আজ ৬ ডিসেম্বর, হানাদারমুক্ত দিবস পালন করছে উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে লালমনিরহাট থেকে পালিয়ে যায়। এর মাধ্যমে মুক্ত হয় পুরো জেলা।
মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে ৩ মার্চ পাকসেনারা সড়কপথে লালমনিরহাট দখল করে। দখলের পর বিহারী, রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহায়তায় দখলদাররা শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এসব নৃশংসতার সাক্ষী হয়ে আছে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বহু গণকবর।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন জানান, পাকিস্তানি বাহিনী হেলিকপ্টারযোগে লালমনিরহাটে পৌঁছালে স্থানীয় পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ ওসি মীর মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এতে বহু পাক সেনা ও অবাঙালি সহযোগী নিহত হয়। প্রতিশোধ নিতে দখলদাররা বাঙালিদের ওপর নির্বিচারে হামলা শুরু করে; হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং নারী-শিশুদের ওপর নির্যাতন চালায়।
তিনি জানান, মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ ত্রিমুখী আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ৬ ডিসেম্বর ভোরে তারা রাজাকার ও আলবদরদের নিয়ে লালমনিরহাট রেলস্টেশন থেকে দুটি বিশেষ ট্রেনে রংপুর ও সৈয়দপুরের দিকে পালিয়ে যায়। তিস্তা নদী পার হওয়ার পর ফেরার পথে তারা তিস্তা রেলসেতুতে বোমা বর্ষণ করে ক্ষতিগ্রস্ত করে।