বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১ মার্চ কিশোরের জামিন আবেদনের আদেশের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
আদালতে কিশোরের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আরও পড়ুন: কার্টুনিস্ট কিশোরের জামিন আবেদনের ওপর আদেশ বুধবার
লেখক মুশতাকের মৃত্যুতে প্রতিবাদ অব্যাহত
অ্যাডভোকেট জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘অন্য কোনো মামলা না থাকায় কারাগার থেকে মুক্তি পেতে তার আর কোনো বাধা নেই।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দু-তিন দিনের মধ্যে কিশোর কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছি।
গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে র্যাব গ্রেপ্তার করে।
২৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তারাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৫ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ‘আই অ্যাম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেজের অ্যাডমিন শায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ সমাচার, স্বপন ওয়াহিদ, মোস্তাক আহম্মেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: লেখক মুশতাকের মৃত্যু: গাজীপুর জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার লেখক মুশতাকের কারাগারে মৃত্যু
কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যুতে শাহবাগে বিক্ষোভ
আহমেদ কবীর কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’ এর প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, ‘তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সাথে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগে বলা হয়।
গত ১৩ জানুয়ারি এ মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদকে (কারাগারে সদ্য প্রয়াত) অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে রমনা থানা পুলিশ, যেখানে জুলকারনাইন খান ওরফে সামিসহ অন্য আটজনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন মামলাটি অধিকতর তদন্তে সিটিটিসিকে নির্দেশ দেন।