বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) সুবিধা নিশ্চিত করতে গত কয়েক বছর ধরে আমরা ওয়াটারএইডের সঙ্গে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘সবার জন্য ব্যবহার উপযোগী ও টেকসই ওয়াশ সেবাদানের ক্ষেত্রে ওয়াটারএইডের ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়।’
দেশের প্রত্যন্ত ও সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলসমূহে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে বুধবার (৯ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচ বছর মেয়াদী ‘কান্ট্রি প্রোগ্রাম স্ট্রাটেজি ২০২৩-২০২৮’-এর সূচনা করেছে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) সুবিধা নিশ্চিত করতে শুধু পলিসি তৈরি বা সংশোধন করতেই সহায়তা করছে না, মাঠ পর্যায়ে এই পলিসি বাস্তবায়নেও সহযোগিতা করছে’।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) সুবিধার স্থায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি এর পরিচালনা পদ্ধতির উপরও জোর দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পানির নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন ও ওয়াটারএইড এর যৌথ উদ্যোগ
তিনি আরও বলেন, এ ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মাথায় রাখতে হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পানির প্রাপ্যতা একদিকে কমবে, অন্যদিকে পানির চাহিদা বাড়বে’।
তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওয়াটারএইডসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের সামগ্রিক ওয়াশ পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় উন্নত। কিন্তু, নিরাপদভাবে পরিচালিত (সেইফলি ম্যানেজড) স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং পাইপ লাইনের মাধ্যমে সকলের কাছে উন্নত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছনে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের জন্য তাই সরকারি-বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে কাজের উদ্যাগ গ্রহণ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ‘সকলের জন্য জলবায়ু-সহিষ্ণু নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত এসডিজি’র সার্বজনীন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন আগামীতে আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।’
এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, স্থানীয় সরকার বিভাগের পলিসি সাপোর্ট অধিশাখার যুগ্মসচিব জনাব এমদাদুল হক চৌধুরী, পানি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ও ইমেরিটাস অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয় ড. আইনুন নিশাত, ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. খায়রুল ইসলাম এবং ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, সুশীল সমাজ ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা, শ্রীমঙ্গল, টাঙ্গাইল ও ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের উন্নত ওয়াশ সুবিধা ব্যবহারকারী এবং তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা উপস্থিত শ্রোতাদের তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানান।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে ওয়াটারএইডের স্বেচ্ছাসেবীরা