এই অঞ্চলে অর্থবহ ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ, আন্তঃসীমান্ত তথ্য প্রবাহ এবং উন্নয়নমুখী উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
রবিবার (২৩ জুন) ঢাকায় দুই দিনব্যাপী 'রিজিওনাল কনসালটেশন অন গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট (জিডিসি)'র সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সরকার ও বিমসটেক সেক্রেটারিয়েট যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী এই আঞ্চলিক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ বিমসটেক মহাসচিবের
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে জিডিসি সম্পর্কিত চলমান আলোচনায় ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর সহজতর করার জন্য অভিন্ন উদ্দেশ্য এবং প্রাসঙ্গিক অগ্রাধিকারগুলো চিহ্নিত ও প্রচার করা এই আলোচনার লক্ষ্য।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা জিডিসি গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'স্মার্ট বাংলাদেশ' রূপকল্প-২০৪১ এর আলোকে ডিজিটাল কূটনীতিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী পলক।
এ প্রসঙ্গে তিনি গত বছর জাতিসংঘে 'জিরো ডিজিটাল ডিভাইড' বিষয়ে আইসিটি ডিভিশনের অধীনে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) উত্থাপিত প্রস্তাবের কথা স্মরণ করেন। তিনি ডিজিটাল পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি এবং ইনোভেশন বিষয়ে গ্লোবাল সাউথের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের শেয়ার করা বেশ কয়েকটি উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার পাশাপাশি তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সরকার সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক নিয়ম ও মান মেনে একটি তথ্য সুরক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে।
বৈঠকের সভাপতি পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন পরবর্তী বিমসটেক চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আঞ্চলিক পরামর্শের মাধ্যমে সৃষ্ট গতিকে এগিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, তিনি ডিজিটাল সাক্ষরতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য উদীয়মান প্রযুক্তির মানব-কেন্দ্রিক প্রয়োগের প্রচারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন।
শামসুল আরেফিন তার বক্তব্যে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি, সাইবার নিরাপত্তা ও ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো বিনিময়ের জন্য 'বিমসটেক সেন্টার অব এক্সিলেন্সি' প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস সবার জন্য উন্মুক্ত, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে জাতিসংঘের উদ্যোগকে ঘিরে আঞ্চলিক আলোচনা সভা আয়োজনে বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
পিছিয়ে পড়াদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করাসহ আগামী বছরগুলোতে জিডিসি বাস্তবায়নে দেশগুলোকে সহায়তা করতে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রীলঙ্কার অধ্যাপক ভেরানজা করুনারত্নে, বিমসটেক সচিবালয়ের পরিচালক (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন) মাহিশিনি কোলন এবং বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ ফর ইউনিফাইড ভয়েসেস অন গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট ও ইউএন সামিট অব দ্য ফিউচার ২০২৪-এর নির্বাহী সমন্বয়ক এ এইচ এম বজলুর রহমান।
দুই দিনের এই আয়োজনে পাঁচটি কারিগরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো জিডিসির পাঁচটি মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কিত অভিন্ন অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করে।
কারিগরি আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ ও এমইএ) ফাইয়াজ মুরশীদ কাজী।
আরও পড়ুন: উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য পরবর্তী বিমসটেক সম্মেলনে কিছু উল্লেখযোগ্য ফলাফল আসতে যাচ্ছে: মহাসচিব