দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বর্তমান সরকার রুটিন কাজ চালিয়ে যাবে, কোনো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
আইনমন্ত্রী বলেন, 'যেহেতু গতকাল তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী কাজ-কর্ম নির্বাচন কমিশন দায়িত্বশীলভাবে করবে। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী কাজে যেসব সরকারি বিভাগ, সংস্থা বা অফিস তাদের প্রয়োজন হবে এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে না সেই সব কাজ করবে বর্তমান সরকার। এ সরকার রুটিন কাজগুলো করে যাবে। এটাই গণতন্ত্রের মূল বক্তব্য যখন নির্বাচন আসে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এখন থেকে রুটিন কাজ করে যাবে। পলিসি ডিসিশন (নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত) নেওয়া হবে না, কারণ একটা নির্বাচন আছে। জনগণের কাছে আমাদের ম্যান্ডেট দেব। পলিসি ডিসিশন হবে না নির্বাচন পর্যন্ত রুটিন কাজ করে যাবেন।'
আরও পড়ুন: যা কিছু হবে সংবিধান ও আইনের মধ্যেই হতে হবে: আইনমন্ত্রী
সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘ব্যাপারটা হচ্ছে গণতন্ত্রকে সঠিকভাবে চালিত করার জন্য নির্বাচনকালীন যে সরকার থাকে তারা পলিসি ডিসিশন নেয় না, যাতে একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকে। তারা এমন কিছু করে না, যেটাতে সরকারকে জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য, আকৃষ্ট করার জন্য কিছু করছে, এরকম একটা ব্যাপার হয়।'
আইনমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। ঠিক গণতান্ত্রিক উপায়ে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে শিডিউল ঘোষণার পর যেভাবে সরকার চালিত হবে, ঠিক সেভাবেই হবে'
এই মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা থাকবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেই সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর।'
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আইন তো হবেই না, কারণ সংসদ বসবে না। কিন্তু এমন কথা আমি বলতে পারি না... এটা একটা স্বাধীন দেশ। যদি প্রয়োজন হয় অর্থাৎ অধ্যাদেশ দিয়ে আইন জারি করতে হবে কোনো বিশেষ প্রয়োজনে, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো পরিস্থিতিতে। আইন হবে না এমন কথা তো আমি বলতে পারি না।'
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক: জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন,'রুটিন কাজ হচ্ছে গতানুগতিক অফিস চলার জন্য যে কাজ সেগুলো। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বেতন পাওয়ার বিষয়, দৈনন্দিন কার্যক্রম- এসব কাজ বর্তমান সরকার করবে। উন্নয়ন কাজ যেগুলো আছে সেগুলো চলবে। নতুন করে কোনো উন্নয়ন কাজ শুরু হবে না। নতুন করে কোনো প্রজেক্টও নেওয়া হবে না।'
কর্মকর্তাদের বদলি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'সেটা নির্বাচন কমিশন নেবে কি না সেটাও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। সেটা আমি বলে দিতে পারব না।'
আনিসুল হক বলেন, 'পুলিশের ব্যাপারে যদি নির্বাচন কমিশনের কোনো বক্তব্য থাকে। সেটা নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবে। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, সেটা যদি যৌক্তিক হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটার ব্যবস্থা নেবে।'
পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে ইসির এখতিয়ার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, 'আইনের আওতায় বলতে হবে সবকিছুই।'
আরও পড়ুন: বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক, বেআইনি: জাতিসংঘকে আইনমন্ত্রী