বুধবার বিকালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান র্যাবের মহাপরিচালক।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের কাপাশিয়া থেকে রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমডির কাছ থেকে সাহেদের পালানোর সম্ভাব্য ধারণা পাওয়া গিয়েছিল, যোগ করেন র্যাবের এ কর্মকর্তা।
তিনি জানান, তারে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা র্যাব-৬ এর সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করে এবং অবশেষে সাহেদকে ভারতে পালানোর চেষ্টা করার সময় দেবহাটা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের ডিজি জানান, বুধবার সকালে সাহেদকে ঢাকায় আনা হয়েছে।
এদিন দুপুরে উত্তরায় সাহেদের অন্য একটি অফিসে অভিযান চালায় র্যাব এবং তার ওই অফিস থেকে এক লাখ ৪৬ হাজার জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাহেদ নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। তিনি নিজেকে ‘ক্লিন ইমেজের’ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা করতেন বলেও জানান র্যাব কর্মকর্তা।
র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘তবে, সাহেদ একজন প্রতারক এবং চালাক ব্যক্তি। এমএলএম ব্যবসার মাধ্যমে তিনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন। আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারি যে তার বিরুদ্ধে সারাদেশের বিভিন্ন থানায় প্রায় ৫০টি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো আমরা যাচাই করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের ডিজি জানান, গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য সাহেদ গত ৯ দিনে কক্সবাজার, ঢাকা, কুমিল্লা ও সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিল।
রিজেন্ট হাসপাতালে করোনাভাইরাসের ভুয়া সনদ দেয়ার অভিযোগে উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা মামলায় সাহেদকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার কাছে সোপর্দ করা হবে। ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা এ মামলাটির তদন্ত করছে।
কোভিড-১৯ এর ভুয়া সনদ দেয়ার অভিযোগে সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর সীমান্ত থেকে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এসময় র্যাব সদস্যরা তার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং কয়েকটি গুলি উদ্ধার করেছে।
গত ৬ জুলাই কোভিড-১৯ এর ভুয়া সনদ দেয়া ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখায় অভিযান চালানোর পর থেকে পালিয়ে ছিলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ।
কোভিড-১৯ এর ভুয়া সনদ দেয়ার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়সহ উভয় হাসপাতাল সিলগালা করে দেয়া হয়েছে এবং এর চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এছাড়াও গত ১৪ জুলাই চট্টগ্রামে একজন রপ্তানিকারকের কাছ থেকে ৯১ লাখেরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে সাহেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।