ঢাকা, ১২ অক্টোবর (ইউএনবি)- আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি সফরকারী দল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফের দলটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এসে বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের নেতৃত্ব দেন সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
আইএমএফের বাংলাদেশের মিশন প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে দলটি বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা করতে ৪ অক্টোবর ঢাকায় আসে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও তাদের সহযোগী সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের পর এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোট ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের দ্বিতীয় ধাপ মুক্তির বিষয়ে আলোচনার পর দলটির ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ত্যাগ করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ঋণের প্রথম কিস্তির টাকা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের নভেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ টিম বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে মূলত এখন বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়টি নিয়ে।
২০২২ সালে বিদ্যুৎ খাত ২৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকার বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যা ২০১৮ সালে ছিল ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন কর্মকর্তা বলেন, বিপিডিবি প্রতি ইউনিটে প্রায় ৫ টাকা লোকসান গুনছে।
সরকারের ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন খরচ ও বিক্রয় হারের ব্যবধান মেটানো হচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আইএমএফ বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ভর্তুকি হ্রাস করার জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানো।
শর্ত অনুযায়ী, সরকার বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক প্রায় ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা (প্রতি ইউনিট) করে।
কিন্তু বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরও বিপিডিবি ব্যাপক লোকসান গুনছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আইএমএফ শুল্ক আরও বাড়ানোর জন্য জোর দিচ্ছে, তারা বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমাতে ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন আলোচনা করেছে।
সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ বিভাগ অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে এক বার্তায় জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে তাদের বিদ্যুতের দাম আর বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন ডিভিশনের (আইএমইডি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বিপিডিবির মোট ক্ষতি হতে পারে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা- অর্থাৎ গড়ে বার্ষিক ক্ষতি হবে ৫৬ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা।