স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, গাড়ি চালকদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হবে এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের নিয়োগপত্র দিতে হবে।
রবিবার সচিবালয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
একই সঙ্গে সড়কে বিভিন্ন সমিতির নামে সড়কে আর চাঁদা তোলা যাবে না বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, টার্মিনাল ছাড়া রাস্তায় দাড়িয়ে কোনো চাঁদা নিতে দেবো না। বিভিন্ন পৌরসভা বা জেলার নামে যে কর আদায় করা হয় সেগুলোও যত্র তত্র তোলা যাবে না, টার্মিনালে তুলতে হবে। সড়কে যানবাহন পুরাতন হয়েছে। কতদিন চলতে পারবে তা যাচাইয়ের বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে একটি কমিটি করা হয়েছে। শুধু বেসরকারিই না, সরকারি গাড়িও যাচাই করবে।
তিনি বলেন, চালকদের দুই মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র দিতে হবে এবং তাদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে টার্মিনালে ব্যবস্থা করা হবে। ডোপ টেস্ট করে, তারপর গাড়ি চালাবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা আনতে ১১১টি প্রস্তাব বাস্তবায়নে একটি টাস্কফোর্স হয়েছিল সেই টাস্কফোর্সের চতুর্থ সভা ছিল রবিবার। দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত যেগুলো এসেছে- সড়কে যে যানবাহনগুলো চলে সেগুলো অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। এগুলো কতদিন চলতে পারবে তার জন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে একটি কমিটি করে তার সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রস্তাব এসেছে। শুধু বেসরকারিই না, সরকারি গাড়িগুলোও কিভাবে চলবে, কতদিন চলবে তা আলোচনা হয়েছে। আমরা দেখেছি, এই গাড়িগুলো এতই পুরাতন সারা দেশে চলাচল করে এবং সময় সময় দুর্ঘটনার একটি কারণ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুলিশকে বিশ্বমানের করে তৈরি করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, আমরা নির্ধারিত টার্মিনাল বা জায়গা ছাড়া রাস্তায় কোনো রকমের চাঁদা বা সার্ভিস চার্জ আমরা যেটা বলে থাকি, আমরা তুলতে দেবো না এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা এটা আইজিপিকে জানিয়ে দিয়েছি তিনি অ্যাকশনে থাকবেন। পৌরসভাসহ বিভিন্ন ধরনের করও আদায় করা হয়। এগুলোও যাতে স্ট্যান্ড বা টার্মিনাল ছাড়া যত্রতত্র তোলা না হয় সে ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। বিআরটিসি কমিটির সিটিং নিয়মিত করতেও বলা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারি সব জায়গায় ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা আছে। চালকদেরও আমরা ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসছি। বিআরটিএ যখন লাইসেন্স দিচ্ছে তখনও ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। শুধু লাইসেন্সের সময়ই নয়, আমরা টার্মিনালগুলোতে পর্যায়ক্রমে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করবো। গাড়ি যখন তারা চালাবে তার আগেই টেস্ট করে চালাবে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত আমরা নিতে যাচ্ছি এবং সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। বিআরটিএতে গত ৩০ জানুয়ারি থেকে এটা চালু হয়েছে।
আমাদের যে সড়ক আইন সেখানে একটি ধারা রয়েছে চালক ও সুপারভাইজারকে মালিকরা নিয়োগপত্র দেবে। আমরা বারবার বলার পরেও এটা দেয়া হচ্ছিল না। আগামী দু’ মাসের মধ্যে মালিক এবং শ্রমিক যারা আছেন তারা বসে কখন কিভাবে শুরু করবেন এটা ঠিক করবেন। এটা বাধ্যতামূলক, আমরা দু’মাস পরে রাস্তায় সেটা চেক করবো। নিয়োগপত্র ছাড়া কোনো ড্রাইভার গাড়িতে উঠতে পারবে না। ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পর্যায়ক্রমে যাতে সবাই লাইসেন্স আরও সহজে পায় সেটারও সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আরও পড়ুন: সব দায় র্যাবের ঘাড়ে চাপানো অবিচার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী