জাপান তাদের নতুন অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিসটেন্স (ওএসএ) কর্মসূচির সুবিধাভোগী চারটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে।
শনিবার দূতাবাসে এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ‘এ থেকে বোঝা যায় জাপান বাংলাদেশকে কতটা গুরুত্ব দেয়।’
অন্য তিনটি দেশ হলো- ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ফিজি।
এ লক্ষ্যে জাপান ও বাংলাদেশ তাদের নিজ নিজ দূতাবাসে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে নিয়োগে সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন: আইওএসএ সনদ পেল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
চলতি বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময়ও এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে 'অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স (ওডিএ)' ছাড়াও জাপান সশস্ত্র বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সুবিধার্থে উপকরণ ও সরঞ্জাম সরবরাহের পাশাপাশি দেশগুলোর নিরাপত্তা চাহিদার ভিত্তিতে অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে একটি নতুন সহযোগিতা কাঠামো 'অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিসটেন্স (ওএসএ)' প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসারে, ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা কর্তৃক অনুমোদিত নতুন ‘জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে’ ওএসএ উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ও জাপান শিগগিরই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে একটি চুক্তি সই করতে পারে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তর সম্পর্কিত একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা এই মুহূর্তে বিস্তারিত প্রকাশ করতে পারব না। তবে, আলোচনা ইতিবাচকভাবে চলছে।’
জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং দেশটি ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশকে সর্বাধিক বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তা (২৪ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর এবং ২০২৬ সালের মধ্যে শুল্কমুক্ত সময়ে ঢাকা-টোকিও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সইয়ের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, জাপান-বাংলাদেশ জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ ইতোমধ্যে ইপিএ নিয়ে দুটি বৈঠক করেছে এবং তৃতীয় বারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, জাপান বাংলাদেশের সব সময়ের বন্ধু এবং দু'দেশকেই একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।
জাপানের একটি বিশাল জনশক্তির প্রয়োজন হবে এবং বাংলাদেশ এই ধরনের জনশক্তি সরবরাহ করতে পারে।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির জন্য জাপান বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল বাজার এবং বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি প্রধান গন্তব্য হতে পারে।
প্যান-এশিয়া রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পারি) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে জাপান দূতাবাসে আয়োজিত আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম কথা বলেন।
প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত জামিল মজিদ ও আশরাফ-উদ-দৌলা; এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. লাইলুফার ইয়াসমিন; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার পরিচালক সায়েম আহমেদ; জাইকা বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি ইজি ইয়ামাদা; জাপানিজ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ইন ঢাকা (জেসিআইএডি) এর সভাপতি তেতসুরো কানো; জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) মহাসচিব মো. আনোয়ার শহীদ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে ৪৪তম ওডিএ ইয়েন ঋণচুক্তি সই