দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) সৌদি আরবের বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য জমির প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সফররত সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী ড. মাজিদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবি-এর নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ প্রস্তাব দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবকে বাংলাদেশে একটি তেল শোধনাগার স্থাপনের আহ্বান জানান, যেখানে অপরিশোধিত তেলসহ সব ধরনের তেল পরিশোধন করা যাবে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক স্বার্থে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে সৌদি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন।
প্রেস সচিব বলেন, সৌদি আরবের প্রধান বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এই প্রেক্ষাপটে তিনি আমলাতান্ত্রিক বিলম্বের সমাধান করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সালমান এফ রহমানের বৈঠক
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ ও ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিশাল বাজার রয়েছে উল্লেখ করে বলেন যে তার সরকার নৌপথসহ সব ধরনের যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন সহজ করতে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নদীগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য ড্রেজিংয়ের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সৌদি আরবে যাওয়ার আগে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভালোভাবে আরবি ভাষা জানার সুবিধার্থে একটি আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে চায়, যাতে তারা সহজেই আরবি ভাষাভাষী মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
সৌদি মন্ত্রী যখন বলেন যে তাদের ক্রাউন প্রিন্স বাংলাদেশ সফরের জন্য আগ্রহী, তখন তার দেশ সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্সকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
আরও পড়ুন: সৌদির রাজধানী রিয়াদে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত
সৌদি মন্ত্রী দেশটির ক্রাউন প্রিন্স-এর বাংলাদেশ সফরে আগ্রহের বিষয় উল্লেখ করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দেশ ক্রাউন প্রিন্সকে গ্রহণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
সৌদি মন্ত্রী ওমরাহ পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সৌদি আরব সফরের আমন্ত্রণ জানান।
সৌদি মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি ও উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবের দ্রুত উন্নয়নেরও প্রশংসা করেন।
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে সৌদি আরবের মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
মন্ত্রী ড. মাজিদ বলেন যে বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।
তিনি বলেন, গত ১০ মাসে সাড়ে ছয় লাখ বাংলাদেশি চাকরি নিয়ে সৌদি আরবে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঢাকায় সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আইসিটি খাতে অংশীদারিত্বে সৌদির আগ্রহ প্রকাশ