সুস্পষ্ট সুপারিশ করেছে যে, দুদকের অভ্যন্তরে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে চাকুরী থেকে বহিষ্কার করে ফৌজদারি বিচারে সোপর্দ করতে হবে। সেখানে এই পদায়ন কেন?‘
আরও পড়ুন: টিআইবি দুর্নীতি সূচকে ২ ধাপ অবনতি বাংলাদেশের
তিনি বলেন, সরকারের এই পদক্ষেপ নেতিবাচক বার্তা দেয়। এমনকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকারের অবস্থানকে দূর্বল করে বলে মত দেন তিনি। সরকারের এই উদ্যোগ দুদককে শক্তিশালী করার বদলে অকার্যকর করতে পারে বলে নিজের ধারণা প্রকাশ করেণ তিনি।
এছাড়াও এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতির সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রশাসনেই ষড়যন্ত্র বিদ্যমান—এই প্রশ্নও অমূলক নয় বলে অভিমত দেন তিনি।
৫৩ দিন আগে
টিআইবি দুর্নীতি সূচকে ২ ধাপ অবনতি বাংলাদেশের
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বৈশ্বিক দুর্নীতির সূচকে দুই ধাপ অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের। মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গো ও ইরানের সঙ্গে যৌথভাবে ১৫১তম স্থানে আছে ঢাকা। গেলো তেরো বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে কম স্কোর অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
গেল বছরে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৯তম। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) বৈশ্বিক ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২৪ প্রকাশ উপলক্ষ্যে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সারা দেশে সহিংস ভাঙচুর: সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান টিআইবির
দুর্নীতির ধারণা শূন্য থেকে ১০০ টিআই সূচক দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যে দেশটির স্কোর থাকবে শূন্য, সেটি বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বিবেচিত হবে। আর যারা ১০০-তে থাকবে, তাদেরকে বলা হবে সবচেয়ে বেশি সুশাসিত।
২০২৪ সালের দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ এর মধ্যে ২৩। আগের বছরের চেয়ে যা এক পয়েন্ট কম, আর গেল তেরো বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সিপিআই অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের স্কোর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পরেই। আফগানিস্তানের স্কোর ১৭।
২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিপিআইয়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৫ থেকে ২৮। কিন্তু ২০২৩ সালে এটি কমে গিয়ে চব্বিশে দাঁড়ায়।
২০১২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সিপিআই ট্রেন্ড বিশ্লেষণ অনুসারে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সিপিআই স্কোর ২৩, গেলে তেরো বছরের গড় স্কোরের চেয়ে যা তিন পয়েন্ট কম।
আরও পড়ুন: বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ দেওয়ায় টিআইবির উদ্বেগ
গেল বছরের তুলনায় এ বছর ৫৬টি দেশে সিপিআই স্কোর বেড়েছে। ৯৩টি দেশের স্কোর কমেছে, আর ৩১টি দেশের অবস্থা অপরিবর্তিত। স্কোরের মাত্রায় কোনো দেশই নিখুঁত স্কোর অর্জন করতে পারেনি। এ বছরে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশের স্কোর পঞ্চাশের নিচে।
৯০ স্কোর নিয়ে চলতি বছরে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা পেয়েছে ডেনমার্ক। এরপর ৮৮ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ফিনল্যান্ড, আর ৮৪টি নিয়ে তৃতীয় সিঙ্গাপুর।
২০২৪ সালে দুর্নীতির শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ সুদান, তাদের স্কোর ৮। সোমালিয়া এরপরেই, স্কোর ৯। আর ১০ স্কোর নিয়ে দুর্নীতিতে তৃতীয় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলা।
এদিকে দুর্নীতির ধারণা সূচকে (সিপিআই) পাকিস্তানের অবনতি হয়েছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে ২০২৩ সালে দেশটির অবস্থান ছিল ১৩৩তম, চলতি বছরে সেটা ১৩৫তম।
আরও পড়ুন: সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ ভিন্নমত-গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে: টিআইবি
৬১ দিন আগে
সারা দেশে সহিংস ভাঙচুর: সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান টিআইবির
ধানমন্ডি ৩২ ও প্রায় সারা দেশে গত দুইদিন সংঘটিত অস্বাভাবিক ভাঙচুর ও সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ ও তা প্রতিরোধে সরকারের বিবৃতিনির্ভর নির্লিপ্ততায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদশে (টিআইবি)।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় টিআইবি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিকে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে শুধু বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব সম্পন্ন করা নয়, সরকারের কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য বলেও মনে করে সংগঠনটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্রের সীমাহীন লালসা-তাড়িত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবচেয়ে বেশি অপূরণীয় ক্ষতি করেছে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। বহুমাত্রিক অধিকার হরণের শিকার আপামর দেশবাসীর ক্ষোভের মাত্রা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে পলাতক শেখ হাসিনা ও তার দেশি-বিদেশি সহযোগীদের নির্লজ্জ ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণার প্রেক্ষিতে।
