দেশের দুটি এলএনজি টার্মিনালের অন্যতম সামিট গ্রুপের ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট পুনরায় চালু হলেও সার্বিক গ্যাস সরবরাহের উন্নতি হয়নি। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সরবরাহ আবারও কমে গেছে।
কর্মকর্তারা জানান, দেশের অন্যতম বৃহৎ গ্যাস সরবরাহের উৎস বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে ১৩ এপ্রিল থেকে রুটিন রক্ষণাবেক্ষণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ১৬ এপ্রিলের মধ্যে পূর্ণ উৎপাদনে ফিরে আসবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ও বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের অপারেটর শেভরনের কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে গ্যাস সরবরাহের ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অনিয়ম, জরিমানা
পেট্রোবাংলার সরকারি তথ্যে দেখা যায়, বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন সোমবার ৪৫৩ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। যেখানে এর নিয়মিত উৎপাদন ১২০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
সামিট গ্রুপ অবশেষে এলএনজি টার্মিনাল চালু করতে সফল হয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানায়। ১২ এপ্রিল থেকে আমদানি করা এলএনজির পুনরায় গ্যাসফিকেশন শুরু করেছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার তথ্য দেখায়, সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল চালু হওয়ার পর আমদানি করা গ্যাসের সরবরাহ দিনে ১৬২ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়ে ৬৩০ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ৭৯২ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।
পেট্রোবাংলার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, '১৪ এপ্রিল গ্যাস সরবরাহ আরও বেড়ে ৯৩৬.৩০ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে।’
মহেশখালীতে বেসরকারি খাতে স্থাপিত দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে, যার মোট গ্যাসফিকেশন ক্ষমতা ১১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। একটি ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জির মালিকানাধীন ও পরিচালিত এবং অন্যটি ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন সামিট গ্রুপের মালিকানাধীন ও পরিচালিত।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচিতে গেলে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির অবনতি হয়। গত ৩ মার্চ এটি আবার পরিষেবা চালু করার কথা ছিল।
পেট্রোবংলার কর্মকর্তা বলেন, ‘কিন্তু প্রাথমিকভাবে এটি শিডিউল অনুযায়ী উৎপাদনে আসতে ব্যর্থ হয় এবং শেষ পর্যন্ত কয়েকদিন পর আবার উৎপাদন শুরু করে।’
সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের তথ্যে দেখা যায়, ঈদের ছুটির শেষে রবিবার ও সোমবার ৩ হাজার ৬৩২ মিলিয়ন ঘনফুট কম চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস সরবরাহ ছিল ২ হাজার ৩৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, বিদ্যুৎ সরবরাহে চাহিদা কম থাকলেও সোমবার সারাদিনের ব্যস্ত সময়ে দেশে ৩০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে।
পিজিসিবির তথ্য বলছে, সকাল ১০টায় দেশে লোডশেডিং হয় ৩০৫ মেগাওয়াট, যখন চাহিদা ছিল ১১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট।
সোমবার সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ চাহিদা ১৪ হাজার মেগাওয়াট হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এবং কর্মকর্তারা আজ রাতে আরও লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা করছেন।
আরও পড়ুন: গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে ৩ কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার