অবশেষে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন বরিশালের হিজলার ‘ভূমিহীন’ কলেজছাত্রী আসপিয়া ইসলাম কাজল। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন তিনি। রবিবার বিকালে ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসপিয়া।
স্বপ্নের চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ায় উৎফুল্ল আসপিয়া ও তার পরিবার। তার মা ঝরনা বেগম প্রধানমন্ত্রীসহ দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
জেলা পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র আসপিয়ার হাতে তুলে দিয়েছেন হিজলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজান। নিয়োগপত্রে আগামী ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে তাকেসহ চূড়ান্ত নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য সামগ্রী নিয়ে জেলা পুলিশ লাইনে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকতা শেষে মহিলা টিআরসিদের ৬ মাসের প্রশিক্ষণের জন্য রংপুরে পাঠানো হবে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সেই আসপিয়া এবার জমিসহ ঘর পাচ্ছেন, চাকরি পাওয়ার গুজব
জানা গেছে, পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে বরিশাল জেলায় ১০ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ সদর দপ্তর। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল জেলা থেকে টিআরসি পদে সাত জন নারী ও ৪১ জন পুরুষ নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী হিজলা থেকে অনলাইনে আবেদন করেন আসপিয়া ইসলাম।
এরপর, ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন আসপিয়া। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও কৃতকার্য হন। ২৪ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আসপিয়া।
২৬ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে কৃতকার্য হন আসপিয়া। তবে চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নিয়োগ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। কারণ তিনি বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন। এই নিয়োগ পাওয়ার অন্যতম শর্ত ছিল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
পরে গত ৮ ডিসেম্বর বরিশাল জেলা পুলিশ লাইনে রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামানের কাছে গিয়েছিলেন আসপিয়া। ডিআইজি আসপিয়ার প্রতি সমবেদনা জানালেও তাকে চাকরি দেয়ার বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি।
বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার জানান, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হলে তার কার্যালয় আসপিয়াকে জমিসহ ঘর এবং যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।