আরও পড়ুন: বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ দেওয়ায় টিআইবির উদ্বেগ
তাই বলে আইনসিদ্ধ প্রতিক্রিয়ার পথ অনুসরণ না করে দেশব্যাপী যে প্রতিশোধপ্রবণ ভাঙচুর ও সহিংসতা চলেছে, তা কোনোভাবেই প্রহণযোগ্য হতে পারে না, এটি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ সর্ম্পকে দেশ-বিদেশে ইতিবাচক কোনো বার্তা দিবে না।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আগে থেকে সহিংস কর্মসূচির ঘোষণা থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও তার সঙ্গে সহায়ক হিসেবে দায়িত্বপালনরত সেনাবাহিনী, তথা সরকার কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আশঙ্কাজনকভাবে নির্লিপ্ততার পরিচয় দিয়েছে। পরবর্তিতে ঘটনাটি ‘অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত’ এমন বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টাও লক্ষণীয়।’
তিনি বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদের দীর্ঘ ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত বিশাল জঞ্জাল অপসারণ করে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছা হয়তো বিতর্কের ঊর্ধ্বে, তবে তার প্রয়োগে সুচিন্তিত ঝুঁকি নিরসন কৌশলের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা সক্রিয়, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর কারণে এই প্রশ্ন যৌক্তিকভাবে উত্থাপিত হতে পারে। তাই শুধু দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যেকোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবিলায় সরকারের দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এমনটি অব্যাহত থাকলে নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত ‘নতুন বাংলাদেশের’ অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে। একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন এবং বিশেষ করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘মনে রাখা দরকার, শেখ হাসিনাসহ কর্তত্ববাদের সকল দোসরদের সুনির্দিষ্ট অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা ‘নতুন বাংলাদেশর’ স্বপ্নপূরণের সর্বোচ্চ প্রাধান্যপ্রাপ্ত করণীয়। তবে, এ জন্য প্রতিশোধপ্রবণ ও আত্মঘাতী মব-জাস্টিস নয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের পথ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।’
একই সঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারীদের মামলা দিয়ে হয়রানির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে সকলের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্র ও সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন সহনশীলতার পরিচয় দেবে— এমন প্রত্যাশাও করে টিআইবি।
আরও পড়ুন: সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ ভিন্নমত-গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে: টিআইবি
৬৪ দিন আগে
বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ দেওয়ায় টিআইবির উদ্বেগ
২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দটি রাখা ও বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা নিয়ে সরকার যে বিবৃতি দিয়েছে, তা সময়োপযোগী হলেও যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শুধু তা-ই নয়, পাঠ্যবইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দিয়ে এনসিটিবি নিজেকে পতিত কর্তৃত্ববাদের দোসর ও পুনর্বাসনকেন্দ্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করে সংগঠনটি।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে টিআইবি।
বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে টিআইবি বলেছে, জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক সমালোচনাকে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীকে বলতে চেয়েছিল— বাংলাদেশে আদিবাসী নেই। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বীকার করতে চায়নি যে, আদিবাসী পরিচয়ের মানদণ্ড কোনো জনগোষ্ঠী কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে কতকাল ধরে বসবাস করছেন— তার ওপর নির্ভর করে না। তারা মানতে চায়নি যে, আদিবাসী হচ্ছেন মূলধারার সংখ্যাগরিষ্ঠের বাইরে এমন জনগোষ্ঠী, যারা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং প্রথাগত ও প্রাকৃতিক পরিবেশ-নির্ভর জীবনাচরণের ধারা বহাল রেখে নিজেদের আদিবাসী হিসেবে পরিচিত থাকতে চায়।
দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনটি মনে করে, আদিবাসী পরিচয়ের এই ব্যাখ্যা যে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত, তা না জানা এনসিটিবির জন্য লজ্জাজনক। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে কোনোপ্রকার বিচার-বিবেচনা না করেই এক পক্ষের আবদারের দোসর হওয়া পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিফলন ছাড়া আর কিছুই না।
