অর্থ আত্মসাৎ, কারণ দর্শানো ও সতর্কীকরণ পত্রের জবাব না দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে চারটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে ই-ক্যাব। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ই-ক্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটি এই তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ই-ক্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে কতিপয় সদস্য প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ই-ক্যাব আভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভোক্তা ও বিক্রেতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ই-ক্যাব ১৬ টি প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এর মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে জবাব না দেয়া অথবা সন্তোষজনক জবাব না দেয়ার কারণে চারটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলোগুলো হলো, (১) টুয়েন্টিফোর টিকেটি. ডট কম (24tkt.com) (২) গ্রীন বাংলা ই-কমার্স লিমিডেট, (www.greenbangla.space) (৩) এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এ্যাগ্রো ফুড এন্ড কনজ্যুমার লি:, (www.excellentbigbazar.com) (৪) ই-অরেঞ্জ ডট কম (www.eorange.shop)।
আরও পড়ুন: ‘ঘরে থাকাই নিরাপদ, ই-কমার্সই ভবিষ্যৎ’ জানাল ই-ক্যাব
প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো হলো, অর্থ আত্মসাৎ, ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তি না করা, ই-ক্যাবের কারণ দর্শানো ও সতর্কীকরণ পত্রের জবাব না দেয়া, ই-ক্যাবের পাঠানো অভিযোগগুলোর সমাধান না করা, ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১’ প্রতিপালন না করা ও এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ভোক্তা ও বিক্রেতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ই-ক্যাব মোট ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের কেউ কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কেউ কেউ অভিযোগ নিষ্পত্তি ও ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা -২০২১ মেনে চলার প্রতিশ্রুতিসহ সময় প্রার্থনা করেছে। তাই ৯টি প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষণে রেখে অধিকতর তদন্ত চলছে। সন্তোষজনক সমাধান না হলে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে অনুরুপ সিদ্ধান্ত গৃহিত হতে পারে।
ই-ক্যাব সর্বসাধারণকে নিজেদের আর্থিক নিরাপত্তার স্বার্থে অস্বাভাবিক অফার দেয়া পণ্য কেনাকাটায় সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছে এবং যেসব প্রতিষ্ঠান ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ প্রতিপালন করছে না সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কেনাকাটা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছে। ক্রেতা-ভোক্তারা কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতারিত হয়ে থাকলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন।
ক্রেতাদের স্বার্থরক্ষা, ই-কমার্স সেক্টরের আস্থা বহাল রাখা ও এর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ই-ক্যাব বদ্ধ পরিকর। সরকার ঘোষিত ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ ও এসক্রো পদ্ধতি ই-ক্যাবের প্রস্তাবিত দাবির ফসল যা বর্তমানে ক্রেতাদের আর্থিক নিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা রাখছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ. বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি তদন্ত সংস্থাকে ই-ক্যাব অনবরত সহযোগিতা করে আসছে।
ইতোমধ্যে ই-ক্যাব সকল সদস্য প্রতিষ্ঠানকে সঠিক নিয়মে ব্যবসা পরিচালনা ও ক্রেতাদের স্বার্থরক্ষার মাধ্যমে ই-কমার্স খাতের সুনাম রক্ষা করার অনুরোধ করে বার্তা পাঠিয়েছে। বিশেষ করে অস্বাভাবিক অফার বন্ধ করা, সময়মতো পণ্য ডেলিভারি করা, ব্যাংক ডিপোজিটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা, ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ প্রতিপালন করা, দেশের প্রচলিত আইন মেনে চলা, ভোক্তা অধিকারে আসা অভিযোগগুলো দ্রুত সমাধান করা ও ই-ক্যাবের অভিযোগগুলো সমাধান করে তার প্রতিবেদন পেশ করার জন্য সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সংকটে কীভাবে মানুষের পাশে থাকা যায় তা দেখিয়েছে ই-ক্যাব
সদস্যসহ ক্রেতা ও বিক্রেতাদের যেকোনো পরামর্শ ই-ক্যাব সাদরে গ্রহণ করবে। তথাপি ই-ক্যাবের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে না বুঝে এবং ই-ক্যাবের গৃহিত পদক্ষেপ সম্পর্কে না জেনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ই-ক্যাবের নামে মিথ্যা, মনগড়া ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে নেতিবাচক ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা চালালে ই-ক্যাব আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।