প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আলেম-উলামাদের ধর্মীয় কুসংস্কার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে তার সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে কেউ ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে শিশুদের বিপথগামী করতে না পারে।
তিনি বলেন, ‘ধর্ম, কুসংস্কার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমরা বিশেষ করে আপনাকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি যাতে আমাদের বাচ্চারা ভুল পথ অনুসরণ না করে।’
আরও পড়ুন: পাবনার ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধাকে বাড়ি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
রবিবার (১৩ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি শান্তির ধর্ম ইসলামের মর্যাদা রক্ষার জন্য দেশের ইসলামিক স্কলারদের প্রতি আহ্বান জানান।
সন্তানরা কোথায় যায় এবং কার সঙ্গে মেলামেশা করে তা দেখার জন্য মা-বাবা ও অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের গুটিকয়েক মানুষের সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতার কারণে শান্তির ধর্ম ইসলামের বদনাম হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই সন্ত্রাসীরা ইসলামের নামে পরিচিত হবে এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, মুষ্টিমেয় কিছু লোক আমাদের ধর্মকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে ব্যবহার করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি জানেন না যে তাদের কে শিখিয়েছে কেউ মানুষকে হত্যা করলে সে স্বর্গে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এটা কোরানের কোথাও লেখা নেই এবং নবী (সা.)ও বলেননি। বিদায়ী হজের ভাষণে তিনি মুসলমানদের সব ধর্মের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনের আহ্বান জানান। এটি ইসলামের মর্মকথা।’
তিনি বলেন, বিচার দিবসে একমাত্র আল্লাহই সর্বোচ্চ বিচারক হবেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের পেছনে কোনো বৈশ্বিক শক্তি নেই: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে চূড়ান্ত বিচারের দায়িত্ব দেননি। রাসুল (সা.) কাউকে বলেননি। তাহলে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবে কীভাবে? বলা হয়, আপনি যদি নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেন তবে আপনি নরকে যাবেন।’
তিনি বলেন, ইসলামে আত্মহত্যা করা মহাপাপ। ইসলামে বলা হয়, যদি তুমি আত্মহত্যা কর তাহলে বেহেস্তে যেতে পারবে না।
তরুণ শিশু-কিশোরদের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘তারা বিশ্বাস করে আত্মঘাতী হামলায় মানুষ হত্যা করে তারা স্বর্গে যাচ্ছে। তাদের অবশ্যই এই পথ থেকে বাধা দিতে হবে।’
ধর্মের নামে সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা সব ধর্মের লেবাস ব্যবহার করে। ‘সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসী। তাদের কোনো ধর্ম নেই, দেশ নেই। সন্ত্রাসবাদই তাদের ধর্ম।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, ধর্মবিষয়ক সচিব মো. এ হামিদ জমাদ্দার প্রমুখ, পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী এবং চট্টগ্রামের মাওলানা সালাহউদ্দিন নানোপুরী প্রমুখ।
সবাইকে ধন্যবাদ দেন দ্বিনি সেবা ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এম আবুল কালাম আজাদ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রতিযোগিতায় বিজয়ী পাঁচজনের মধ্যে পাঁচটি পুরস্কার বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আল-কায়েদার হাতে অপহৃত জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তার সাক্ষাৎ