একইসঙ্গে তা নজিরবিহীন রক্তপাত ও প্রাণহানির বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে শুধু সাংঘর্ষিকই নয়, প্রতারণাও বটে।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত গতকালের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অবস্থান স্পষ্টভাবে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে যে বাংলাদেশে সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ এবং ধর্মান্ধতার কোনো স্থান নেই। যারা ঐক্য, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলার বিনষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের এ বার্তাকে সময়োপযোগী হিসেবে স্বাগত জানাই।’
‘তবে উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, এতে দৃশ্যত সচেতনভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পরিচয় হিসেবে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি। যা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত প্রধান উপদেষ্টার গত ২৫ আগস্টের ভাষণে আদিবাসী পরিচয়বিষয়ক শব্দচয়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যদি এটি সচেতনভাবেই ঘটে থাকে, তাহলে কি এর মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী এজেন্ডা ও বয়ানের প্রতিফলন ঘটেছে বলে ধরে নিতে হবে না?’
আদিবাসী পরিচয়ের বস্তুনিষ্ঠ ব্যখ্যা ও এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চর্চার অনুসরণে অবস্থান নির্ধারণের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আদিবাসী পরিচয় ব্যবহারের বিরোধী অন্য সব অংশীজনদের প্রতিও আমাদের একই আহ্বান।’
‘বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন শুধু ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের মাধ্যমে সম্ভব নয়, কর্তৃত্ববাদ চেতনা ও এজেন্ডা এবং তার বলপূর্বক চাপিয়ে দেয়ার চর্চার আমূল পরিবর্তন অপরিহার্য।’
৮৬ দিন আগে
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ ভিন্নমত-গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে: টিআইবি
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর অনেক ধারা নাগরিকদের বাক, ভিন্নমত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সংগঠনের অধিকার খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ অধ্যাদেশে অনেকাংশে আগের কালো আইনসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক বৈশিষ্ট্য রয়ে গেছে।
টিআইবি বলছে, সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে যথাযথ পর্যালোচনার সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি করে এ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘অধ্যাদেশটি পর্যালোচনা করে আমরা দেখছি, এতে অনেকাংশে পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের এজেন্ডা ও ভাষ্যেরই প্রতিফলন ঘটেছে। একাধিক ধারায় পূর্বের ডিএসএ বা সিএসএ-এর পুনরাবৃত্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের পতন ভারতের জন্য বড় কূটনৈতিক ধাক্কা: টিআইবি
তিনি বলেন, এ অধ্যাদেশ জনগণের বাক, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্ত গণমাধ্যম এবং সংগঠনের অধিকারকে খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। নতুন অধ্যাদেশটি দেশবাসীর ডিজিটাল অধিকার নিশ্চিতে সহায়ক হবে বলা হলেও বাস্তবে এতে আমরা অনেকটাই আগের কালো আইনসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকতে দেখছি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অধ্যাদেশে অনেক জটিল ও অস্পষ্ট শব্দ, শব্দগুচ্ছ ও ধারণার ব্যবহার করে এর অপব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত করে একটি জগাখিচুড়ি পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। অধ্যাদেশটির খসড়া প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়নি এবং যথাযথ পর্যালোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে তড়িঘড়ি করেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী চেতনায় গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে এমন প্রক্রিয়ায় এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক অধ্যাদেশ অনুমোদন পাওয়া বিব্রতকর।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অধ্যাদেশ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য, যদিও ধর্মীয় অনুভূতির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। তদুপরি, ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত যেমন অগ্রহণযোগ্য, একইভাবে সকলের সমঅধিকার, অসাম্প্রদায়িক এবং বৈষম্যবিরোধী মূল্যবোধের উপর আঘাতও একই মাত্রায় অগ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। এ ধরনের ধারা যদি সংযুক্ত করতেই হয়, তাহলে ধর্মীয় মূল্যবোধে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না। সকল মানুষের সমান অধিকার, অসাম্প্রদায়িকতা এবং সার্বিকভাবে বৈষম্যহীন মূল্যবোধের প্রতি আঘাত আনে এমন মন্তব্যও সমানভাবে অগ্রহণযোগ্য হবে, এমন ধারা সন্নিবেশ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, অধ্যাদেশটি বর্তমান অবস্থায় জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে না। আশা করি, অধ্যাদেশটি প্রণয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে অগ্রসর হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে ঢেলে সাজানো হবে, যাতে সাংবিধানিক অঙ্গীকার এবং সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাসহ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেনশনসমূহ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি সুরক্ষিত হয়।’
