চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) চলন্ত শাটল ট্রেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শাটল ট্রেনে থাকা বহিরাগত বখাটের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া চলন্ত শাটল ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত একটি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।
তবে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাস থেকে সাড়ে ৫টার শাটলে সামনে থেকে ৩ অথবা ৪ নম্বর বগিতে ওঠি। একই বগিতে আরও দুজন বয়স্ক লোক ছিলেন। সময় মতো ট্রেন না ছাড়া এবং ইফতারের সময় হয়ে যাওয়ায় বয়স্ক দুই লোক নেমে যান। ইফতারের পর নতুন করে দুজন ছেলে বগিতে ওঠে। এদের মধ্যে একজন একবার আমাকে ফোনের লাইট দিয়ে দেখে চলে যায়। পরে আবার এসে জিজ্ঞেস করে, আপু আপনি কোথায় যাবেন? আমি বললাম, কেন? তখন সে বলল ট্রেন ছাড়বে না। বললাম, তো? বলল, ট্রেন ছাড়বে না তাই বললাম আরকি।’
ভুক্তভোগী জানান, সাড়ে ৫টার শিডিউলের ট্রেন ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টায়। ছেলেটি বগির এপাশ-ওপাশ হাঁটাহাঁটি করছে। তখন আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কি না। তারা বলল বহদ্দারহাট থেকে এসেছে।
পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ২৪ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে চবি
ভুক্তভোগী বলেন, ‘পরে ট্রেন একটি স্টেশনে থেমে আবার চলতে শুরু করলে হঠাৎ দুই ছেলের একজন এসে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে এক হাতে আমার মুখ এবং অপর হাতে আমার মাথা চেপে ধরে। সঙ্গে সঙ্গেই আমি চিৎকার করি এবং হাত সরানোর চেষ্টা করতে করতে মাটিতে পড়ে যাই। চোখের সামনে মৃত্যু দেখছিলাম। তখনো মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরা এবং আমি প্রাণপণে হাত ও কনুই দিয়ে ঠেলে বিকট শব্দে চিৎকার করতে থাকি। হঠাৎ তার হাত ফসকে যেতেই আমার চিৎকার বাইরে যাচ্ছিল। তখনই কোথাও যেন পালিয়ে গেল। আমি জানালা দিয়ে হাত, মাথা বের করে চিৎকার করতে থাকি।
তিনি বলেন, বাড়িতে এসে দেখি আমার মুখের বিভিন্ন জায়গায় নখের ছোট-বড় লাল আঁচড়, চোখের ঠিক ওপরে কালো, সেখানে সুঁই ফোটানোর মতো অনুভব হচ্ছে এবং চোখের কোনায় ফুলে ব্যথা, গলা বসে গেছে, মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তো খুব ভয়ংকর ঘটনা। মেয়েটি আমাদের এখনো বিষয়টি জানায়নি। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।’ শাটলের বিভিন্ন বগিতে পুলিশ থাকার কথা। এমন কিছু হওয়াটা অপ্রত্যাশিত।