জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ফিলাটেলিক সংগঠনসমূহের আয়োজনে ঢাকা জিপিওতে বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেটের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
শনিবার ডাকভবন অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেট সমূহকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সম্পদ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডাকটিকেট বাণিজ্যিক উপাদান হিসেবে দেখি না। ডাকটিকেট ইতিহাসের স্বাক্ষী। এটি ব্যক্তি দেশ, জাতি, যুগ ও সভ্যতার প্রকাশ ঘটায়। আমাদের ডাকটিকেট পৃথিবীতে ভাষাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজ সাহিত্য বিশ্বে ৩৫ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জীবন জীবীকার ইতিহাস ঐতিহ্য প্রকাশ করছে।’
আরও পড়ুন: অনলাইনে ডাকটিকেট প্রদর্শনী একটি মাইলফলক: জব্বার
এ সময় মোস্তাফা জব্বার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন বর্ষ উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে অজানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী ডাকটিকেটের মাধ্যমে প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আমাদের জীবনে আরেকবার আসবে না। বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ঘটনাবহুল ইতিহাস প্রকাশের এই সুযোগ আমরা হারাতে চাই না। স্মারক ডাকটিকেটের মাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে মানুষের কাছে এটি তুলে দিতে পারলে তা হবে বড় একটি কাজ এবং এটি করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: প্রচলিত শিক্ষায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকোচিত হয়ে আসছে: মোস্তাফা জব্বার
মন্ত্রী প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেট ঢাকা কেন্দ্রীক না করে দেশের সকল অঞ্চলে তা সংগ্রাহকদের হাতের নাগালে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
কম্পিউটারে বাংলাভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আগামী দিনের সমৃদ্ধ জাতি বিনির্মাণের শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাদের হৃদয়ে ধারণ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেট থেকে বাঙালির মহামানব সম্পর্কে সহজে জানতে পারবে। এই তাগিদ থেকেই মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত ডাকটিকেট প্রকাশনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনের অনেক অজানা অধ্যায় ধারণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।’
আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসেও ডাক বিভাগের গৌরবোজজ্জ্বল অর্জন রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মুজিবনগর সরকার প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব প্রকাশে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে। একাত্তরের ২৯ জুলাই মুজিবনগর সরকার এবং যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্স থেকে প্রকাশিত ভারতীয় নাগরিক বিমান মল্লিকের ডিজাইন করা ৮টি স্মারক ডাকটিকিট বিশ্বে আমাদের জাতিস্বত্তা, রাষ্ট্রস্বত্তা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব তুলে ধরা হয়েছে যা সারা দুনিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সবার জন্য সুলভ ব্রডব্যান্ডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে: মোস্তাফা জব্বার
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন ও বাংলাদেশ ফিলাটেলিক সংগঠনসমূহের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।