এতে করে ৯টি জুট মিলের প্রায় ৩৩ হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের পরিবারে ঈদের আনন্দ নেমে এসেছে।
বিজেএমসির আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা মূল্যের পাটজাত পণ্য মজুদ থাকার পরও সরকারের সদিচ্ছায় বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের মজুরি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন (আংশিক) পরিশোধ করা হয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি টাকা।
দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া মজুরি না পেয়ে পাটকলগুলোর শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছিল। বিদেশে পাটপণ্যের বাজার মন্দার কারণে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। মিলের গুদামে পণ্য মজুদ পড়ে আছে বছর জুড়ে। ফলে শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারছিল না বিজেএমসি। তবে সরকারের সদিচ্ছায় শ্রমিকদের চার সপ্তাহের বকেয়া মজুরি ও বোনাস বৃহস্পতিবার পরিশোধ করা হয়েছে।
খালিশপুর জুট মিলের সাবেক শ্রমিক নেতা ইউসুফ আলী শিকদার জানান, বেতন বোনাস পেয়ে শ্রমিক পরিবারের আনন্দ বিরাজ করেছে।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের তাঁত বিভাগের সাধারণ শ্রমিক মো. হানিফ বলেন, আমাদের পাঁচ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া ছিল। সরকারের আন্তরিকতায় আমাদের চার সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ করেছে। সাথে ঈদ বোনাস দিয়েছে। এতে অনেকটাই হতাশা দূর হয়েছে। একই কথা বললেন খালিশপুর জুট মিলের কর্মচারী শফিউল আলম।
খালিশপুর জুট মিলের সাবেক সিবিএ নেতা মিজানুর রহমান মানিক বলেন, পাটকল রক্ষায় সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। সে জায়গা থেকেই সরকার শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করেছে। এ জন্য তিনি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
সূত্র মতে, বর্তমানে পাটকলগুলোতে গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত ৩১ হাজার ৩৬৫ মেট্রিক টন হেসিয়ান, সেকিং, সিবিসি ও ইয়ার্ন পাটজাত পণ্য মজুদ রয়েছে। যার বাজার মূল্য আসে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা। বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের মূল বাজার হচ্ছে, সুদান, ইরান, আফগানিস্তান, সৌদি আরব, ঘানা ও ভারত। কিন্তু গত এক বছর ধরে এই দেশগুলোতে পাটজাত পণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ফলে পাটকলগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। তারপরও শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন আংশিক পরিশোধ করেছে বিজেএমসি।
প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান এস এম মঈনুল করিম জানান, তার মিলে পাঁচ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া ছিল, তিনি চার সপ্তাহের মজুরি একটি বোনাসসহ পরিশোধ করেছেন। সাথে কর্মকর্তাদের দু’ মাসের ও কর্মচারীদের এক মাসের বেতন পরিশোধ করেছেন।
বিজেএমসি খুলনা-যশোর অঞ্চলের সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সরকারের আন্তরিকতায় রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের প্রায় ৩৫ কোটি টাকা বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ করার সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে ১৪ হাজার ৫২৫ জন স্থায়ী, ১৮ হাজার অস্থায়ী এবং ৫২২ জন বদলি শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন।