সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) এক উচ্চ পর্যায়ের সেমিনারে প্যানেলিস্ট আলোচক হিসাবে তিনি এসব কথা বলেন বলে শুক্রবার দূতাবাস থেকে পাঠানো বার্তায় জানানো হয়েছে।
‘ইন্টারন্যাশনাল জেন্ডার চ্যাম্পিয়ন ডেন হাগ হাব’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে কানাডা ও সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহযোগিতায় আইসিসি এ সেমিনারের আয়োজন করে।
‘জেন্ডার চ্যাম্পিয়ন’ হলো এমন এক উদ্যোগ যেখানে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ব্যক্তি কর্তৃক সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয় এবং কর্মক্ষেত্রের সব স্তরে লিঙ্গ সমতা বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়।
নারীর ক্ষমতায়নকে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের সামাজিক পরিবর্তন হিসেবে অভিহিত করে রাষ্ট্রদূত বেলাল এ পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি জানান, কতিপয় অভিনব উদ্যোগ বিশেষ করে ক্ষুদ্রঋণ এবং তৈরি পোশাক শিল্পে নারীদের নিয়োগ তাদের সীমাবদ্ধ গণ্ডি অতিক্রম করে উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করেছে।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৮’ তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বেলাল বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভাক রিপাবলিক, চেক রিপাবলিক, সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশের মতো উন্নত দেশকে অতিক্রম করে ৪৮তম স্থান অর্জন করেছে সে সম্পর্কে উপস্থিত সবাইকে অবহিত করেন।
তিনি আরও জানান, ওই প্রতিবেদনে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। এ ক্ষেত্রে কেবলমাত্র আইসল্যান্ড, নিকারাগুয়া, নরওয়ে ও রুয়ান্ডা বাংলাদেশের ওপরে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কর্মজীবী নারীদের অবদান সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানান, গত ৯ বছরে বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মজুরি প্রায় ২৬২ শতাংশ বৃদ্ধি করা হলেও এ সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের মূল্য প্রায় ৬.৫৩ শতাংশ এবং ইউরোপের বাজারে প্রায় ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বেলাল তৈরি পোশাক শিল্পের ব্র্যান্ড কোম্পানি ও ভোক্তাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পণ্যের ওপর একটি ‘অপশনার বারকোড’ যুক্ত করার প্রস্তাব দেন, যার মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের স্বেচ্ছায় সহয়তা করা যেতে পারে। তিনি বিষয়টি বিবেচনা করতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ব্র্যান্ডগুলোকে অনুরোধ করেন।