রবিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র এএসপি সুমন কুমার দাস ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।
আগামী ২৬ জুন মামলার ধার্যকৃত তারিখে চার্জশিট আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজাম উদ্দিন।
তিনি জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে এবং পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে পৃথক দুটি চার্জশিট ১২৪ জনের বিরুদ্ধে দাখিল করা হয়েছে।
অপর একজন আসামি নাবালক হওয়ায় তার জন্য শিশু আইনের একই ধারায় পৃথক দুটি চার্জশিট দাখিল হয়েছে।
এর আগে ২০১৭ সালে দেশব্যাপী ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা বাড়ার প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়া কিছু তথ্যের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলে অভিযান চালায় সিআইডি।
এ সময় গ্রেপ্তার হয় মামুন ও রানা নামে দুই শিক্ষার্থী। তাদের দেয়া তথ্যে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে গ্রেপ্তার হয় ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী রাফি।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর শাহবাগ থানায় মামলা হয়।
চার্জশিটের বিষয়ে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহা. শফিকুল ইসলাম জানান, দেড় বছরের দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত প্রশ্নফাঁস মামলার চার্জশিট প্রস্তুত করা হয়েছে।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে পর পর দুই বছরে ফাঁস করা প্রশ্ন নিয়ে সাভারের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার একটি বাসায় ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছিল তারা।
চক্রের মাস্টারমাইন্ড নাটোর জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এছামী, প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুর, তার আত্মীয় সাইফুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বনি ও মারুফসহ মোট ২৮ আসামিকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে প্রশ্নফাঁস চক্রটির ‘মূলোৎপাটন’ করে সিআইডি।
সিআইডি প্রধান আরও জানান, আসামি ১২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট করা হলেও আরও ৫৫ জন আছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের নাম ঠিকানা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
গত দেড় বছরে সিআইডির টানা অভিযান এবং একের পর এক আসামিকে গ্রেপ্তারের ফলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এসএসসি-এইচএসসিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চক্রের মূলহোতাদের অঢেল অবৈধ অর্থ-সম্পদের খবর পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তাৎক্ষণিক তদন্তে প্রায় ২০ কোটি টাকার নগদ অর্থ ও সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে ইতোমধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মানিলন্ডারিং মামলাও করেছে সিআইডি।
ঢাবির জড়িত যারা
মো. ইব্রাহিম, অলিপ কুমার বিশ্বাস, মো. মোস্তফা কামাল, মো. হাফিজুর রহমান, মো. মাসুদ রহমান তাজুল, মো. রিমন হোসেন, মো. মহিউদ্দিন রানা, মো. আইয়ুব আলী বাঁধন, আবদুল্লাহ আল মামুন, ইশরাক হোসেন রাফি, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. মামুন মিয়া, অসিম বিশ্বাস, মো. অনোয়ার হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম, মো. হাসমত আলী সিকদার, হোসনে আরা বেগম, গোলাম মো. বাবুল, টি এম তানভির হাসনাইন, সুজাউর রহমান সাম্য, রাফসান করিম, মো. আখিনুর রহমান অনিক, নাজমুল হাসান নাঈম, ফারজাদ ছোবহান নাফি, আনিন চৌধুরী, রকিবুল হাসান ইসামী, বনি ইসরাইল, মো. মারুফ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, খান বহাদুর, কাজী মিনহাজুল ইসলাম, নাহিদ ইফতেখার, রিফাত হোসেন, মো. বায়জিদ, ফারদিন আহম্মেদ সাব্বির, তানভির আহম্মেদ মল্লিক, প্রসেনজিৎ দাস, মো. আজিজুল হাকিম, নাভিদ আনজুম তনয়, সালমান এফ রহমান হৃদয়, সজীব আহাম্মেদ, শিহাব হোসেন খান, এনামুল হক আকাশ, মোশারফ মোসা, মোহায়মেনুল ইসলাম বাঁধন, সাইদুর রহমান, আব্দুর রহমান রমিজ, গোলাম রাব্বী খান জেনিথ, উৎপল বিশ্বাস, বেলাল হোসেন বাপ্পী, মো. মশিউর রহমান সমীর, মো. আবু জুনায়েদ সাকিব, মোস্তাফিজ-উর-রহমান মিজান, আবুল কালাম আজাদ, শরমিলা আক্তার আশা, মাসুদ রানা, জেরিন হোসাইন, শেখ জাহিদ বিন হোসেন ইমন, তাজুল ইসলাম সম্রাট, আবির হাসান হ্নদয়, মোর্শেদা আক্তার, সালমান হাবিব আকাশ, আলামিন পৃথক, শাহ মেহেদী হাসান হৃদয়, অনিকা বৃষ্টি, ফিওনা মহিউদ্দিন মৌমি, সিনথিয়া আহম্মেদ, শাবিরুল ইসলাম সনেট, মো. লাভলুর রহমান লাভলু, মো. ইছাহাক আলী ইছা, মো. আব্দুল ওয়াহিদ মিশন, তানজিনা সুলতানা ইভা, ইশরাত জাহান ছন্দা, মো. আশেক মাহমুদ জয়, নাফিসা তাসনিম বিন্তী, প্রনয় পান্ডে, নুরুল্লাহ নয়ন, জিয়াউল ইসলাম, মো. আশরাফুল ইসলাম আরিফ, জাকিয়া সুলতানা, মো. শাদমান শাহ, সাদিয়া সিগমা, মো. রবিউল ইসলাম রবি, মেহেজাবীন অনন্যা, মো. রাকিবুল হাসান, এম ফাইজার নাঈম সাগর, সাদিয়া সুলতানা এশা, সামিয়া সুলতানা ও ফাতেমা আক্তার তামান্না।