টিআইবি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ পর্যালোচনা করেছে এবং সংস্থাটির পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে যে, এই অধ্যাদেশের কাঠামো এবং বিষয়বস্তু আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অধ্যাদেশটি সাইবার সুরক্ষা, সাইবার অপরাধ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় একত্রিত করার চেষ্টা করলেও, এর অস্পষ্ট শব্দাবলী ও জটিল ভাষা সাধারণ জনগণ এবং বিশেষজ্ঞদের জন্য বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠেছে। আবার, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’, ‘ব্লকচেইন’ এবং ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটিং’ এর মতো প্রযুক্তিগত শব্দগুলোর সঠিক সংজ্ঞা না থাকার কারণে আইনের প্রয়োগে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
টিআইবি মনে করে, অধ্যাদেশে সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক ও পুলিশকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা পূর্বের সাইবার নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ধারা ২-এ ব্যবহৃত ‘কম্পিউটার’, ‘উপাত্ত ভাণ্ডার’ এবং ‘কম্পিউটার সিস্টেম’-এর সংজ্ঞাগুলো অতিরিক্ত বিস্তৃত এবং প্রযুক্তিগত বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, যা আইনের প্রয়োগে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, অধ্যাদেশের শিরোনাম এবং কাঠামোও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। শিরোনামে সাইবার সুরক্ষা, সাইবার অপরাধ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সব কিছু একত্রিত করা হলেও, এতে কিছু অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। ধারা ৮-এর উপ-ধারা (২)-এ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব, রাজনৈতিক অপব্যবহার বা নাগরিকদের ইন্টারনেট অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে। ধারা ১৬ ও ১৭-এ সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞদের সনদপ্রাপ্ত মনিটরিং প্রক্রিয়া এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাঙার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট বিধান থাকা উচিত। ধারা ২৫-এ সাইবার বুলিং, অপমান, হয়রানি বা ব্ল্যাকমেইলের বিষয়টি খুবই বিস্তৃত এবং বিভ্রান্তিকরভাবে আনা হয়েছে, যা যুক্তিসঙ্গত সমালোচনাকেও ‘অপমান’ বা ‘হয়রানি’ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, ফলে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে। এ কারণে, এই ধারাটি সংশোধন করে সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার আইন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এরশাদুল করিম টিআইবির পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেন। উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের। সংস্থাটির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।
আরও পড়ুন: হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে সহজতর করেছে বিচার বিভাগ: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
১০২ দিন আগে
বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের পতন ভারতের জন্য বড় কূটনৈতিক ধাক্কা: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, 'নতুন বাংলাদেশ' সম্পর্কে ভারতের নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। স্বৈরাচারী সরকারের পতন ইতিহাসে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগত পরাজয় বলেও উল্লেখ করে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভারত তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগত পরাজয় মেনে নিতে পারবে না। এটা স্বীকার করার সাহস তাদের নেই।'
স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর নতুন বাংলাদেশের প্রথম ১০০ দিন নিয়ে টিআইবির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংগঠনটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা আশা করছি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে।’
আরও পড়ুন: হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে সহজতর করেছে বিচার বিভাগ: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
