তুরাগ নদীর ব্যাপারে দেয়া রায়ের নীতি অনুসরণ করে রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পটি পাবলিক ট্রাস্ট প্রপার্টি ঘোষণা করে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সকল বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক-আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
ওই প্রকল্পে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৮ সালে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে আজ এ রায় দেয়া হয়।
রায়ে আদালত বলেছেন, ‘আমাদের ফুসফুস হিসেবে খ্যাত প্রকল্পটি সুরক্ষা করা একান্ত অপরিহার্য।’
এ জন্য হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের সম্পূর্ণ এলাকায় সব ধরনের রেস্তোরাঁ, হোটেল, দোকানসহ সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ ঘোষণাসহ মোট ১০ দফা দফা নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: হাতিরঝিল থেকে উত্তরা পর্যন্ত ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালুর প্রকল্প নেয়া হয়েছে: এলজিআরডি মন্ত্রী
হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো হচ্ছে:
১) তুরাগ নদীর রায়ের নীতি অনুসারে ঢাকার হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টকে জনগণের সম্পত্তি ঘোষণা করা হলো।
২) ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্পে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানসহ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন অবৈধ ঘোষনা করা হলো। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সকল বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ প্রদান করা হলো।
৩) প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
৪) প্রকল্পের সংরক্ষণ, উন্নয়ন, পরিচালনার জন্য পৃথক একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করা।
৫) প্রকল্পের স্থায়ী পরামর্শক হিসেবে বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগ এবং সেনাবাহিনীর ২৪তম ব্রিগেডকে যৌথভাবে পরামর্শক নিয়োগ করা হলো।
৬) প্রকল্প এলাকায় জনসাধারণের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ডে ওয়াশরুম তৈরি করা।
৭) প্রকল্প এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা।
আরও পড়ুন: হাতিরঝিলকে রক্ষা করার সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে
৮) পায়ে চলা, সাইকেল চালান এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৯) প্রকল্পের এলাকার লেকে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করা।
১০) প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক কোন স্থাপনা হবে না।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হাছান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।
রায়ের পর মনজিল মোরসেদ ১০ দফা নির্দেশনার কথা জানিয়ে বলেন, আদালত রায়ে বাঙালি প্রথম বিজ্ঞানী স্যার জগদিশ চন্দ্র বসুর নামে প্রকল্পের নামকরণ করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।