মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়ার সংকল্প নিয়ে জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ (রবিবার) ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিরস্ত্র বাঙালির ওপর দমন-পীড়নের পর ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
দীর্ঘ ৯ মাস ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের পর ত্রিশ লাখ শহিদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ তার লালিত স্বাধীনতা অর্জন করে।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রথমে স্মৃতিসৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং পরে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: রবিবার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করবে বাংলাদেশ
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি স্মার্ট কন্টিনজেন্ট রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে।
পরে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে কিছুদিন অবস্থান করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলটির পক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গান স্যালুট ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হয়।
সূর্যোদয়ের সময় সকল সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং সকল গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেসরকারি রেডিও স্টেশন ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।
বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ওপর চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।
মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে।
এদিকে দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে।
হাসপাতাল, কারাগার, শিশুশ্রম, বৃদ্ধাশ্রম ও ডে-কেয়ার সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানে বিশেষ খাবার বিতরণ করা হবে।
শিশু পার্ক ও জাদুঘর গুলো সারাদিন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা, পায়রা বন্দর এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল ও চাঁদপুর টার্মিনালে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জাহাজ দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে অনুরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা