জীবন ও মর্যাদার সুরক্ষার জন্য পুলিশের কাছে আসা মানুষের শেষ অবলম্বন হিসেবে বাহিনীটিকে গড়ে উঠতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে পুলিশকেও জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে যাতে জনগণ তাদের জীবন ও মর্যাদা রক্ষায় এই বাহিনীকেই তাদের শেষ অবলম্বন বলে মনে করে। জনগণ তাদের আশ্রয় পেতে পারে।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর দুই পাশে নবনির্মিত দুটি থানাসহ-পদ্মা সেতু উত্তর থানা ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা- বাংলাদেশ পুলিশের পাঁচটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উভয় পাশে ২ থানার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশকে বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি ও অপরাধের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান সফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, মাদকের অপব্যবহার, সাইবার অপরাধ, অর্থপাচার, গুজব ছড়ানো, মানব পাচার এবং জনগণ ও দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সমাজে এ ধরনের অপরাধ রোধে বিশেষ নজর দিতে বলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আপনাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে।’
সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা রোধে পুলিশ চমৎকার ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশে শান্তি চাই। যদি একটি শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করে, আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে সক্ষম হব।’
বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি দেশে খাদ্য স্বনির্ভরতা অর্জন ও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা ঠেকাতে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: দুশ্চিন্তার কিছু নেই, বন্যা দুর্গতদের পুনর্বাসন করবে সরকার: সিলেটে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ও মূল্যস্ফীতির হার সারা বিশ্বে বাড়ছে এবং তা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
উদ্বোধন করা অন্য প্রকল্পগুলো হলো- ১২টি নবনির্মিত জেলা পর্যায়ের পুলিশ হাসপাতাল, বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ছয়টি নারী ব্যারাক, জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য অনলাইন জিডি (সাধারণ ডায়েরি) কার্যক্রম এবং গৃহহীন পরিবারের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত ১২০টি ঘর বিতরণ।
৬৪ জেলায় নারী পুলিশ সদস্যদের জন্য পৃথক ব্যারাক নির্মাণের সরকারি উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই ছয়টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে।
নবনির্মিত ১২০টি ঘরসহ পুলিশ এখন পর্যন্ত গৃহহীন পরিবারের জন্য মোট ৫২০টি ঘর সরবরাহ করেছে।
রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যৈষ্ঠ সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন।
এছাড়া মুন্সীগঞ্জের পদ্মা সেতু উত্তর থানা, খুলনার কেএমপি নারী ব্যারাক, ময়মনসিংহ পুলিশ হাসপাতাল ও পিরোজপুর পুলিশ লাইন থেকে পুলিশ সদস্য ও সুবিধাভোগীসহ অন্য অংশগ্রহণকারীরা অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।