পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় এসেছেন। দুই দিনের সফরে শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ২টার কিছু পরপরই বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম তাকে স্বাগত জানান।
প্রায় ১৩ বছর পর কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর এটি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে এই সফর হচ্ছে। পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এই সফর।
সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন পকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসব বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক ছাড়াও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চার দিনের সফরে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়
১৯৭১ সালের বিষয়গুলো উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ৪ আগস্ট বলেছিলেন, পাকিস্তানি প্রতিনিধিদের সফরের সময় প্রতিটি বিষয়ই আলোচনায় থাকবে।
বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণের দাবি তুলবে কি না— এমন প্রশ্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ‘প্রতিটি বিষয় আলোচনায় থাকবে।’
‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করছে এবং ইসহাক দারের এ সফরে আলোচনার টেবিলে সবকিছুই থাকবে।’
চলতি বছরের ২৭-২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের কথা ছিল। তবে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করা হয়।
পরে দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে নতুন তারিখ ঠিক করা হয়।
আরও পড়ুন: চলতি বছরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে: পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী
গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে ইসহাক দার ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেনের মধ্যে বৈঠক হয়।
এ সময় ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। তারা ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার ও আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
সেটি ছিল গত অক্টোবর থেকে এই দুই নেতার চতুর্থ বৈঠক।
পাকিস্তান হাইকমিশন সে সময় জানিয়েছিল, বৈঠকে দুপক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। পাশাপাশি যোগাযোগ ও জনগণের মধ্যে বিনিময় বৃদ্ধির উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।