প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে জলবায়ু সংকট থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরানো উচিত নয়।
প্যারিস চুক্তির অধীনে অর্থায়ন ও প্রযুক্তির বিষয়ে উন্নত দেশগুলোর দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও আমরা বিশ্বকে জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে দিতে পারি না।’
বুধবার বাংলাদেশ থেকে ঘানায় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) প্রেসিডেন্সি হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো সিভিএফের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও ফোরামের কাজ পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের প্রেসিডেন্সির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকার হবে জলবায়ু ঝুঁকি থেকে সহনশীলতা ও সমৃদ্ধিতে আখ্যান পরিবর্তন করা।’
তার নেতৃত্বে সিভিএফ অধিকাংশ উদ্দেশ্য এবং আরও অনেক কিছু অর্জন করতে পারে বলে জানান তিনি।
নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘানাকে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী ঘানার প্রেসিডেন্ট আকুফো-আডোর নজরে সিভিএফ নেতৃত্ব স্থিতিশীল থাকবে।
তিনি বলেন, ট্রোইকার সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ঘানাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের প্রেসিডেন্সি কপ-২৬ এর ফলাফলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছিল। মহামারি সত্ত্বেও আমরা জলবায়ু সংকটের দিকে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’
জলবায়ু উদ্যোগ বাড়াতে দেশগুলোর জন্য মিডনাইট সারভাইভাল ডেডলাইনও চালু করেছে সিভিএফ।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এনডিসি জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। প্রায় ৭০টি দেশ আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়।’
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সির সময় এটি সদস্যদের জলবায়ু কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সিভিএফ-ভি২০ যৌথ মাল্টি-ডোনার ফান্ড গঠন করে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ও মার্শাল আইল্যান্ড বীজ তহবিল প্রদান করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০২১ সালে বাংলাদেশ আয়োজিত ভি২০ ক্লাইমেট ভালনারেবলস ফাইন্যান্স সামিটে আগামী পাঁচ বছরে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিতরণ পরিকল্পনার জন্য চাপ দেয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা গ্লাসগোতে এটি বাস্তবায়ন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-গ্লাসগো ঘোষণা সিভিএফের মূল দাবি ও প্রতিশ্রুতির সারসংক্ষেপ।
তিনি বলেন, ‘আমরা উচ্চ নির্গমনকারী দেশগুলোর প্রতি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রতিশ্রুতি বাঁচিয়ে রাখতে এবং তাদের বার্ষিক জলবায়ু উদ্যোগ বাড়াতে আহ্বান নবায়ন করেছি।’
বাংলাদেশের মেয়াদে পাঁচজন থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু কার্যক্রমের জন্য জনমত গঠনে সিভিএফ-ভি২০ সংসদীয় গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সির সময় অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য সিভিএফ ও জিসিএ সচিবালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।