স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনও হাত থাকেনা। স্বাস্থ্যখাত চিকিৎসা দিতে পারে, কিন্তু মশা মারার কাজ স্বাস্থ্যখাতের নয়।
বুধবার সকালে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের অডিটোরিয়াম হলে জাতির পিতার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মাল্টি পারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী ।
মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুততম সময়ে ঢাকার ডিএনসিসি হাসপাতালের এক হাজার বেড থেকে ৫০০ এবং বিএসএমএমইউ এর নতুন নির্মিত ফিল্ড হাসপাতালের ৪০০ বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। আরও লাগলে আরও বৃদ্ধি করা হবে। তবে মশা কমাতে হবে, এবং একই সঙ্গে দেশের মানুষকে মশা যাতে না কামড়াতে পারে সে বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। বাড়িতে রাতে ঘুমানোর আগে মশাড়ি লাগিয়ে ঘুমাতে হবে এবং বাসা বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে পারবে কিন্তু মশা মারতে পারবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত বর্তমান সরকারের কোনও উন্নয়নই চোখে দেখতে পায়না। তারা শুধু ক্ষমতায় যাবার জন্যই রাজনীতি করে। তারা দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভেবে রাজনীতি করে না। ক্ষমতার লোভে তারা পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুরিয়ে মারতেও দ্বিধা করেনা। তারা সামান্য অজুহাতেই মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। সিলেটে বন্যার সময় তারা বন্যার্ত মানুষের জন্য কিচ্ছু করেনি। তাদের সময় বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে আসতো, বিদ্যুৎ থাকতোই না। তারা অফিসে, ঘরে এবং কল কারখানায় কোথাও বিদ্যুৎ দিতে পারে নাই। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য কয়েক ঘন্টা লোড শেডিং নিয়েই বিরাট রাজনীতি শুরু করেছে বিএনপি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। ইউকে'তে এখন মানুষ খাবার বাঁচাতে দুই বেলা খাচ্ছে। কই আমাদের দেশে তো এরকম হয়নি। দেশের মানুষ যাতে অর্থনৈতিক চাপে না পড়ে এজন্য বিদ্যুতের কিছু লোড শেডিং হচ্ছে। এগুলো তো সাময়িক সমস্যা। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের মতো দেশ এখন কোনও অকার্যকর, ব্যর্থ ও দুর্নীতিতে পরপর চার বার চ্যাম্পিয়ন নয়। করোনার এত বড় ধাক্কার পরও বাংলাদেশের মানুষ অভাবে না খেয়ে নেই। দেশের মানুষকে খাবার বাঁচাতে দু’বেলা খেতে হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভালো থাকা নিয়ে ভাবেন, আর বিএনপি জামায়াত দেশকে লুটেপুটে খাবার জন্য ক্ষমতায় যেতে চায়। এগুলো দেশের মানুষ বোঝে। আর বোঝে বলেই দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সঙ্গেই আছে। দেশের মানুষ আবারও শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় এনে সেটাই প্রমাণ করে দেবে।
শেখ রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের ১৮ জন সদস্যের নির্মম হত্যাকাণ্ডে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার যোগসূত্র উল্লেখ করতে গিয়ে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট ভবনে অবস্থিত বহুতল মাল্টি পারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মুহ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর মাহমুদ হাসান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. সিরাজুল ইসলাম শিশির, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান, এবং গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. গোলাম কিবরিয়া সহ অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বৃন্দ।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাতে এখন সুবাতাস বইছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ফি নির্ধারণ করবে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী