নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণের চাকরিচ্যুত ১০৬ জন কর্মচারীকে লভ্যাংশ দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে করা রিট দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে দানকর দিতে হবে: হাইকোর্ট
একই সঙ্গে গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখা হয়েছে।
আদালতে শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী শরীফ।
ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে তিনি জানান, রিট মামলাটি দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা আদালত স্থগিত রেখেছেন।
জানা যায়, ১০৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারী ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণে কর্মরত ছিলেন। ২০০৬-২০১৩ অর্থ বছরে কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
শ্রম আইনে বলা আছে, শ্রম আইন কার্যকর হওয়ার দিন থেকে কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণ ও অংশগ্রহণ তহবিল দিতে হবে। এই লভ্যাংশ না পাওয়ার কারণে প্রথমে তারা গ্রামীণ কল্যাণকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
কিন্তু লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা শ্রম আদালতে মামলা করেন। গত ৩ এপ্রিল চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ পরিশোধ করতে রায় দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ড. ইউনূস।
এ রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত ৩০ মে গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করা হয়।
গত ২২ জুন শ্রমিকদের আবেদনের শুনানি করে শ্রমিকদের লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকীর আদালত এই স্থগিতাদেশ দিয়ে শ্রমিকদের আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুযায়ী আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।