রমজান মাস জুড়ে সাশ্রয়ী মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিক্রির জন্য রাজধানীতে ৩০টি বিক্রয় পয়েন্ট স্থাপন করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
এ কর্মসূচির আওতায় তরল দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২৫০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ৯ দশমিক ১৭ টাকা (১ ডজন ১১০ টাকা) দরে বিক্রি করা হবে।
রবিবার (১০ মার্চ) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে রমজান মাস উপলক্ষে ভ্রাম্যমাণ বাজারে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিপণন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রথম রমজান থেকে শুরু হয়ে ২৮ রমজান পর্যন্ত দুধ, ডিম ও মাংস বিপণন ব্যবস্থা রাজধানী ঢাকার ২৫টি স্থানে পরিচালিত হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এছাড়া স্থায়ী বাজারসহ আরও পাঁচটি স্থানে মোট ৩০টি পয়েন্টে এই বিক্রয় ব্যবস্থা চালু থাকবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ১৮ লাখ ৩ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রগুলো হলো-
নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ী (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গনি রোড), সেগুন বাগিচা (কাঁচা বাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালসী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বসিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (শিকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), আরামবাগ (মতিঝিল), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর ১০, কল্যানপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) কাকরাইল।
স্থায়ী বাজারগুলো হলো-
মিরপুর শাহ আলি বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর, কাজি আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।
মন্ত্রী বলেন, পণ্যগুলো বিক্রির জন্য সুসজ্জিত পিকআপ কুলভ্যান ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে সকাল ৯টার মধ্যে পণ্যগুলো নিয়ে কুলভ্যানগুলো পৌঁছে যাবে এবং সকাল ১০টা থেকে বিপণন শুরু হবে।
এছাড়া রমজান মাসে বাজারে মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং মূল্য ক্রেতাদের নিকট সহনীয় রাখতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের নিকট মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চারটি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের চারটি নির্ধারিত স্থানে মাছ বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন-
১. বঙ্গবন্ধু চত্বর, খামারবাড়ি, ফার্মগেট;
২. মিরপুর-১ (ঈদগাহ মাঠ);
৩. সেগুন বাগিচা বাজার; ও
৪. মেরুল বাড্ডা বাজার;
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন-
১. মুগদাপাড়া (মদিনাবাগ বাজার);
২. যাত্রাবাড়ী (দয়াল ভরসা মার্কেট);
৩. মতিঝিল (বাংলাদেশ ব্যাংকের দক্ষিণ-পূর্ব কর্নার) ও
৪. পলাশী মোড়ে এই কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
এ ছাড়া রুই মাছ প্রতি কেজি ২৪০ টাকা, পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ১৩০ টাকা এবং পাবদা মাছ প্রতি কেজি ৩৩০ টাকা করে বিক্রয় করা হবে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত মাছ বিক্রয় কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে মন্ত্রী জানান।
সোমবার (১১ মার্চ) থেকে শুরু হয়ে রমজান মাসের ১৫ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন এসব স্পটে মাছ বিক্রয় করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, কার্যক্রমটি তদারকি ও মনিটরিং করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে।
পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
আব্দুর রহমান বলেন, গরু, খাসি ও মুরগির মাংস এবং দুধ, ডিম ও মাছের সরবরাহ বৃদ্ধির ফলে এসব পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দুধ উৎপাদনে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও সরকারের নানামূখী উদ্যোগের কারণে অচিরেই দুধ উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করব।
আরও পড়ুন: রমজান মাসে আমরা কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করব: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য ঠিক রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী