সংস্থাটি জানায়, ‘২০২০ সালে মোট ৪৪ জন গৃহকর্মী নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনকে হত্যা এবং ১২ জনের রহস্যজনক মৃত্য, ধর্ষণের শিকার ১২ জন, শারীরিক আঘাত ও নিপীড়নের শিকার ১২ জন এবং নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে চারজন আত্মহত্যা করেছেন।’
গৃহশ্রমিকের অধিকার, মর্যাদা ও সুরক্ষায় ‘সুনীতি’ প্রকল্পের উদ্যোগে ‘২০২০ সালে গৃহশ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি এবং তাদের আইনি সুরক্ষা’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল পর্যালোচনা সভায় এ সব তথ্য তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জে কলেজ শিক্ষিকা গ্রেপ্তার
বিলস্, গণস্বাক্ষরতা অভিযান, হ্যালোটাস্ক, নারী মৈত্রী, রেডঅরেঞ্জ ও ইউসেপ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এবং অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে ‘সুনীতি’ প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।
সভায় গৃহকর্মে শিশুশ্রমকে নিরুৎসাহিত করার ওপর জোর দিয়ে বক্তারা বলেন, প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড কমিশনার কার্যালয়ে গৃহশ্রমিকদের নিবন্ধন চালু করা জরুরি যাতে করে প্রশাসন এবং স্থানীয় সরকার পর্যায় থেকে দুর্যোগকালীন সময়ে তাদের সহায়তার বিষয়ে সরকারের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও গৃহশ্রমিকদের কাজের ধরণ অনুযায়ী পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন হিসেবে আইন ও নীতিমালায় পৃথকভাবে বিবেচনা করলে তাদের আইনগত সুরক্ষার বিষয়টিও পরিষ্কার হবে বলে মত দেন তারা।
আরও পড়ুন: শেরপুরে শিশু গৃহকর্মী ধর্ষণের অপরাধে গৃহকর্তা গ্রেপ্তার
গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, শ্রম আইনে তাদের অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং গৃহশ্রমিকদের জন্য শোভন কাজ শীর্ষক আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থনের দাবি জানান বক্তারা।
বক্তারা বলেন, ২০২০ সাল ছিল করোনা পরিস্থিতির কারণে সংকটময় একটি বছর। এই বছর গৃহশ্রমিকের জন্য শোভন কাজ নিশ্চিত করা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। করোনাকালীন সময়ে মৃত্যুভয় থাকা সত্ত্বেও গৃহশ্রমিকদের নির্যাতন তাদের জন্য আরেকটি আতঙ্কের মাত্রা যোগ করেছে। শ্রম আইনে গৃহশ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি, গৃহকর্মী কল্যাণ নীতিমালায় গৃহশ্রমিকদের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বিশ্রামের সুযোগ এবং সংগঠন করার অধিকারের কথা বিবেচনায় রেখে নীতিমালাটি পুনরায় পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে নির্যাতন থেকে রেহাই পেলেন গৃহকর্মী
বিলস্ যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সভায় গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আবুল হোসাইন, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব ও বিলস্ পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের শ্রম উপদেষ্টা কাজী সাইফুদ্দীন আহমেদ, বিশ্ব ব্যাংকের কনসালটেন্ট ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবিএম খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাজী আব্দুল হান্নান, নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি, বিলস্ উপপরিচালক ও প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. ইউসুফ আল মামুন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীসহ শাবির শিক্ষক গ্রেপ্তার