তিনি বলেন, বাংলাদেশের 'ইতিবাচক পরিবর্তনের' পর ভারত প্রত্যাশিত 'ইতিবাচক ভূমিকা' পালন করতে বা 'ইতিবাচক মনোভাব' দেখাতে পারছে না, কারণ ভারত ইতিহাসে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগতভাবে সবচেয়ে বড় পরাজয় মেনে নিতে পারছে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'তারা (ভারত) এখনো বাংলাদেশকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে, যা বাংলাদেশের এই স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন করে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির কিছু ক্ষেত্রে (ভারতের পক্ষ থেকে) ভারতের গণমাধ্যম অনুঘটকের ভূমিকা পালনের জন্য এটি বিশাল ঝুঁকি তৈরি করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অনেকের ধারণা ছিল ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন, জনগণ ও গণমাধ্যমে 'উদার চিন্তার' প্রচার হয়। ‘আমরা মনে করি, ভারত (সেই উদার চিন্তাভাবনা থেকে) বদলে গেছে।’
তিনি বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশকে যেভাবে তুলে ধরছে তা অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য 'বিরক্তির কারণ'। এটা আমাদের (বাংলাদেশ) জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তবে আমরা এটাও মনে করি যে এটি ভারতের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর এবং লজ্জাজনক। তাই ভারতকে এ পথ থেকে সরে আসতে হবে।
তিনি ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তারা সব সময় দরজা উন্মুক্ত রাখার পক্ষে। ‘আমরা সবসময় দরজা উন্মুক্ত রাখার কথা বলি। ভারত আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী। আমরা ভারতের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। এক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়: টিআইবি
বাংলাদেশের ক্রান্তিকালে ঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ভারতের ভূমিকা ইতিবাচক এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে খুবই নেতিবাচক হতে পারে। তিনি বলেন, 'এই ঝুঁকির কথা মাথায় রাখতে হবে।’
এর আগে অনুষ্ঠানে 'স্বৈরশাসনের পতনের পর প্রথম ১০০ দিনে নতুন বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ' শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাহজাদা এম আকরাম।
প্রতিবেদনে আকরাম বলেন, কর্তৃত্ববাদের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে এবং নিজেদের ভুল স্বীকার করতে ভারতের ব্যর্থতা এবং ভারতে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং সর্বোপরি ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন সরকার ও বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।
তিনি বলেন, ভারত সরকার, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক ভুল তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে।
বাংলাদেশে জোরালো প্রতিবাদ সত্ত্বেও 'সীমান্ত হত্যা' অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির এই কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোভাব ইতিবাচক।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, চীন, ইরান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে।’
তিনি বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ডিরেক্টর মুহাম্মদ বদিউজ্জামান ও টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ডিরেক্টর মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ-সম্পদ অবিলম্বে ফ্রিজ করুন: টিআইবি
১৪৬ দিন আগে
হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে সহজতর করেছে বিচার বিভাগ: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
এই ধরনের শাসনের উত্থানে সহায়তা করার জন্য গণমাধ্যমের একটি অংশেরও সমালোচনা করেন তিনি।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে আইন বিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ইফতেখারুজ্জামান এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়: টিআইবি
টিআইবি ও সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরাম (এসআরএফ) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি কার্যকর বিচার বিভাগের সুফল পেতে হলে রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি। সাংবাদিকরা এই পরিবর্তনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।’
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ এবং গণমাধ্যমের একাংশ, যাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কথা ছিল, তারা বরং কর্তৃত্ববাদী চর্চাকে উৎসাহিত করতে জড়িত ছিল।
সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মাসুদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আদালত অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিকদের আইনি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক।
কর্মশালার লক্ষ্য ছিল সাংবাদিকদের দক্ষ করে গড়ে তুলে বিচার বিভাগের অনিয়ম উদঘাটন, আইনের গুরুত্বপূর্ণ ছেদ এবং অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ওপর গুরুত্বারোপ করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে টিআইবি ও টিআই-ইউএসের যৌথ চিঠি
