আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন করতে যাচ্ছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিসট্রিবিউশন পিএলসি। এ লক্ষ্যে এরইমধ্যে একটি প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক (পিএমসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ।
বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ২০২৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপনের প্রকল্পটি শুরু করতে পারবো।’
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পটিতে শিগগরই আরও একটি পিএমসি নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এরইমধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পে ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট লিমিটেডকে (ডিটিসিএল) পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিতাস স্মার্ট প্রিপেইড মিটার প্রকল্পে অগ্রগতি সামান্য
এর আগে ২০১১ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম শুরু করে তিতাস। পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করার পর এ পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকায় মোট চার লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড মিটার বসিয়েছে তিতাস। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে এই মিটারগুলো বসানো হয়েছিল।
তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এবারের প্রকল্পটি এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে এবং সব মিটারই স্মার্ট প্রিপেইড হবে। আগের মিটারগুলো প্রিপেইড হলেও স্মার্ট ছিল না।’
তিনি জানান, ‘প্রিপেইড ও স্মার্ট প্রিপেইড মিটারের মধ্যে পার্থক্য হলো—প্রিপেইড মিটারে রিচার্জ করতে ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট ভেন্ডর পয়েন্টে যেতে হয়, কিন্তু স্মার্ট প্রিপেইড মিটারে স্মার্টফোনের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকেই রিচার্জ করা যাবে।’
নতুন প্রকল্পের আওতায় তিতাসের আওতাধীন এলাকায় মোট সাড়ে ১৭ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার বসানো হবে বলে জানান তিনি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ১৮ মাস আগে এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দুটি পৃথক চুক্তি সই হয়েছে বলে তিতাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ
সরকারি তথ্য মতে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে এই ঋণ চুক্তি করেছে তিতাস।
নতুন এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ঢাকা দক্ষিণ ও নারায়ণগঞ্জে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। আর এডিবির অর্থায়নে স্মার্ট মিটার বসানো হবে ঢাকা উত্তর ও গাজীপুরে।
তিতাস গ্যাস বর্তমানে ২৮ লাখ ৭৮ হাজার গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ২৮ লাখ ৫৩ হাজার আবাসিক, ১২ হাজার ৭৮টি বাণিজ্যিক, ৫ হাজার ৪২৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, ১ হাজার ৭৫৫টি ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্ট এবং ৩৯৬টি সিএনজি স্টেশন রয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তিতাস গ্যাস দেশের মোট গ্যাস বিতরণ বাজারের ৫৫ শতাংশ দখলে রেখেছে। বাকি ৪৫ শতাংশ বিতরণ করছে অন্য পাঁচটি কোম্পানি।