আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
এ সময় গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান,চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে ছিলেন।
পরে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আইন উপদেষ্টা ও গণপূর্ত উপদেষ্টা সকাল সাড়ে ৮টায় ট্রাইব্যুনালের ভবন ও ভবন সংলগ্ন এলাকা সব কিছু পরিদর্শনে এসেছিলেন। ওনারা মূলত এসেছিলেন আমাদের পুরাতন যেটা কোর্ট বিল্ডিং, যেটা ট্রাইব্যুনাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো, এটার সংস্কার কাজ চলছে, সেটার অগ্রগতি দেখার জন্য। তার ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। প্রসিকিউশনের পুরাতন অফিস, সেটার পরিদর্শন করে প্রকৌশলীদের কাছ থেকে কাজের অগ্রগতি জেনেছেন। তাদেরকে তাগিদ দিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব পুরাতন কোর্ট বিল্ডিংটাকে ব্যবহার উপযোগী করে যেন মূল বিচার কাজটা সে ভবনে শুরু করা যায়।
রাজনৈতিক ইশতেহার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করেন। এরপর ট্রাইব্যুনালের রায়ে বেশ কিছু বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজনের ফাঁসি কার্যকরও করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সময়োপযোগী করতে সংশোধনী প্রস্তাব
এরই মধ্যে ঝিমিয়ে পড়েছিল ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। তবে গত জুলাই আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সে অনুযায়ী গত ৫ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ।
এতে চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আরও চারজন আইনজীবীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে আরও একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেএরই মধ্যে অন্তত ৫৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
এসব অভিযোগ আনা হয়েছে, দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, তৎকালীন পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সদস্য, র্যাবের সাবেক ডিজি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংশ্লিষ্ট সদস্য, ১৪ দলের নেতা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন, পৃথকভাবে ১৪ দলের বিরুদ্ধে। এসব নেতা-কর্মী শিগগিরই এই ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখোমুখি হবেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের বিরুদ্ধে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ ববি হাজ্জাজের