উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোই নতুন সরকারের প্রধান কাজ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নিজ নির্বাচনি এলাকার (গোপালগঞ্জ-৩) নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'গ্রামাঞ্চলে বড় কোনো সমস্যা দেখছি না, কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষ এবং ঢাকা শহরের বাসিন্দারা বিভিন্ন পণ্যের দাম নিয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাজারে খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই।
‘কিন্তু মনে হচ্ছে, কেউ কেউ মানুষকে হয়রানি করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। এজন্য আমাদের তদারকি যথাযথভাবে বাড়াতে হবে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের হামলার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে আরেকটি আঘাত আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, তার সরকারের বিরুদ্ধে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, 'এই ষড়যন্ত্র দুই ভাগে বিভক্ত। ষড়যন্ত্রকারীদের এক দলে রয়েছে বিচার নিশ্চিত হয়েছে এমন খুনি, অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধী। আরেক দল ষড়যন্ত্র করছে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান।
আরও পড়ুন: কে পেলেন কোন মন্ত্রণালয়
তিনি বলেন, 'আমি একজন নারী। একজন নারী হয়ে আমি পাঁচবার ক্ষমতায় এসেছি, যা অনেক দেশ মেনে নিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে অনেক দেশেরই বাংলাদেশের দিকে খারাপ দৃষ্টি রয়েছে।
দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বসে কাউকে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে দেবেন না।
‘আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, আমরা স্বাধীনভাবে এগিয়ে যাব, আমরা আকারে ছোট হতে পারি, কিন্তু আমাদের বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে এবং তারা আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।’
তাকে আবার ক্ষমতায় আসতে বাধা দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যারা তাদের চরম অনুগত হয়ে থাকবে, তারা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, যাতে তারা এ দেশের সঙ্গে খেলতে পারে। দেশের জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে এর উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।’
তিনি বলেন, বিএনপি যে নির্বাচনে অংশ নেবে না এটাই স্বাভাবিক ছিল।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের শ্রদ্ধা
তিনি বলেন, ‘এটা জানা ছিল। তাদের নেতা কোথায়? নেতা হিসেবে তাদের কেউ নেই। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে আগুন দেওয়ার মতো জঘন্য কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন, যার ফলে নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনগুলোতে নতুন সরকারকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে।
দ্রুত মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা গঠনে বিলম্বের যৌক্তিকতা কী হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিতে কখনো দ্বিধা করি না। আমরা জানতাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং আগেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল যে, নির্বাচনে জিতলে বা হেরে গেলে আমরা কী করব, কেন আমরা সময় নেব, কেন আমি সময় নষ্ট করব।’
তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি প্রতিটি দিন ব্যবহার করতে চান।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সব ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সবার কাছে দোয়া চান।
আরও পড়ুন: রমজানে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর