ইউজিসি থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ০৪ মার্চ ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও ইউজিসি নিয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
এ সম্পর্কে ইউজিসির বক্তব্য হলো- তদন্ত কমিটি পেশাদার মনোভাব নিয়ে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ, সরেজমিনে পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত হয়ে একটি বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
‘তদন্তটি দীর্ঘ সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো পর্যায়ে শিক্ষমন্ত্রী বা অন্য কারও প্রভাব বিস্তার করার কোনো ধরনের সুযোগ নেই। কমিশন দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চায় যে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত সম্পূর্ণ স্বাধীন ও প্রভাবমুক্তভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে,’ বলছে ইউজিসি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন দেশের উচ্চশিক্ষার বিস্তার, গুণগত ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের দেখভাল, আর্থিক মঞ্জুরী ও গবেষণা সহায়তা দিয়ে আসছে। ইউজিসি সব সময় নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে কাজ করছে এবং কখনোই এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুবিভাগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হলে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ইউজিসিকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অনিয়মের অভিযোগটি পরিকল্পনা সংক্রান্ত হওয়ায় ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য, পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পদমর্যাদা অনুসারে তারা কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য ও সদস্য সচিব হয়েছেন। তদন্ত কমিটি পেশাদার মনোভাব নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিশ্চিত করুন: ইউজিসি চেয়ারম্যান
দেশের অগ্রগতির জন্য গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ: ইউজিসি চেয়ারম্যান
চিকিৎসকের অবহেলায় বেরোবি ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত সম্পূর্ণ স্বাধীন ও প্রভাবমুক্তভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে দাবি করে কমিশন বলছে, ‘সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ শিক্ষামন্ত্রী ও তদন্ত কমিটি নিয়ে ব্যক্তিগত বিষোদগার করেছেন তা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। উপাচার্যের মতো দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত একজন ব্যক্তির কাছ থেকে কোনোভাবেই এটি প্রত্যাশিত নয়।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তিনি কখনো কোনো বিষয়ে প্রভাব বিস্তারের বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি। কোনো উপাচার্য বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে এমন কোনো ধরনের পরামর্শ বা নির্দেশনা তিনি কখনোই প্রদান করেননি। বরং তিনি বিভিন্ন সভা-সেমিনারে গুণগত ও মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, ও দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব দিয়েছেন।
‘ইউজিসি জাতির পিতার হাতে গড়া একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে কমিশন সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।’ সকলকে এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে।