বুধবার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে প্রসিকিউটর ছিলেন মোখলেসুর রহমান বাদল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
রায় ঘোষণার পর প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী তামিম বলেন, ‘এই রায়ে আসামি সংক্ষুব্ধ এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।’
এর আগে, রায়ের জন্য গত মঙ্গলবার এই দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। তার আগে ১৭ অক্টোবর এ মামলায় শুনানি শেষে সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমান) রাখেন।
গত বছরের ২৭ মার্চ এ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। পরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। পরে একই বছরের ৮ আগস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
অভিযোগপত্রে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজশাহীর বোয়ালীয়ায় ১০ জনকে হত্যা, দুজনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩টি বাড়ির মালামাল লুট করে আগুন দেওয়ার অপরাধ উঠে আসে। এসব অপরাধে এ আসামির বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।
আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে যে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো হলো- ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টা থেকে পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত তিনি স্থানীয় অন্যান্য রাজাকার ও পাকসেনারা বোয়ালিয়া থানার সাহেব বাজারের ১ নং গদিতে (বর্তমানে জিরো পয়েন্ট) হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বাবর মণ্ডলকে আটক করেন।
পরে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত সেনা ক্যাম্পে নিয়ে দিনভর নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে মরদেহ মাটিচাপা দেন।
১৯৭১ সালের ২ নভেম্বর রাত প্রায় ২টার দিকে এ আসামি, স্থানীয় রাজাকার ও ৪০ থেকে ৫০ পাকসেনা বোয়ালিয়া থানার তালাইমারী এলাকায় হামলা চালান।
এ হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদ মিয়া, আজহার আলী শেখসহ ১১ জনকে আটক করে নির্যাতন চালান। এসময় তারা তালাইমারী এলাকার ১২ থেকে ১৩টি বাড়ি লুট করেন।
পরে ৪ নভেম্বর মধ্যরাতে আটক ১১ জনকে রাবির শহীদ শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত অস্থায়ী ক্যাম্প ও টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে নয়জনকে গুলি করে হত্যা করে মাটিচাপা দেন।