ফেনীর ছাগলনাইয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ২৩ বাংলাদেশি শ্রমিকের ভাগ্য নির্ধারিত হতে যাচ্ছে ভারতের আদালতে। কারণ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) চোরাচালানকারী হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে স্থানীয় মনু বাজার থানায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ২৩ বাংলাদেশি হলেন- সাইমুম হোসেন, রাইসুল ইসলাম, সামিন, হারুন, লিটন, মাঈন উদ্দিন, মহসিন, কাজী রিপন, তাজুল ইসলাম সাকিল, হানিফ, আবুল হাসান, ইমরান, রুবেল, জাফর ইমাম মজুমদার, ওবায়দুল হক, জামাল উদ্দিন, আরিফ হোসেন, করিম, খোরশেদ, আজাদ হোসেন, মাহিম, হারুন ও ইমাম হোসেন। তাদের সবার বাড়ি সীমান্ত ঘেঁষা প‚র্ব ছাগলনাইয়া, মটুয়া ও রাধানগর এলাকায়।
আরও পড়ুন: ২ বছর ৬ মাস কারাভোগ শেষে ২ বাংলাদেশি কিশোরকে দেশে ফেরত
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার মনুবাজার পুলিশ স্টেশনে তাদের হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা।
ওই ২৩ বাংলাদেশিদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে- এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, বিএসএফ বিজিবির কাছে স্বীকার করেছে চোরাকারবারী হিসেবে তাদের থানায় হস্তান্তর করেছে তারা। ফলে পতাকা বৈঠকে আর কিছু করার সুযোগ নেই। সে দেশের আদালত তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন বিএসএফ। ছাগলনাইয়ার মধুগ্রাম বিওপির আওতায় ২১৯৫ মেইন পিলারে এ পতাকা বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়।
পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মধুগ্রাম বিওপির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জুলফিকার আলী এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিএসএফের মাদারগঞ্জ কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর মুক্তা মাজলী।
পূর্ব ছাগলনাইয়া বিওপির কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. আবদুর রশীদ পতাকা বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভারতীয় বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তার ২৩ বাংলাদেশিকে আদালতের মাধ্যমে হাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মেডিকেল পরীক্ষা হয়েছে। তারা সবাই ভালো আছে। বিষয়টি নিচের লেভেলের হাতে নেই। এটি উচ্চ পর্যায়ে চলে গেছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় তারা ফেরত আসবে।
আরও পড়ুন: ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ২৫ বাংলাদেশি
ধরে নেওয়ার দুই দিন পরও গ্রেপ্তারদের কারো পরিবার কিংবা স্বজনদের পক্ষ থেকে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি বলে নিশ্চিত করেছেন ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম।
এদিকে বেলাল হোসেন নামে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির বাবা জানান, ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে পূর্ব ছাগলনাইয়া ফাঁড়িতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের কপি জমা দেওয়া হয়েছে।
ফেনী-৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেছেন, চোরাকারবারীর অভিযোগে ২৩ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বলে পতাকা বৈঠকে দাবি করে বিএসএফ।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে আটককৃতদের একটি তালিকাও দিয়েছে বাহিনীটি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।