জনঘনত্ব ও ঢাকামুখী অভিবাসন রোধ করা গেলে তবেই পরিকল্পনার সুফল পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সিরডাপ মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘নিরাপদ নগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ডিএসসিসির কর্মচারীদের আবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: ডিএসসিসি মেয়র
তাপস বলেন, এখানে যিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন, তিনি দেখিয়েছেন- ঢাকার জনঘনত্ব পৃথিবীর মধ্যে সব শহরের চেয়ে বেশি। আমাদের মূল সমস্যা হলো, আমরা পরিকল্পনা করি বর্তমান অবস্থান ও তথ্য নিয়ে। আজকে যদি বর্তমান জনঘনত্ব বিবেচনায় পরিকল্পনা করা হয় তাহলে ১০ বছর পর দেখা যাবে এই ঘনত্ব আর থাকছে না। বেড়ে যাচ্ছে। কারণ একদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ, অন্যদিকে ঢাকামুখী অভিবাসনের চাপ। এছাড়াও আমরা যে পরিকল্পনা করি তা বাস্তবায়ন করতেও ৩-৪ বছর লাগে। তাই, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জনঘনত্ব বৃদ্ধি ও ঢাকামুখী অভিবাসনের যে স্রোত, তা থামাতে না পারলে উন্নয়নের সুফল পাওয়া যাবে না। জনঘনত্ব ও ঢাকামুখী অভিবাসন রোধ করা গেলে তবেই পরিকল্পনার সুফল পাওয়া যাবে।
ঢাকাকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে তিনটি কাজ আবশ্যক জানিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে আজকের প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ১৯টি সূচকের কথা বলা হয়েছে। আমি মনে করি ৩টি কাজ করতে পারলেই বাকি সূচকও পূরণ হয়ে যাবে। প্রথমত, আমাদের জাতিগতভাবে চেতনায় দুর্নীতি মুক্ত হতে হবে। দ্বিতীয়ত, আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। আর তৃতীয়ত, আইন বাস্তবায়নের জন্য বিচারালয়কে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাহলেই আমাদের কাজের মাধ্যমে শহরের বাসযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক মো. সাইফুল আলম বলেন, নগরের সংকট সমাধানে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গ্রাম হবে শহর, শহর হবে বাসযোগ্য- এই স্লোগানে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়নে প্রকল্পের অনুমোদন: ডিএনসিসি মেয়র
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও আগুন লাগে। এই শহর কতটা নিরাপদ? তা আমাদের প্রশ্নেই ঘাটতি ফুটে উঠে। পৃথিবীর মেগাসিটির তালিকায় ঢাকা আয়তনের দিক থেকে ৪০তম, অথচ জনসংখ্যার ঘনত্বে প্রথম। এই শহরে পাঁচ লাখ গাড়ি চলার ব্যবস্থা আছে, অথচ চলে ১৬ লাখ গাড়ি। ঢাকায় রাস্তা, গাছ, জলাশয় অনেক কমলেও বাড়ছে শুধু মানুষ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লান্যার্সের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের নগরায়ন ও পরিবেশ সম্পাদক স্থপতি সুজাউল ইসলাম খান, সাংবাদিক অমিতোষ পাল, বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হেলিমুল আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ।
সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল খান।
অনুষ্ঠানে ৫টি ক্যাটাগরিতে ৬ জন সাংবাদিককে নগর সাংবাদিকতার জন্য 'বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪' দেওয়া হয়। নিউ এইজের রাশেদ আহমেদ, বণিক বার্তার আল ফাতাহ মামুন, সমকালের যৌথভাবে অমিতোষ পাল ও লতিফুল ইসলাম, সারাবাংলা.নেটের রাজনীন ফারজানা এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নাজমুল সাঈদকে 'বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪' দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ঢাকার সবুজায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছাবে: মেয়র তাপস