বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস বলেছেন, আগামী মাসগুলোতে জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে জাতিসংঘ কি করে বাংলাদেশকে সমর্থন করতে পারে তা নিয়ে নতুন তদন্তের দিকে নজর দিতে, কিভাবে পুনর্মিলন করা যায়। এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের দিকে অগ্রসর হওয়া এবং অবশ্যই আগামী মাসে নতুন ক্রান্তিকালীন সরকার নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সমর্থন করা।
তিনি বলেন, কী ঘটেছে সে বিষয়ে নতুন তদন্ত করতে জাতিসংঘ কীভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোতে অগ্রসর হওয়া যায় সেজন্য তারা সকল স্টেকহোল্ডার, জড়িত সকল পক্ষ এবং সুশীল সমাজের সকল সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করছেন।
এছাড়া আগামী মাসগুলোতে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত জাতিসংঘ কীভাবে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে পারে সে বিষয়টিও এেই আলোচনার অন্তর্ভুক্ত বলে জানান লুইস।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এমতাবস্থায় পরামর্শ ও সংলাপের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং আবারও আমরা সবসময় শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের আহ্বান তারেকের
গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোকে অসাধারণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
লুইস বলেন, 'দেশে শান্তি বজায় রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, সহিংসতা বন্ধ করা, অবিশ্বাস্য বাংলাদেশ গড়ার ধারা অব্যাহত রাখা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখার দায়িত্বও সকলের। 'আমাদের সবাইকে একসঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে'
বৈঠকের বিষয়ে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রেক্ষাপটে তিনি বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর খসরু বলেন, জাতি একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা পেয়েছে এবং দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের জনগণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই পরিবর্তনের সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
খসরু বাংলাদেশে মানবাধিকার পুনরুদ্ধারে জাতিসংঘের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথাও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এর আগে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তবে এই শঙ্কা এখন সবার মধ্যে দূর হয়েছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: ধ্বংসাত্মক-প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান খালেদার
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এসব অনিশ্চয়তা মোকাবিলা ও উত্তরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনে জাতিসংঘ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
তিনি বলেন,‘এই প্রচেষ্টায় আমাদের জাতিসংঘের সমর্থন দরকার এবং তারা সেই সমর্থন দিতে ইচ্ছুক।’
খসরু বলেন, 'বৈঠকে সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সম্মিলিত লক্ষ্য নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে সফল হবেন অধ্যাপক ইউনূস: ফখরুল