দেশের অভ্যন্তরে মর্টার শেল পড়া এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় বিমান থেকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মিয়ানমারের আকাশ সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোকে তলব করে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে অবিস্ফোরিত মর্টার শেল
রবিবার মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজ (রবিবার) আবার তাদের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছি। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি।’
মোমেন জানান, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলছে, এতে তিনি উস্কানিমূলক কিছু মনে করছেন না এবং বাংলাদেশ তাদের উদ্বেগ মিয়ানমারের সঙ্গে শেয়ার করেছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের কাছে একটি কূটনৈতিক নোট হস্তান্তর করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের কোনো নাগরিক যাতে নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সরকার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক করেছে।
সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩ সেপ্টেম্বর বিপি ৪০ থেকে ৪১ এর মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুটি মর্টার শেল পড়ে।
মহাপরিচালকের (মিয়ানমার উইং) সঙ্গে সাক্ষাতকালে রাষ্ট্রদূতকে আরও বলা হয় যে এই ধরনের কর্মকাণ্ড শান্তিপ্রিয় জনগণের সেফটি এন্ড সিকিউরিটির জন্য ‘গুরুতর হুমকি’, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন এবং দুই ভালো প্রতিবেশির সম্পর্কের পরিপন্থী।
আরও পড়ুন: ‘বিজিবি সতর্ক, মিয়ানমার থেকে এখন কেউ ঢুকতে পারবে না’: শাহরিয়ার আলম
রাখাইন থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের বাসিন্দাদের কোনো অনুপ্রবেশ যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্যও রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এসময় জোর দিয়ে বলা হয় যে রাখাইনে তাদের জন্মস্থানে একটি নিশ্চিত, নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ বাংলাদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের টেকসই ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের জন্য অপরিহার্য।
রাষ্ট্রদূত এসব ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান।
এর আগে মিয়ানমারের ভূখণ্ড ব্যবহার করে উৎক্ষেপণ করা মর্টার শেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাওয়া গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২১ আগস্ট ও ২৮ আগস্ট মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং বাংলাদেশের গুরুতর উদ্বেগ জানিয়ে তার কাছে প্রতিবাদ নোট হস্তান্তর করে।
ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে উত্থাপন করেছে।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির অবনতির কারণে এখন মিয়ানমার থেকে কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ ভালোভাবে প্রস্তুত।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মর্টার শেল নিক্ষেপের পর মিয়ানমার পক্ষকে দুইবার সতর্ক করা হয় এবং এ ব্যাপারে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার থেকে গুলি চালানোর পর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে: পুলিশ