নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর থাকা ত্রুটিপূর্ণ সেতু’র কারণে আরও লঞ্চ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার সচিবালয়ে ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘মুজিববর্ষের শপথ, নিরাপদ রবে নৌপথ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১। ৭-১৩ এপ্রিল দেশে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১ পালিত হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে উপস্থিত থেকে ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১’র উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দিন বলেন, আমরা দেখেছি, নদী যেকানে সরু, সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যে ব্রিজটি সেখানে রয়েছে, সেটি বিজ্ঞানসম্মতভাবে স্থাপন করা হয়নি বলে আমি মনে করি। সেতুর পিলারগুলো চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সেই কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই দুর্ঘটনাটি এড়ানো যেত যদি মাস্টার সরু চ্যানেলের কথা চিন্তা করে আগে থেকেই জাহাজের গতি নিয়ন্ত্রণ করতেন।
আরও পড়ুন: জাতি হিসেবে মর্যাদার জায়গায় গিয়েছি: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চ ‘সাবিত আল হাসান’ ডুবে গেছে। আজকে দুর্ঘটনার বিষয়ে মাহবুব উদ্দীন কিছুটা আভাস দিয়েছেন। তবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমাদের বক্তব্য দিব।’
তিনি বলেন, মাহবুব উদ্দিন বলেছেন- আমার কাছেও মনে হয়েছে, আমি ছবিটি দেখেছি। এর আগে ভিডিও ক্লিপ দেখেছি। কালকে যে সেতুর ছবিটি দেখেছি, আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত নৌ-রুট এটা। নদী এমনিই ছোট হয়ে আসছে বিভিন্ন কারণে। সেখানে আরও বেশি ছোট করে দেয়ার ক্ষেত্রে সেতুর পিলার দুটি স্থাপন করা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাহবুব সাহেব বলেছেন, পিলারটা দৃষ্টি সীমানার একটা বাঁধা হয়ে থাকতে পারে, এটা আমি জানি না। তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’
তিনি বলেন, আমার আশঙ্কা ভবিষ্যতে এখানে আরও দুর্ঘটনার মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে শুধু এই নকশার কারণে। আমরা এ বিষয়ে সেতু বিভাগের সঙ্গে কথা বলব-এটার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কি-না।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আগের চেয়ে নৌপথ এখন অনেক বেশি নিরাপদ এবং পরিবেশ বান্ধব। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, বিশেষ করে নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা, বিআইডাব্লিউটিএ, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ এবং জনসাধারণের সচেতনতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে যাত্রীবাহী নৌযানের দুর্ঘটনা অনেক কমে এসেছে।
আরও পড়ুন: নৌযানেও অর্ধেক যাত্রী পরিবহন, বাড়ছে ভাড়া
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার নৌ সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে নৌপথের সংরক্ষণ ও নৌপরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের সকল নদীকে দখলমুক্ত করা এবং নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল নিরাপত্তা, নির্বিঘ্ন ও নিরবিচ্ছিন্ন করাসহ যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নৌপরিবহন অধিদপ্তর প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করছে।