১৪৮ দিন আগে
বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অবৈধভাবে অর্থপাচারের কারণে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে। পাচার হওয়া বিশাল পরিমাণ এই অর্থ পুনরুদ্ধারে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উপায়’ শিরোনামে সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ-সম্পদ অবিলম্বে ফ্রিজ করুন: টিআইবি
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আর্থিক অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, 'অর্থ পাচারকারীদের অবশ্যই পরিণতি ভোগ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ এজেন্সিগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’
তিনি বলেন, সরকার আর্থিক অপরাধ রোধে প্রচেষ্টা শুরু করেছে, একটি টেকসই চোরাচালানবিরোধী ব্যবস্থা বিকাশের জন্য নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী অ্যাডভোকেসি প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাম্প্রতিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিগত বছরগুলোতে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী সরকারের প্রভাবে অর্থপাচার কার্যক্রম উপেক্ষা করার অভিযোগ ছিল।
তবে তিনি স্বীকার করেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও পাচার করা অর্থ উদ্ধারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। তবে এটাকে ভবিষ্যতের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থায় পরিণত করতে হবে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান ভুয়া কোম্পানিকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করেন। তবে এ বিষয়ে কার্যকরি পদক্ষেপ না নেওয়ার সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আইএমএফ ভুয়া ও কাগজসর্বস্ব কোম্পানিকে ঋণ দেওয়া বন্ধের শর্ত দিলেও এই প্রথা অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভুয়া স্কিমে কাগজসর্বস্ব কোম্পানির কাছে ইসলামি ও অন্যান্য ব্যাংকের তহবিল খোয়া গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে; যা বাংলাদেশ ব্যাংক তখন থেকে স্বীকার করেছে।’
এদিকে সব শর্ত পূরণকারী অনেক বৈধ কোম্পানি ঋণ পেতে হিমশিম খাচ্ছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
এছাড়া সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমেদ এবং অর্থনীতিবিদ ও অ্যাস্ট্রা গ্যাটাকা ওপেনহেইমারের প্রতিষ্ঠাতা নঈম চৌধুরী বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বিএফআইইউ-দুদকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঢেলে সাজানো অপরিহার্য: টিআইবি
সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপর আহ্বান টিআইবির
১৬২ দিন আগে
মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে: টিআইবি
মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রবিবার ঢাকাসহ সারাদেশে ৪৫টি স্থানে একযোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে ১১ দফা দাবি তুলে ধরে টিআইবি।
এতে বলা হয়, মানবাধিকারের গুরুতর ও ব্যাপক লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। গুরুতর নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বিচারে ক্ষমতার অপব্যবহার, সার্বিকভাবে সুশাসনের অভাব এবং ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ, জনস্বার্থ থেকে বিচ্ছিন্ন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিবর্জিত এবং সীমাহীন দুর্নীতিতে জর্জরিত শাসন ব্যবস্থা এই বিশৃঙ্খলার মূল কারণ।
এ প্রেক্ষাপটে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।
অনতিবিলম্বে এসব দাবি মেনে নিতে হবে এবং কোনো বিলম্ব না করে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রোডম্যাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
দাবিগুলো হলো-
১. বহুমাত্রিক ও বহুপর্যায়ের নজিরবিহীন ও নির্মম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য তদন্ত নিশ্চিতে জাতিসংঘের উদ্যোগে সম্পূর্ণ স্বাধীন কমিশন গঠন করার মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. ভবিষ্যতে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে আইন-প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনের শাসনের সঙ্গে জড়িত সব প্রতিষ্ঠান তথা সার্বিক রাষ্ট্রকাঠামো ঢেলে সাজাবার জন্য জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৩. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিককে হয়রানি ও নির্মম নিপীড়ন এখনই বন্ধ করতে হবে। আটক সব সমন্বয়ক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিককে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে ও সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
৪. বেআইনি, নির্বিচার ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অতিরিক্ত, অসামাঞ্জস্যপূর্ণ প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহারসহ বিভিন্নভাবে যারা নির্মম হতাহতের জন্য দায়ী এবং যাদের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বপ্নকে পদদলিত করে নজিরবিহীন এই নির্মমতা সংগঠিত হয়েছে তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
