নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এক ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার জালকুড়ি সিকদার বাড়ির পুল এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও শ্বাশুড়িসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত খবির হোসেন (৪০) চাঁদপুরের উত্তর মতলবের ওটারচর এলাকার মো. আমিনুল হকের ছেলে। বর্তমানে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি শিকদার বাড়ি পুল এলাকায় ইসমাঈল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জে সিএনজির ব্যবসা করতেন।
শুক্রবার এ ঘটনায় ৪জনের নাম উল্লেখ করে নিহতের বাবা আমিনুল হক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: প্রয়াত আ.লীগ নেতা নাসিমকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
মামলায় নিহতের স্ত্রী মুক্তি (৩২), শাশুড়ি লতিফা (৫৫), স্ত্রীর ভাই লুৎফর রহমান (৪০) ও রমজান (৪০)কে অভিযুক্ত করা হয়।
এ ঘটনায় মৃত খবির হোসেনের স্ত্রী মুক্তি ও শ্বাশুড়ি লতিফাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগপত্রে নিহতের বাবা উল্লেখ করেছেন, মুক্তির সঙ্গে তার ছেলে খবির হোসেনের ১৪ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। তার ছেলে খবির হোসেনকে তার সম্পত্তি বিক্রি করে স্ত্রীর নামে বাড়ি করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। তার ছেলে এ বিষয়ে কর্ণপাত না করায় স্ত্রীর স্বজনরা বিভিন্ন সময় নানাভাবে তার ছেলেকে অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতন করেছে। তার ছেলে দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে এ অত্যাচার নীরবে সহ্য করে আসছিল। কিন্তু দিন দিন তার ছেলের ওপর অত্যাচার ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা সংবাদ পান, তার ছেলে সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহর বাবা আরও জানান, আত্মহত্যা করার আগের দিন আমার ছেলে ফেসবুকে তিনটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টগুলো দেখলেই বুঝা যায় আমার ছেলে মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
তিনি বলেন, আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহতের স্ত্রী ও শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা গ্রেপ্তার দুইজনকে আদালতে প্রেরণ করেছি।