রাজশাহীতে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। তিনি নগরীর বুধপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে তার ওপর হামলা চালানো হয়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় থানায় সোপর্দ করা হয়। সেখান থেকে হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান তিনি।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে শনিবার রাতে বিনোদপুর বাজারে মাসুদের ওপর হামলা হয়। পরে একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু মতিহার থানায় ৫ আগস্টের সহিংসতার কোনো মামলা না থাকায় তাকে বোয়ালিয়া থানায় সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।’
ওসি আরও বলেন, ‘গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মাসুদ। তার শারীরিক অবস্থা দেখে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। এখন পরিবার চাইলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বোয়ালিয়া থানা হাজতে শুয়ে থাকা অবস্থায় মাসুদ বলেন, ‘আমি বিনোদপুরে ওষুধ নিতে এসেছিলাম। আমি ছাত্রলীগ করতাম ওই জন্য ধরেছে।’
মাসুদকে যখন আনা হয়, তখন বোয়ালিয়া থানায় ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। ৫ আগস্ট এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দুই যুবককে ধরে থানায় এনেছিলেন তিনি।
মাসুদের মৃত্যুর খবর শুনে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা যে দুজনকে নিয়ে গিয়েছিলাম, তাদের নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। তার মধ্যেই আহত অবস্থায় একজনকে আনতে দেখলাম। কিন্তু কারা তাকে এনেছিল তা চিনতে পারিনি। পুলিশের এটা ভালোভাবে দেখা উচিত ছিল।’
জানা গেছে, দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর নিজের দুর্দশার কথা জানিয়ে একটি চাকরি চেয়ে ২০২২ সালের শেষের দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লেখেন মাসুদ। এরপর ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মীর তাফেয়া সিদ্দিকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পাঠানো চিঠিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে নিয়োগ দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিয়োগপত্র পেয়ে ২২ ডিসেম্বর চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। সেই থেকে এ পদেই চাকরি করতেন তিনি।