৫. জাতির ইতিহাসের নজিরবিহীন এই অধ্যায়ে নিহত-আহত সবার বয়স ও পেশা অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ তালিকা অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।
৬. আহত সবার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা, পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করতে হবে।
৭. হতাহত সবার পরিবারের জন্য সম্মানজনক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুনর্র্বাসন প্রক্রিয়া প্রকাশ করতে হবে।
৮. অবাধ তথ্যপ্রবাহের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও ডিজিটালসহ সব গণমাধ্যমের প্রতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সব ধরনের হুমকি, নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার এবং বন্ধ করতে হবে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ওপর সব নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।
৯. সহিংসতা দমন বা অন্য কোনো অজুহাতে, ভিন্নমত দমনের হঠকারি-প্রক্রিয়া থেকে এখনই সরে আসতে হবে। ভিন্নমত, বাক্স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিপন্থী নজরদারিভিত্তিক ভীতিকর পরিবেশ, তথা জনগণের জন্য নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির সংস্কৃতি পরিত্যাগ করতে হবে।
১০. এই মুহূর্ত থেকে সব অসত্য বয়ান ও মিথ্যাচার বন্ধ করে, দেশবাসীর মানবাধিকার, ন্যয়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
১১. দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ফাঁকাবুলির সংস্কৃতি পরিহার করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির বিচারহীনতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
২৫২ দিন আগে
দুর্নীতির অভিযোগে বদলি-বরখাস্ত ও অবসরে পাঠানোর পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়: টিআইবি
সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি রোধে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, বদলি, বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসরের মতো পদক্ষেপগুলো অপর্যাপ্ত প্রতিবন্ধক এবং অজান্তেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি লালন করতে পারে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রশাসনিক পদক্ষেপের পরিবর্তে দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও পুলিশের মতো সংস্থায় দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বদলি বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বদলি বা অবসরের মতো প্রশাসনিক পদক্ষেপ আশাব্যঞ্জক মনে হলেও তাতে দুর্নীতির মূল কারণগুলো যথাযথভাবে তুলে ধরা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, এই ধরনের পদক্ষেপ এমন একটি চক্রকে স্থায়ী করতে পারে, যেখানে কঠোর আইনি পরিণতির অভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না।’
তিনি সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার সংশোধনী তুলে ধরে বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীদের জবাবদিহিতা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: সাবেক আইজিপি বেনজীরের ব্যাপক দুর্নীতির জবাবদিহিতা দাবি করেছে টিআইবি
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ধরনের আইনি ফাঁকফোকরগুলো আইনের দৃষ্টিতে সমতার সাংবিধানিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগে ন্যূনতম শাস্তির ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা একটি ক্ষতিকর বার্তা দেয়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এটি ইঙ্গিত দেয় যে কিছু ব্যক্তি আইনের ঊর্ধ্বে, যা জনগণের আস্থা কমায় এবং নৈতিক শাসনের ভিত্তিকে নষ্ট করে।’
দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে ড. ইফতেখারুজ্জামান ক্ষমতার ঊর্ধ্বে উঠে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রাতিষ্ঠানিক আঁতাতসহ দুর্নীতির বিকাশ ঘটায় এমন পদ্ধতিগত বিষয়গুলোর দায়িত্ব নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
টিআইব প্রধান বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতারা জবাবদিহিতা এড়িয়ে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি কার্যকরভাবে রোধ করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নৈতিক মান বজায় রাখতে, আমাদের এমন দৃঢ় পদক্ষেপ দরকার যা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার প্রতি সত্যিকারের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।’
দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্যিকারের প্রতিরোধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন, যা অপরাধের তীব্রতাকে প্রতিফলিত করে। যাতে এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে অসদাচরণ রোধ করা যায়।
আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করার বাজেট প্রণয়ন অসাংবিধানিক ও দুর্নীতিবান্ধব: টিআইবি
২৮৬ দিন আগে