দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা জানিয়েছেন, দেশের মধ্যে ভারী বৃষ্টি আর উজানের ঢলে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই, মুহুরী, ফেনী, হালদা নদীর পানি ৭টি স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই ও সারিগোয়াইন নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।’
বুধবার (২১ আগস্ট) বিকালে সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। এছাড়া বন্যা আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী: হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত, নিহত ১
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল কতিপয় পয়েন্টে সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।’
এ কারণে ওই সব অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে জানান তিনি।
বন্যায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘বন্যা আক্রান্ত জেলার জেলা প্রশাসক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে।’
বন্যা আরও বাড়বে কি না- জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী কয়েক ঘণ্টার সেটার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকিটা আপনাদের আগামীকাল বৃহস্পতিবার বলতে পারব।’
ত্রাণ কার্যক্রমের বিষয়ে- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন বলেন, ‘বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ কাজের জন্য নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চাল-শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, আমাদের জেলা গুদামগুলোতে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। প্রকৃত রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা দুর্গতদের কাছে আরও ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী টিম ফেনীতে পৌঁছে গেছে। তারা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। সেখানে সেনাবাহিনীর ৬টি বোট চলে গেছে।’
যুগ্মসচিব বলেন, ‘ফেনী জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ৬০০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। অন্যান্য জেলাগুলোর প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ফেনী জেলা।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় নিহত ১৮৭